টেন্ডার হয়নি, কাজও হয়নি

রেলওয়ের হিসাব শাখা থেকে কোটি টাকা লোপাট

৭ কর্মকর্তা-কর্মচারী বরখাস্ত, তদন্ত কমিটি গঠন

আনোয়ারা শিরীন

বাংলাদেশ রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের সদর দপ্তর সিআরবিতে ভুয়া বিলে কোটি টাকা হাতিয়ে নিতে ৪ মাস আগে পরিকল্পনা করেছিল সংঘবদ্ধ একটি চক্র। এর সঙ্গে ডিএফএ-স্টোর (ডিভিশনাল ফিন্যান্সিয়াল অ্যাডভাইজার) অফিসের সংশ্লিষ্টরাসহ বহিরাগত এক নারীও জড়িত ছিলেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী ডিএফএ স্টোরের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি প্রথমেই ‘অলিখিত চেক’র একটি কপি সংগ্রহ করেন। এরপর সেই চেক ইস্যু করতে রেলের সরবরাহকারী একটি প্রতিষ্ঠানের নাম ব্যবহার করে এক নারীকে দিয়ে খোলা হয় ব্যাংক অ্যাকাউন্ট। ৩১ জানুয়ারি সেই চেকটির মাধ্যমে ব্যাংক থেকে তুলে নেওয়া হয় ৯৬ লাখ ৯০ হাজার টাকা। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর রেলওয়ে পূর্বাঞ্চল সহ রেল সংশ্লিষ্টদের মাঝে তোলপাড় চলছে।

- Advertisement -

উক্ত ঘটনায় গত ১১ ফেব্রুয়ারি রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের অতিরিক্ত অর্থ উপদেষ্টা ও প্রধান হিসাব অধিকর্তা মো. সাইদুর রহমান সরকার স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে বলা হয়, গত ৭ ফেব্রুয়ারি বাজেট ও খরচের হিসাব রিকনসিলেয়েশনকালে দেখা যায়, গত ২৮ ডিসেম্বর মেসার্স দি কসমোপলিটন করপোরেশন ঢাকার নামে তাদের চারটি বিলের অতিরিক্ত ৯৬ লাখ ৯০ হাজার টাকার একটি সন্দেহজনক বিল পরিশোধ করা হয়েছে। যা গুরুতর আর্থিক অনিয়মের পর্যায়ভুক্ত। উক্ত বিল পাস ও চেকের মাধ্যমে পরিশোধের সঙ্গে নিম্নবর্ণিত কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা দায়িত্বপ্রাপ্ত ছিলেন। বিষয়টি সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে সাত কর্মকর্তা ও কর্মচারীগণকে সাময়িক বরখাস্ত করা হলো।

- Advertisement -google news follower

সাময়িক বহিষ্কার হওয়া সাত কর্মকর্তা-কর্মচারী হলেন- রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের হিসাব কর্মকর্তা মামুন হোসেন, হিসাব কর্মকর্তা মো. আবু নাছের, হিসাবরক্ষক শিমুল বেগম, হিসাবরক্ষক সৈয়দ সাইফুর রহমান, অডিটর ডিএফএ পবন কুমার পালিত, জুনিয়র অডিটর ইকবাল মো. রেজাউল করিম ও অফিস সহায়ক মাকসুদুর রহমান।

রেলওয়ে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ভুয়া বিলে ৯৬ লাখ ৯০ হাজার টাকা আত্মসাতের ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর থেকে পূর্বাঞ্চল রেলে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। ঘটনা তদন্তে চার সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। কমিটিতে প্রধান করা হয় চট্টগ্রামের বিভাগীয় হিসাব কর্মকর্তা (ডিএফএ) জয়শ্রী মজুমদার রশ্মিকে। কমিটির বাকি তিন সদস্যরা হলেন- ডিএফএ সদর সুগ্রিব চাকমা, হিসাব কর্মকর্তা (ব্যয়) মো. জহিরুল ইসলাম ও অ্যাকাউন্টেন্ট আরসি মো. আব্দুল্লাহ আল আসিফ। কমিটিকে আগামী সাত দিনের মধ্যে তদন্ত রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে।

