ঈদ বাজারে সেমাই-চিনি-মসলা বিক্রির ধুম, দামও চড়া

অনলাইন ডেস্ক

ঈদুল ফিতরের বাকি আর মাত্র কয়েকদিন। শেষ মুহূর্তে জামা-কাপড়ের দোকানে যেমন উপচেপড়া ভিড়, তেমনি ঈদকেন্দ্রিক ভোগ্যপণ্য কিনতে বাজারগুলোতে ক্রেতাদের ভিড়ও বেড়েছে। সেই সাথে সেমাই, কিসমিস, কাজুবাদাম, কাঠবাদাম ও গুঁড়ো দুধের বিক্রি বেড়েছে বাজারে। বছর ব্যবধানে বেড়েছে দামও।

- Advertisement -

বিভিন্ন বাজারে ক্রেতা বিক্রেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এবার প্রকারভেদে খোলা সেমাইয়ের দাম কেজিতে অন্তত ১০ থেকে ২০ টাকা বেড়েছে। আর বিভিন্ন ব্র্যান্ডের প্যাকেটজাত সেমাইয়ের দামও বেড়েছে ৫ থেকে ১০ টাকা করে।

- Advertisement -google news follower

রোববার (৭ এপ্রিল) নগরের বহদ্দারহাট, চকবাজার ও রিয়াজউদ্দিন বাজার এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে, প্যাকেটজাত সেমাইয়ের মধ্যে রয়েছে ব্র্যান্ডের ভিন্নতা। এর মধ্যে ড্যান কোম্পানির ৪০০ গ্রাম পরিমাণের লাচ্ছা সেমাই বিক্রি হচ্ছে ২৭০ টাকায়, যা অন্যান্য প্যাকেটজাত সেমাইয়ের মধ্যে সর্বোচ্চ। দোকানিরা বলছেন, এ সেমাইয়ের মান ও স্বাদ অন্যান্য সেমাইয়ের চাইতে ভালো বিধায় দামটা বেশি।

এছাড়া, ৪০০ গ্রাম প্যাকেটের মধুমতী লাচ্ছা সেমাই ১৬০ টাকায় ও কিশোয়ান লাচ্ছা সেমাই বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকায়। তাছাড়া, প্যাকেটজাত ২০০ গ্রাম কুলসন চিকন সেমাই বিক্রি হচ্ছে ৪৫ টাকায়, ফাইনফুডের সেমাই বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায়।

- Advertisement -islamibank

খোলা লাচ্ছা সেমাই বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ২২০ টাকা কেজি দরে। খোলা চিকন সেমাই প্রতি কেজি ২০০ টাকার আশপাশে বিক্রি হচ্ছে।

দোকানী ফরহাদ হোসেন বলেন, খোলা ও প্যাকেট দুই ধরনের সেমাইয়েরই চাহিদা আছে। ক্রেতারা যার যার পছন্দমতো সেমাই কিনছেন। তবে, লাচ্ছা সেমাইয়ের চাহিদাটা একটু বেশি।

এদিকে ঈদকে সামনে রেখে চট্টগ্রামের চর চাক্তাই রাজাখালী এলাকায় সেমাই কারখানায় এখন তুমুল ব্যস্ততা। এখানকার সেমাই স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন পাইকারি বাজারে। দেশে বছরে সেমাইয়ের চাহিদা প্রায় ৩০ হাজার টন। যার মধ্যে ২০ হাজার টন উৎপাদন হয় রমজান আর ঈদ ঘিরে। যার বাজার মূল্যে আনুমানিক সাড়ে সাতশ থেকে একহাজার কোটি টাকা।

দেশি সেমাই বলে পরিচিত হলেও চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষায় এটি ‘ফইর হবিরর ছেমাই’(ফকির কবিরের সেমাই) বলেই একনামে পরিচিত। যুগের পরিবর্তনে এই সেমাইয়ের দোকান কিছুটা আধুনিকতার এসে এর নাম হয়েছে মেসার্স ফকির কবির। বেকারি পণ্য তৈরি করলেও সেমাইয়ের জন্য প্রতিষ্ঠানটির বিশেষ সুনাম রয়েছে। স্বাদে ও গুণে তারা এখনো পর্যন্ত সেই সুনাম বজায় রেখেছেন। এবারও বিভিন্ন পাইকারি বাজারে সেমাই পৌঁছে দিতে প্রতিদিন সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত সেমাই তৈরি করছেন তারা।

এক ব্যবসায়ী বলেন, গত বছর লাল সেমাই বিক্রি করেছি ১৮০ থেকে ১৯০ টাকায়। এবার বেচছি ২৫০ টাকায়। আগের সাদা সেমাই বিক্রি করেছি ১৫০ টাকায়। এবার বেচছি ১৮০ টাকায়।

মিজানুর রহমান নামে এক ক্রেতা বলেন, এখন কোনো কিছুই কেনা যাচ্ছে না। সবকিছুর মূল্য বাড়তি। ফলে আগে যা নিতাম, সেটার চেয়ে অর্ধেক নিতে হচ্ছে। আমাদের অনেক কষ্ট হচ্ছে।

সেমাইয়ের আরেক অনুষঙ্গ কিসমিসের দর ২০০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৬০০ থেকে ৭২০ টাকায়।

সেমাই রান্নার উপকরণের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে খোলা চিনির দাম। বাজারে প্রতি কেজি খোলা চিনি বিক্রি হয়েছে ১৪৫ থেকে ১৫০ টাকায়।

দুধ ছাড়া সেমাই রান্না কল্পনা করা যায় না। এ ক্ষেত্রে সাধারণত গুঁড়া দুধের ব্যবহার বেশি হয়। সেমাইয়ের পাশাপাশি এবার সেই গুঁড়া দুধের দামও বেড়েছে। গত বছর রমজানের ঈদে যেখানে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের প্যাকেটজাত এক কেজি গুঁড়াদুধ বিক্রি হয়েছে ৬০০ থেকে ৭২০ টাকায়, সেখানে এবার তা ৭৭০ থেকে ৮৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এ ছাড়া বাজারে প্রতি কেজি কাজুবাদাম ১ হাজার থেকে ১ হাজার ৮০ টাকা, কাঠবাদাম ৮০০ থেকে ৮৫০ টাকা ও চিনাবাদাম ২০০ টাকার আশপাশে বিক্রি হচ্ছে।

জানতে চাইলে কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি এস এম নাজের হোসাইন বলেন, সরকারের তদারকি সংস্থাগুলো ঈদের ছুটিতে থাকে। এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে ব্যবসায়ীরা দাম বাড়িয়ে দেন।

জেএন/হিমেল/এমআর

KSRM
পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জয়নিউজবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন news@joynewsbd.com ঠিকানায়।

এই বিভাগের আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ

×KSRM