দুদক কর্মকর্তা কামরুলের ব্ল্যাকমেইলে পলাশ ধরের হাত!

অনলাইন ডেস্ক

চট্টগ্রামের পটিয়ার মনসায় স্বর্ণালী জুয়েলার্সের মালিক পলাশ ধর পাকাপোক্ত সোনা ব্যবসায়ী। এছাড়া তিনি জড়িত রয়েছেন একাধিক সামাজিক ও মানবাধিকার সংগঠনে। করেন সমাজসেবাও।

- Advertisement -

তবে এত সবকিছুর আড়ালে তিনি প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ের দুর্নীতিগ্রস্থ কর্মকর্তাদের ব্যবহার করে নগরের ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষকে ফাঁসিয়ে , ব্ল্যাকমেইল করে, মামলা ও পুলিশের ভয় দেখিয়ে টাকা হাতিয়ে নিতেন।

- Advertisement -google news follower

গত বছরের ২৩ সেপ্টেম্বর পাঁচলাইশ থানাধীন অলি খাঁ মসজিদের পাশের হোটেল জামান থেকে প্রতারণার অভিযোগে গ্রেফতার হয় দূর্ণীতি দমন কমিশনের কর্মকর্তা মো. কামরুল হুদা।

গ্রেফতার হওয়ার দীর্ঘ ৬ মাসপর গত ১৪ মার্চ তাঁর সহযোগী হিসেবে পলাশ ধরকেও গ্রেফতার করে পুলিশ। এরপর সমাজসেবক ও ব্যবসায়ী পলাশ ধরের থলের বিড়াল বেরিয়ে আসতে শুরু করেছে।

- Advertisement -islamibank

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পাঁচলাইশ থানার উপ পরিদর্শক দীপক বলেন, প্রতারণা মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া দুদকের কর্মকর্তা মো. কামরুল হুদার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনের ফরেনসিক রিপোর্টে পলাশ ধরের জড়িত থাকার তথ্য প্রমাণ পাওয়া যায়। এরপর তাকে বৃহস্পতিবার ধরা হয়। শুক্রবার তাকে আদালতের মাধ্যমে জেলে পাঠানো হয়।

পুলিশের ওই কর্মকর্তা জানান, দুদকের কর্মকর্তা মো. কামরুল হুদাকে বিভিন্ন লোকজনের তথ্য দিত পলাশ ধর। পরে তাদের মামলার ভয় দেখিয়ে টাকা আদায় করতো। তার একটি অংশ পলাশ ধরের পকেটে যেত।

পলাশ ধর পটিয়া উপজেলার গৌড়লা গ্রামের বাসিন্দা। মো. কামরুল হুদা কক্সবাজারের কুতুবদিয়া এলাকার বাসিন্দা। বর্তমানে কুমিল্লায় দুদকে কর্মরত আছেন।

যেভাবে কামরুল গ্রেফতার হয়েছিল :

চট্টগ্রাম নগরের কোতোয়ালি থানাধীন হাজারী গলির ঐশী হুলিয়াম নামের স্বর্ণ দোকানের মালিক পরিমল ধর। তিনি ১৬ সেপ্টম্বর দোকানে থাকা অবস্থায় দুদকের কর্মচারী (সহকারী উপপরিদর্শক) মো. কামরুল হুদা নিজেকে অফিসার পরিচয় দিয়ে কথা বলেন।

একপর্যায়ে অভিযোগ রয়েছে এমনটা জানিয়ে এবং অভিযোগ ডিসমিস করবে বলে তার কাছ থেকে ২০ লাখ টাকা দাবি করে। পরে তাদের সাক্ষাতের তারিখ ২০ সেপ্টম্বর নির্ধারণ হয়।

এরই ধারাবাহিকতায় পাঁচলাইশ থানাধীন হোটেল জামানে তাদের সাক্ষাৎ হয়। আগে থেকে অবগত থাকা থানা পুলিশও একটু পরে সেখানে গিয়ে হাজির হয়। একপর্যায়ে সেখান থেকে মো. কামরুল হুদাকে গ্রেপ্তার করে।

পরে পরিমল ধর তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে কামরুল ঘটনাসহ টাকা দাবির বিষয়ে সত্যতা স্বীকার করেন বলেও এজাহারে পরিমল ধর উল্লেখ করেন।

যেভাবে পলাশ ধরের নাম বেরিয়ে আসে :

পলাশ ধর দুর্দান্ত প্রকৃতির লোক। পুলিশ কর্মকর্তাদের দাবি, দুদক কর্মকর্তা কামরুল হুদাকে পলাশ ধর গলির ঐশী হুলিয়াম স্বর্ণ দোকানের মালিক পরিমল ধরকে ব্ল্যাকমেইলের জন্য যাবতীয় তথ্য দেন। তার করা ছকেই কামরুল হুদা ফাঁদ পাতে পরিমল ধরের কাছ থেকে ২০ লাখ টাকা আদায়ের।

এরইমধ্যে কামরুল হুদা গ্রেফতার হলে তার ব্যবহ্নত মোবাইলটির ফরেনসিক রিপোর্ট দীর্ঘ ৫ মাস পর হাতে আসে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার হাতে।

এতে ব্যবসায়ীকে ব্ল্যাকমেইলে জড়াতে পলাশ ধরের নানা পরিকল্পনার তথ্য উঠে আসে। এরপর নিশ্চিত হয়ে ১৪ মার্চ পলাশ ধরকে পুলিশ গ্রেফতার করে।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ পরিদর্শক দীপক বলেন, দুদক কর্মকর্তার ব্ল্যাকমেইল কাণ্ডে আর কেউ জড়িত আছে কিনা জানতে পলাশকে পুলিশের হেফাজতে নেওয়ার জন্য আদালতে আবেদন করা হবে।

জেএন/এফও/পিআর

KSRM
পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জয়নিউজবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন news@joynewsbd.com ঠিকানায়।

এই বিভাগের আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ

×KSRM