- Advertisement -islamibank

কমিটিকে বলা হয়, গত ২৮ ডিসেম্বর দি কসমোপলিটন করপোরেশন ঢাকার দাখিলকৃত একটি সন্দেহজনক বিল পরিশোধ করা হয়। যা জরুরি ভিত্তিতে তদন্ত করা প্রয়োজন। সন্দেহজনক বিল কীভাবে পাস/পরিশোধ করা হলো বিষয়টি যাচাই-বাছাই করা, এই বিল পরিশোধের সঙ্গে জড়িতদের শনাক্ত করা এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের কার্যকলাপ যাতে আর সংঘটিত না হয় সে বিষয়ে সুপারিশ প্রদানের কথাও উল্লেখ করা হয়।

সূত্র জানায়, রেলওয়ের প্রতিটি বিল প্রসেস করার ক্ষেত্রে সিসিএস দপ্তর থেকে বাজেট অনুমোদন করে বিল পরিশোধের ফরোয়ার্ডিং পত্রসহ ডিএফএ-স্টোর শাখায় বিলটি পাঠানো হয়। সেই শাখায় বিল ম্যানুয়াল রেজিস্টারে এন্ট্রি করে রিসিভ করা হয়। এরপর বিলটি ফাইলে উঠে। একইসঙ্গে আইবাস++ সিস্টেমে টোকেন তৈরি করে বিলের এন্ট্রি দেওয়া হয়। পরে বিলসংক্রান্ত ফাইলের ওয়ার্ক অর্ডার কপি, চুক্তিপত্রের কপি, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের চালান কপি, দাবিকৃত বিলের কপি, আরনোট কপি এবং সিসিএসের ফরোয়ার্ডিং পত্রসহ ম্যানুয়ালি ভ্যাট ও অগ্রিম আয়কর কর্তন করে ক্যাশ অর্ডার সাত বা সিও সেভেন প্রস্তুত করে আইবাস++ সিস্টেমে বিলের প্রাথমিক অনুমোদন দেওয়া হয়। ডিএফএ-স্টোরের দায়িত্বপ্রাপ্ত হিসাব কর্মকর্তা চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়ে বিলসংক্রান্ত সব কাগজপত্র সংযুক্ত করে সিও সেভেনসহ পাশকৃত বিলের ফাইলটি বুকস অ্যান্ড বাজেট শাখায় চেক ইস্যুর জন্য পাঠিয়ে দেয়। সেখানে অনুমোদিত বিলসংক্রান্ত কাগজপত্র এবং সিও সেভেনের সঠিকতা যাচাই করে আইবাস++ সিস্টেমে চেকের অনুমোদন দেওয়া হয়।

অপরদিকে চেক হস্তান্তরের ক্ষেত্রে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মূল স্বত্বাধিকারী উপস্থিত থেকে তার জাতীয় পরিচয়পত্র যাচাই-বাছাই করে ইস্যুকৃত চেক হস্তান্তর করে কর্তৃপক্ষ। প্রতিনিধির কাছে চেক হস্তান্তরের ক্ষেত্রেও লিখিত অথরাইজেশনপত্র এবং অথরাইজড ব্যক্তির জাতীয় পরিচয়পত্র রেখে চেক দেওয়া হয়। তবে এক সরবরাহকারীর পঞ্চম বিলের ক্ষেত্রে এসবের কোনো কিছুই মানা হয়নি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সিসিএস দপ্তরের বিল পরিশোধের ফরোয়ার্ডিং পত্র ছাড়াই কথিত বিলটি প্রস্তুত করে সংঘবদ্ধ চক্র। দ্য কসমোপলিটন করপোরেশন নামে সরবরাহকারীর বিলের তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা যায়, চারটি বিলের চেক নম্বর যথাক্রমে ৩০৪-৭ পর্যন্ত (শেষ তিনটি নম্বর)। অথচ কথিত পঞ্চম চেকের শেষ তিনটি নম্বর ০৮৫। অর্থাৎ ৩০৪ নম্বর চেক ইস্যু করার আগেই ৮৫ নম্বর চেকটি সংগ্রহ করে রেখেছিল চক্রটি। এরপর চক্রটি চট্টগ্রামের বাইরের একটি সরবরাহ প্রতিষ্ঠানকে টার্গেট করে। সেই অনুযায়ী নভেম্বরে কহিনুর আক্তার নামে এক নারীকে দিয়ে কসমোপলিটনের স্বত্বাধিকারী সাজিয়ে সীমান্ত ব্যাংকের আগ্রাবাদ শাখায় একটি অ্যাকাউন্ট খোলে তারা। সিসিএস দপ্তর থেকে কসমোপলিটনের চারটি বিলের কগজপত্র ডিএফএ-স্টোর শাখায় যাওয়ার পর একইসঙ্গে পঞ্চম বিলের একটি ভুয়া ফাইল তৈরি করা হয়। ধাপে ধাপে সংশ্লিষ্টরা কথিত চেকটিও অনুমোদনের জন্য সব ধরনের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে।

