জমে উঠেছে চট্টগ্রাম বিভাগীয় বইমেলা, পাঠকদের ভীড়

নগরীর চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন মিউনিসিপ্যাল মডেল স্কুল এন্ড কলেজে মাঠে সরকারের সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পৃষ্ঠপোষকতায় চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ের ব্যবস্থাপনায়, বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির সহযোগিতায় আয়োজিত সপ্তাহব্যাপী বিভাগীয় বইমেলা জমে উঠেছে। আজ ১৫ অক্টোবর রোববার মেলার দ্বিতীয় দিন বিকেলে দেখা গেছে বিভিন্ন স্টলে নামী-দামী লেখকদের বই খুজঁতে পাঠকদের ভীড় পরিলক্ষিত হয়েছে। স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরাসহ যুব ও তরুণ প্রজন্মের বই প্রেমীরা মেলার স্টল থেকে তাদের পছন্দনীয় বই কিনে নিচ্ছে। অধিকাংশ স্টলে ছাড় দিয়ে বিভিন্ন লেখকের বই বিক্রয় করা হচ্ছে।

- Advertisement -

পাঠকেরা বলছেন, প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত চট্টগ্রাম বিভাগীয় বইমেলা জমজমাট হয়ে উঠছে। সর্বস্তরের মানুষের মাঝে বই পড়ার আগ্রহ সৃষ্টির উদ্দেশ্যে প্রতিবছর এ ধরণের বইমেলার আয়োজন করা হলে জাতি আলোকিত হবে। বই মনস্ক জাতি গঠন করতে পারলে দেশ থেকে সন্ত্রাস ও মাদকসহ সকল ধরণের অপকর্ম দূর হবে।

- Advertisement -google news follower

বইমেলা প্রতিদিন বিকাল ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত চলবে। মেলায় ঢাকা ও চট্টগ্রামসহ দেশের খ্যাতনামা প্রকাশনী সংস্থা ৭৫টি স্টলের মাধ্যমে অংশগ্রহণ করেছে। বাংলা একাডেমিসহ সরকারি প্রকাশনী সংস্থার ১০টি, জাতীয় পর্যায়ের ৪৭টি প্রকাশনী সংস্থা ও চট্টগ্রামের সৃজনশীল প্রকাশক পরিষদ ১৭টি প্রকাশনা সংস্থার স্টল রয়েছে। সরকারি প্রতিষ্ঠানসমূহ হচ্ছে- বাংলা একাডেমি, গণগ্রন্থাগার অধিদপ্তর,প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি, কবি নজরুল ইনস্টিটিউট, বাংলাদেশ শিশু একাডেমি, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তর, প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ (পিআইবি) ও জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্র।

বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান এবং চট্টগ্রাম সৃজনশীল প্রকাশক পরিষদের স্টলগুলো হচ্ছে-অনিন্দ্য প্রকাশ, অনন্যা, কাব প্রকাশনী, কোয়ান্টাম, কাকলী প্রকাশনী, শিরীণ পাবলিকেশন্স, ঐতিহ্য, তাম্রলিপি, জ্ঞানকোষ প্রকাশনী, উজান, আগামী প্রকাশনী, অনুপ্রাণন প্রকাশনী, কিন্ডারবুকস, শিলা প্রকাশনী, মাওলা ব্রাদার্স, মক্কা পাবলিকেশন্স, নালন্দা, মাতৃভাষা প্রকাশ, মেরিট ফেয়ার প্রকাশন, আহমদ পাবলিশিং হাউস, জনতা প্রকাশ, পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স লিঃ, স্টুডেন্ট ওয়েজ, মেসার্স প্রতীক প্রকাশনা সংস্থা, বিআইআইটি পাবলিকেশন্স, ঝিঙেফুল, কথা প্রকাশ, আদর্শ, মাদার্স পাবলিকেশন্স, অন্বয় প্রকাশন, প্রিয়মুখ প্রকাশনী, অন্যপ্রকাশ, ঝুমঝুমি প্রকাশন, শিখা প্রকাশনী, গ্রন্থরাজ্য, অন্যধারা, শব্দশৈলী, রুশদা প্রকাশ, হাওলাদার প্রকাশনী, গ্রন্থ কুটির, অন্বেষা প্রকাশন, বাতিঘর, বইবাজার প্রকাশনী, আকাশ, ইউনিভর্সিটি প্রেস লিঃ (ইউপিএল), উত্তরণ, বাধঁন পাবলিকেশন্স, কালধারা প্রকাশনী, বলাকা প্রকাশন, রাদিয়া প্রকাশন, আবীর প্রকাশন, শব্দশিল্প প্রকাশন, ইতিহাসের খসড়া, প্রজ্ঞালোক প্রকাশন, বিদ্যানন্দ প্রকাশনী, তৃতীয় চোখ, চন্দ্রবিন্দু প্রকাশন, চন্দ্রবিন্দু, বাংলাদেশ কো-অপারেটিভ বুক সোসাইটি লিঃ, দ্বীন দুনিয়া প্রকাশন, এ্যামেলিয়া প্রকাশন, নন্দন বইঘর, সাহিত্য বিচিত্রা ও গাজী প্রকাশনী।

