জরুরি অবস্থা মোকাবিলায় ‘খাদ্য ব্যাংক’ চান প্রধানমন্ত্রী

জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে উদ্ভূত বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও তার ফলে প্রকট হতে থাকা খাদ্য চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে আঞ্চলিক খাদ্য ব্যাংক গড়ে তোলা প্রয়োজন বলে মনে করেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

- Advertisement -

জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৮তম অধিবেশনে দেওয়া ভাষণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের মতো দেশগুলোর জন্য নিরবচ্ছিন্নভাবে সারের প্রাপ্যতা নিশ্চিত করতে হবে। তাছাড়া উৎপাদিত ফসল সংরক্ষণের লক্ষ্যে হিমাগার নির্মাণের জন্য আমাদের বৈশ্বিক বিনিয়োগ প্রয়োজন। আমি জরুরি অবস্থা মোকাবিলার জন্য আঞ্চলিক ‘খাদ্য ব্যাংক’ চালু করার প্রস্তাব করছি। আমাদের অবশ্যই জলবায়ু-সহনশীল ফসলের গবেষণায় একে অপরকে সহযোগিতা করতে হবে।’

- Advertisement -google news follower

শুক্রবার (২২ সেপ্টেম্বর) নিউ ইয়র্কের স্থানীয় সময় দুপুরে দেওয়া ভাষণে এসব কথা বলেন তিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, বিগত কয়েক বছরের আন্তঃসংযুক্ত সংকটগুলো বিশ্বব্যাপী খাদ্য, জ্বালানি এবং পণ্য মূল্যবৃদ্ধি করেছে। জ্বালানি ও খাদ্য আমদানিকারক দেশ হিসেবে আমাদের আমদানি বিল উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে, যা আমাদের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।

- Advertisement -islamibank

তিনি বলেন, ‘এসব চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও আমরা প্রতিটি মানুষের জন্য খাদ্য নিশ্চিত করেছি। আমরা নিম্ন আয়ের এক কোটি মানুষকে সাশ্রয়ী দামে চাল ও অন্যান্য সামগ্রী সরবরাহ করছি। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছি। আমি আমাদের জনগণকে নিজেদের খাদ্য উৎপাদন করতে এবং কোনো জমি অনাবাদি না রাখার আহ্বান জানিয়েছি। আমাদের বিজ্ঞানীরা খরা, লবণাক্ততা, জলমগ্নতাসহ বিরূপ আবহাওয়া উপযোগী ফসলের জাত উদ্ভাবন করেছেন।’

শেখ হাসিনা বলেন, ২০২২ সালে গ্লোবাল ক্রাইসিস রেসপন্স গ্রুপ গঠন এবং এর মাধ্যমে বৈশ্বিক খাদ্য, শক্তি এবং অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলায় প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখে বিভিন্নমুখী সমাধান প্রদানের জন্য আমি জাতিসংঘ মহাসচিবকে বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানাই। খাদ্যপণ্য রপ্তানি এবং সরবরাহ শৃঙ্খলে বিদ্যমান সমস্যাগুলোর টেকসই সমাধান নিশ্চিত করার জন্য এ গ্রুপের অন্যতম চ্যাম্পিয়ন হিসেবে আমি সব সময়ই জোর দিয়েছি।’

তিনি বলেন, আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন যে ‘ব্ল্যাক সি গ্রেইন ইনিশিয়েটিভ’ অকার্যকর হয় পড়েছে এবং এ ব্যবস্থার দ্রুত পুনরুদ্ধারের জন্য আমি সংশ্লিষ্ট সবাইকে আহ্বান জানাচ্ছি।

ভাষণে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘করোনা মহামারি এবং মহামারি পরবর্তী সময়ে জাতীয় পর্যায়ে সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত ও মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করতে আমরা বেশ কিছু কঠোর আর্থিক ও নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’

তিনি বলেন, ‘আমরা সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী খাতে বিনিয়োগ বৃদ্ধি করেছি এবং কৃষি, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প এবং অন্যান্য দুর্বল খাতে লক্ষ্যভিত্তিক সহায়তা প্রদান করেছি। অসহায় নারী, বিধবা, বয়স্ক ও প্রতিবন্ধী ব্যক্তি, তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ এবং সমাজের অন্যান্য প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর সামাজিক ও আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিদ্যমান সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী সম্প্রসারিত করেছি।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে প্রায় সাড়ে ৪ কোটি মানুষ সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর সুবিধা পাচ্ছেন। চলতি অর্থবছরে সামাজিক নিরাপত্তা খাতে ১ লাখ ২৬,২৭২ কোটি টাকা (প্রায় ১২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার) বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এ বছর আমরা সর্বজনীন পেনশন স্কিম চালু করেছি। ১৮ থেকে ৫০ বছর বয়সী যেকোন নাগরিক এ পেনশন সুবিধা গ্রহণ করতে পারবেন।’

জেএন/এমআর

KSRM
পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জয়নিউজবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন news@joynewsbd.com ঠিকানায়।

এই বিভাগের আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ

×KSRM