গত বছরের নভেম্বরে কোহিনূর নামের ওই নারী আগ্রাবাদের সীমান্ত ব্যাংকে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান কসমোপলিটনের নামে একটি অ্যাকাউন্ট খোলেন। সেই অ্যাকাউন্টে ২০২৩ সালের ৩১ ডিসেম্বরের ওই ৯৬ লাখ ৯০ হাজার টাকার চেক সোহাগ আলী নগদায়ন করেন।

কোহিনূর আক্তার কক্সবাজার জেলার ঈদগাঁওয়ের তেলিয়াপাড়ার বাসিন্দা বলে জানা গেছে।

সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এফএএন্ডসিএও-স্টোর অফিসের হাবিব উল্লাহ হাবিব এ চক্রের অন্যতম সদস্য। অনিয়মিত শ্রমিক(টিএলআর) হলেও হাবিব রেল ভবনের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তার ভাগিনা হওয়ায় তার দাপট ছিল কর্মকর্তার মতোই। বুকস অ্যান্ড বাজেট শাখার হিসাব কর্মকর্তা আবু নাসেরের অনলাইন পাসওয়ার্ড এই হাবিবের কাছে থাকত।

এদিকে এ ঘটনার পর হাবিব কয়েকদিন গা-ঢাকা দেন। তবে বর্তমানে তিনি আবারও কর্মস্থলে আসা-যাওয়া করছেন। কিন্তু তিনি কোনো স্থায়ী নিয়োগ পাওয়া কর্মচারী নন। কাজ নাই, মজুরি নাই—প্রকল্পে তিনি হিসাব অধিকর্তার দপ্তরে কাজ করছেন।

জানা গেছে, হাবিব অফিস সহায়ক হলেও তার কম্পিউটার চালনায় দক্ষতা থাকায় তাকে দিয়ে হিসাব শাখার কাজ করানো হয়। সে সুবাদে তার কাছে আইবাস প্লাস প্লাসের আইডি ও পাসওয়ার্ড ছিল। কর্মস্থলে তিনি সাবেক অর্থ ও হিসাব অধিকর্তা (পূর্ব) এবং বর্তমান কন্ট্রোল জেনারেল ডিফেন্স ফাইন্যান্স (সিজিডিএফ) কামরুন নাহারের ভাগিনা বলে পরিচয় দিতেন, যেটি ছিল ভুয়া।

হাবিব চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া থানা মুরাদনগরের পাঠানবাড়ির নবী হোসেনের ছেলে। তারা দুই বোন ও দুই ভাই। তাদের মা এক সময় সিজিডিএফ কামরুন নাহারের বাড়িতে থাকতেন। সে সুযোগ কাজে লাগিয়ে নিজেকে কামরুন নাহারের ভাগিনা হিসেবে পরিচয় দিতেন হাবিব।

