চউকের কালুরঘাট-চাক্তাই সড়ক নির্মাণে পুরোনো ইট-রাবিশ!

চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (চউক) গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প হিসেবে বিবেচিত ‘কর্ণফুলী নদীর তীর বরাবর কালুরঘাট সেতু থেকে চাক্তাই খাল পর্যন্ত সড়ক নির্মাণ প্রকল্পে’ নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে।

- Advertisement -

প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়ন করছে স্পেক্ট্রা ইঞ্জিনিয়ার্স নামে একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। প্রকল্পে নতুন ইট ব্যবহারের নিয়ম থাকলেও প্রকল্প বাস্তবায়নকারী ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এসবে অনিয়মে জড়িত।

- Advertisement -google news follower

প্রকল্প সংশ্লিষ্ট ও সরেজমিন গিয়ে নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী নির্মাণের দেখা গেছে। এদিকে দফায় দফায় প্রকল্পের মেয়াদ ও ব্যয় বাড়িয়ে এখন কাজ শেষ করতে পারেনি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান।

প্রকল্প সংশ্লিষ্ট ও সিডিএ সূত্র জানায়, গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পটির পিডি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন নির্বাহী প্রকৌশলী রাজিব দাশ। তিনি বর্তমানে দেশের বাইরে রয়েছেন। এই সুযোগে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার করে চলছে।

- Advertisement -islamibank

প্রকল্প এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, কল্পলোক আবাসিক এলাকার ২ নম্বর রোডের শেষ মাথায় প্রকল্পটির সাইট অফিস। অফিসটির বাম পাশে বিভিন্ন এলাকা থেকে আনা হয়েছে ভবনে ব্যবহৃত পুরাতন ইট।

বিশাল পুরাতন ইটের স্তুপ। একদল ইট ভাঙার মেশিন দিয়ে পুরাতন ভাঙছে। আর কেউ ট্রাকে তুলছে। পুরাতন ইট ভেঙে কংক্রিট তৈরি করছে। আর এসব কংক্রিট প্রকল্পের বিভিন্ন ঢালাইয়ে ব্যবহার করা হচ্ছে জানিয়েছেন প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা।

চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদী তীরবর্তী কালুরঘাট সেতু থেকে চাক্তাই খাল পর্যন্ত চার লেনের সড়ক কাম বাঁধ নির্মাণ প্রকল্পের কাজ শুরু হয় ২০১৮ সালের অক্টোবরে। সাড়ে আট কিলোমিটার দীর্ঘ এই বাঁধের ব্যয় ধরা হয় ২ হাজার ২৭৫ কোটি ৫২ লাখ টাকা।

প্রকল্পটি তিন বছরের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা। তবে প্রায় পাঁচ বছর সময় পার হলেও গুরুত্বপূর্ণ এই প্রকল্পটির কাজ এখনও শেষ করতে পারেনি বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠান চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (চউক)।

এই সময়ে দুই দফায় প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানোর পাশাপাশি ৪৭১ কোটি টাকা ব্যয় বাড়ানো হয়েছে। এতে প্রকল্পের ব্যয় বেড়ে হয়েছে ২ হাজার ৭৪৬ কোটি টাকা। প্রকল্পের মেয়াদ বাড়িয়ে ২০২৪ সালের জুন করা হয়েছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন কর্মকর্তা জানান, ‘প্রকল্প সংশ্লিষ্ট ও ঠিকাদাররা যোগসাজশে বারবার প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ায় মূলত হরিলুট করার জন্য। প্রকল্প নেওয়ার আগেই প্রকল্পের মেয়াদ ও ব্যয় নির্ধারিত থাকে।

সেই অনুসারে প্রকল্পের কাজ শেষ করা হয় না কেন? তিন থেকে চারবার প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানো হবে কেন? এর কারণ হচ্ছে প্রকল্পে অনিয়ম আর হরিলুট করা। যা প্রায় প্রত্যক বড় বড় প্রকল্পে হচ্ছে।

জবাবদিহিতা না থাকায় দেশের বিভিন্ন প্রকল্পে অনিয়ম হচ্ছে এবং অসংগতিই নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে। এসব থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। নয়তো এভাবে সরকারি টাকা নয়ছয় হতেই থাকবে।’

ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান স্পেক্ট্রা ইঞ্জিনিয়ার্সের প্রকৌশলী ও প্রজেক্ট ম্যানেজার (পিএম) অসিম কুমার হালদার বলেন, পুরাতন ইট দিয়ে কংক্রিট তৈরি করা হচ্ছে ঠিক আছে। এসব কংক্রিট প্রকল্পে ব্যবহার করব না। অন্য জায়গায় ব্যবহার করব।

অন্য কোন জায়গা বা কোন প্রকল্পে ব্যবহার করবে তা নিশ্চিত করতে পারেননি। প্রকল্প পরিচালক (পিডি) ও চউকের নির্বাহী প্রকৌশলী রাজিব দাশ বিদেশে অবস্থান করায় তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।

জেএন/এফও/পিআর

KSRM
পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জয়নিউজবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন news@joynewsbd.com ঠিকানায়।

এই বিভাগের আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ

×KSRM