- Advertisement -islamibank

মেলায় প্রতিদিন স্কুল কলেজের ছাত্র-ছাত্রীদের অংশগ্রহণে রচনা, বিতর্ক, চিত্রাংকন প্রতিযোগিতাসহ বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি ও শিশু একাডেমির অংশগ্রহণে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন রয়েছে। আগামী ২০ অক্টোবর শুক্রবার বিকেল ৪টায় পুরস্কার বিতরণ ও সমাপনী অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বইমেলার সমাপ্তি ঘটবে।

অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) মোহাম্মদ শামীম আলম জানান, স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীসহ সমাজের সর্বস্তরের মানুষের মধ্যে বইপড়ার আগ্রহ সৃষ্টি করা, গবেষকদের সহায়তা ও উৎসাহ প্রদানের মাধ্যমে বইমনস্ক জাতি গঠনের লক্ষ্যে প্রথম বারের মতো বিভাগীয় পর্যায়ে এই বই মেলার আয়োজন করা হয়েছে।

সরকারের সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব খলিল আহমদ বলেন, অনুষ্ঠানে, উন্নত জাতি গঠনে বই পড়ার কোন বিকল্প নেই। প্রতিটি মানুষই এক একটি বই। মানুষ বেচেঁ থাকবেনা, কিন্তুু বই থাকবে। উন্নত জাতি গঠনে তরুণ প্রজন্ম ও যুব সমাজকে বইমুখী করতে হবে। তাহলে সন্তানেরা মাদকসহ অন্যান্য অপকর্ম থেকে সরে আসবে। বই শুধু জ্ঞান বিকাশের হাতিয়ার নয়, সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডকে আরও বেগবান করে। জ্ঞানকে ধরে রাখতে হলে পড়তে, বলতে, লিখতে ও জানতে হবে।

তিনি আরও বলেন, বই পড়ে যারা জ্ঞান অর্জন করতে চাই তারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে একদিন মানবিক মানুষ হয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে এগিয়ে আসবে। চট্টগ্রামের বই মেলাটি একটি অন্যতম বড় মেলায় পরিণত হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক মুহম্মদ নুরুল হুদা বলেন, জন্ম থেকে আমৃত্যু পর্যন্ত জ্ঞানার্জনের শেষ নেই। জাতিকে শিক্ষিত করতে হলে বেশী বেশী করে বই পড়তে হবে। এজন্য জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্র নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। তরুণ ও যুব সমাজেকে মহান মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানাতে হবে। নতুন প্রজন্মকে বই পড়ার মাধ্যমে মানবিক জাতি হিসেবে গড়ে তুলতে পারলে আমরা একদিন উন্নত জাতি হিসেবে বিশ্বে মাথা উচুঁ করে দাড়াঁতে পারবো।

জেএন/এমআর

KSRM
পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জয়নিউজবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন news@joynewsbd.com ঠিকানায়।

এই বিভাগের আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ

×KSRM