হাবিবকে অনেকে আবার আরমান নামেও চেনেন। তার আরেক ভাই ওবায়দুল কাদের ওরফে ওবায়দুল্লায় সুমন (৩৮); তার বিরুদ্ধে রয়েছে হত্যা, চাঁদাবাজিসহ অর্ধ ডজন মামলা। ২০২৩ সালে ১০ অক্টোবর মঞ্জুরুল ইসলাম হত্যা মামলায় র‌্যাবের হাতে অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার হন তিনি।

হাবিবের সঙ্গে আত্মীয়তার সম্পর্কের বিষয়ে জানতে চাইলে সিজিডিএফ কামরুন নাহার বলেন, ‘সে (হাবিব) আমার ভাগিনা না। গণমাধ্যমকর্মীদের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে বলছি, না জেনে ভুল তথ্য দিয়ে বিব্রতকর অবস্থা ফেলবেন না।’

নাম প্রকাশ না করার শর্তে তদন্ত কমিটির এক কর্মকর্তা বলেন, হিসাব শাখার অস্থায়ী অফিস সহায়ক হাবিব ও কোহিনূর আক্তার ছাড়াও আরও দুই নারী এবং এক পুরুষের নামে তদন্ত চলছে।

এ প্রসঙ্গে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের প্রধান সরঞ্জাম নিয়ন্ত্রক প্রকৌশলী ফরিদ আহমেদ বলেন, ‘ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স দি কসমোপলিটন করপোরেশন থেকে ৯৬ লাখ ৯০ হাজার টাকার মামলার গ্রহণ করা হয়েছে- এ ধরনের কোন কাগজপত্র আমার দফতর থেকে হিসেব শাখায় পাঠানো হয়নি। হিসাব শাখার দফতরগুলোর যোগসাজশে এ টাকা লোপাট হয়ে থাকতে পারে। তদন্ত কমিটির রিপোর্ট পেলে পুরো বিষয়টি পরিষ্কার হবে।’

এ প্রসঙ্গে কোতোয়ালি থানার ওসি এস এম ওবায়েদুল হক বলেন, ‘রেলওয়ের টাকা আত্মসাতের বিষয়টি নিয়ে কয়েকজন কর্মকর্তা থানায় এসেছিলেন। তাদের সঙ্গে কথা হয়েছে। তারা এ ঘটনা তদন্তে একটি কমিটি গঠন করেছেন। তদন্তে যারা দোষী বলে অভিযুক্ত হবেন তাদের বিরুদ্ধে মামলা করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।’

এদিকে, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স দি কসমোপলিটন করপোরেশনের নামে ৯৬ লাখ ৯০ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগ ওঠায় বিস্ময় প্রকাশ করেছেন প্রতিষ্ঠানটির কর্ণধার নাবিল আহসান। তিনি দাবি করেন, ‘দীর্ঘ ৫১ বছর ধরে আমার প্রতিষ্ঠান সুনামের সঙ্গে বাংলাদেশ রেলওয়েতে ব্যবসায়িক কাজ করে আসছে। রেলওয়েতে মালামাল সরবরাহ বাবদ প্রতিষ্ঠানের প্রাপ্য টাকা গত ২৮ ডিসেম্বর চারটি চেকের মাধ্যমে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ প্রদান করেছে। এর মধ্যে চেক নং- ১১৩৯৩০৪ এর অনুকূলে ৯৭ লাখ ৭৫ হাজার টাকা, ১১৩৯৩০৪ নম্বরের চেক বাবদ ৯৬ লাখ ৯০ হাজার টাকা, ১১৩৯৩০৬ নম্বরের চেকে ৯৬ লাখ ৪৪ হাজার টাকা এবং ১১৩৯৩০৭ নম্বরের চেক বাবদ ৭৭ লাখ ৫২ হাজার টাকা পরিশোধ করা হয়।

