বেসরকারি ১০ ব্যাংকের বিরুদ্ধে তদন্তে নামছে বাংলাদেশ ব্যাংক

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর গত বছরের মার্চের পর থেকে দেশে ডলার-সংকট প্রকট আকার ধারণ করে। এ সংকট মোকাবিলায় শুরুতে ডলারের দাম বেঁধে দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। কিন্তু তাতে সংকট আরও প্রকট হয়।

- Advertisement -

পরে সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশ ব্যাংক ডলারের দাম নির্ধারণের দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ায়। এ দায়িত্ব দেওয়া হয় ব্যাংকের শীর্ষ নির্বাহীদের সংগঠন-অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ (এবিবি) ও বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ ডিলার অ্যাসোসিয়েশনের (বাফেদা) ওপর।

- Advertisement -google news follower

এরপর থেকে দুই সংগঠনের নেতারা বিভিন্ন লেনদেনে ডলারের সর্বোচ্চ দাম নির্ধারণ করেন। তবে কিছু ব্যাংক ডলারের নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি দামে ডলার কেনাবেচা করছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

ব্যাংকে ডলার কেনাবেচার দর নির্ধারিত থাকলেও কিছু ব্যাংক তা না মেনে অতিরিক্ত দামে আগ্রাসীভাবে বেচাকেনা করছে। এমন কারসাজির অভিযোগ উঠেছে বেসরকারি খাতের ১০টি ব্যাংকের বিরুদ্ধে। এসব ব্যাংকের বিরুদ্ধে তদন্তে নামছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

- Advertisement -islamibank

অভিযোগ প্রমাণিত হলে ব্যাংকগুলোর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। আগামীতে যাতে নির্ধারিত দরের চেয়ে বেশি দামে ডলার কেনাবেচা না করেন সে বিষয়ে সব ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে সতর্ক করা হয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মেজবাউল হক বলেন, ডলার বেচাকেনায় যেসব ব্যাংক কারসাজি করেছে তাদের বিষয়ে তদন্ত করা হবে। তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জানা যায়, ডলার বেচাকেনায় কারসাজির সঙ্গে জড়িত ১০ ব্যাংকের মধ্যে প্রচলিত ধারার ৭টি ও ইসলামি ধারার ৩টি ব্যাংক রয়েছে। ইতোমধ্যে এসব ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে (এমডি) জরুরি ভিত্তিতে ডেকে সতর্ক করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

তাদের কাছে বাড়তি দামে ডলার বেচাকেনার কারণ জানাতে চাওয়া হয়। ভবিষ্যতে এর পুনরাবৃত্তি হলে ব্যক্তিগতভাবে জরিমানা করার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়। এক্ষেত্রে এমডি ছাড়াও ডলার বেচাকেনার সঙ্গে জড়িত ট্রেজারিপ্রধান বা অন্য কোনো কর্মকর্তাকেও জরিমানা করা হবে।

তথ্যমতে, সর্বোচ্চ ১০৭ টাকা দরে প্রবাসী রেমিট্যান্স কেনার কথা জানালেও ১১৩ টাকা পর্যন্ত দরে কিনছে কোনো কোনো ব্যাংক। এভাবে কেনা ডলার আমদানিকারকের কাছে ১১৪ থেকে ১১৫ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করা হয়।

যদিও ব্যাংকগুলো কাগজে-কলমে ১০৭ থেকে ১০৮ টাকার বেশি দেখাচ্ছে না। বাড়তি অর্থ কখনও অনানুষ্ঠানিকভাবে সরাসরি এক্সচেঞ্জ হাউজের প্রতিনিধিকে পরিশোধ করা হচ্ছে। কখনও ‘অন্যান্য খাতের ব্যয়’ দেখানো হচ্ছে। একইভাবে আমদানিকারকের কাছ থেকে বাড়তি টাকা নিয়ে তা ‘অন্যান্য খাতের আয়’ হিসাবে সমন্বয় করা হচ্ছে।

এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা জানান, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ধারাবাহিকভাবে কমতে থাকায় ডলার বিক্রি কমানো হয়েছে। তাই বলে এক দর ঘোষণা করে আরেক দরে বেচাকেনা আইনসিদ্ধ নয়।

আবার ঘোষণার অতিরিক্ত দাম যে প্রক্রিয়ায় পরিশোধ করা হচ্ছে, তা মানি লন্ডারিং আইনে অপরাধ। যে কারণে ব্যাংকগুলোকে সতর্ক করা হয়েছে। তারা যাতে ঘোষণার চেয়ে বেশি দরে ডলার বেচাকেনা না করে। এটি করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে, এমন বার্তা দেওয়া হয়েছে।

জেএন/পিআর

KSRM
পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জয়নিউজবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন news@joynewsbd.com ঠিকানায়।

এই বিভাগের আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ

×KSRM