তার দাবি, ২৮ ডিসেম্বর ইস্যু করা এ চারটি চেক নিয়ে রেলওয়ের কোনও অভিযোগ নেই। তাদের অভিযোগ পাঁচ নম্বর চেক নিয়ে। যেটি নাকি ইস্যু করা হয় ৩১ ডিসেম্বর। যার টাকার পরিমাণ ৯৬ লাখ ৯০ হাজার টাকা। তবে এ চেক কসমোপলিটন করপোরেশনের কোন কর্মকর্তা কিংবা প্রতিষ্ঠানের পক্ষে কেউ গ্রহণ করেননি। এমনকি ব্যাংক থেকেও এ চেক প্রতিষ্ঠানটির কেউ নগদায়ন করেনি। আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নাম ব্যবহার করে জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে এ টাকা কে বা কারা আত্মসাৎ করেছে। এখানে আমার প্রতিষ্ঠানকে জড়িয়ে সুনামহানি করা হয়েছে।

নাবিল আহসান বলেন, ‘বাংলাদেশ রেলওয়ে একটি চেক ইস্যু করার ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট ধাপ অনুসরণ পূর্বক চেক অনুমোদিত হয়। রেলওয়ে নির্দিষ্ট প্রাপক বরাবরে চেক ইস্যু করে থাকে। তা শুধুমাত্র কোম্পানির কর্ণধার অথবা তার অথরাইজড পারসনের কাছে যাচাই-বাছাই পূর্বক হস্তান্তর করা হয়। এ ছাড়া বিল অনুমোদনের ক্ষেত্রে বিলের কপি কন্ট্রাক্ট কপি, চালান, আর/নোট, ফরওয়াডিং দাখিল করতে হয়। অথচ ৩১ ডিসেম্বর ইস্যু হওয়া চেকের বিপরীতে কসমোপলিটন করপোরেশন থেকে কোন প্রকার কাগজপত্র দাখিল করা হয়নি।’

নাবিল আহসান আরও বলেন, ‘শুনেছি এ টাকার চেক অনুমোদন হওয়ার পর সোহাগ নামে এক ব্যক্তি সীমান্ত ব্যাংক চট্টগ্রামের আগ্রাবাদ শাখা থেকে উত্তোলন করেছেন। যার ঠিকানা দেওয়া হয়েছে চট্টগ্রামের। আমার প্রতিষ্ঠানের নামে ভুয়া ট্রেড লাইসেন্স দিয়ে এ অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছে। অথচ সীমান্ত ব্যাংকের ওই শাখায় আমার প্রতিষ্ঠানের কোনও অ্যাকাউন্ট নেই। আমার অফিস চট্টগ্রামে নয়, ঢাকার ৩৮/১ নিউ ইস্কাটন রোডে।’

এদিকে বিলের নামে কোটি টাকা লোপাটের ঘটনায় রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের সংশ্লিষ্ট দপ্তরে কঠোর গোপনীয়তা রক্ষা করা হচ্ছে। ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর ঊর্ধ্বতন অনেকে ঢাকায় অবস্থান করছেন।

এ প্রসঙ্গে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের অর্থ উপদেষ্টা ও প্রধান হিসাব অধিকর্তা মো. রফিকুল বারী খান বলেন, ‘ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কসমোপলিটন করপোরেশনের চারটি বিল ছিল। সেখানে একটি বিলের বিপরীতে দুইবার অর্থ ছাড় দেওয়া হয়েছে। ঘটনা তদন্তে কমিটি গঠন করা হয়েছে। এর সঙ্গে জড়িত সন্দেহে প্রাথমিকভাবে সাত জনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে দুই জন অফিসার, দুই জন অ্যাকাউন্টেন্ট, দুই জন অডিটর এবং একজন এমএলএসএস। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন পাওয়ার পর বিস্তারিত জানা যাবে।’

পূর্বাঞ্চলের অতিরিক্ত অর্থ উপদেষ্টা ও প্রধান হিসাব অধিকর্তা মো. সাইদুর রহমান সরকার বলেন, ঘটনাটির বিষয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে কথা বলেছি। তবে তদন্তাধীন বিষয়ে কিছু বলা যাচ্ছে না।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক কামরুল আহসান বলেন, ‘জড়িতদের কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে সবার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

জেএন/এমআর

KSRM
পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জয়নিউজবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন news@joynewsbd.com ঠিকানায়।

এই বিভাগের আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ

×KSRM