পররাষ্ট্রমন্ত্রী

অগণতান্ত্রিকভাবে জন্মগতরা গণতন্ত্রের কথা বলে, এটা যেন চোরের মায়ের বড় গলা

অনলাইন ডেস্ক

পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, যাদের জন্মটাই অগণতান্ত্রিক আর প্রতিনিয়ত গণতন্ত্র ধ্বংস করার জন্য অপচেষ্টা চালায়, সেই বিএনপি এখন গণতন্ত্রের কথা বলে, এটিই হচ্ছে দুঃখজনক। এটি যেন, চোরের মায়ের বড় গলা।

- Advertisement -

তিনি বলেন, ক্যান্টনমেন্টের মধ্যে জিয়াউর রহমান ক্ষমতা দখল করেছিল, ক্ষমতা দখল করে ক্ষমতার উচ্ছিষ্ট বিলিয়েছিল, ড. মঈন খান আর মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ তাদের শীর্ষস্থানীয় নেতৃবৃন্দ যারা আছেন, তারা সেই ক্ষমতার উচ্ছিষ্ট গ্রহণ করার জন্য সন্নিবেশিত হয়ে বিএনপি গঠন করেছিলেন।

- Advertisement -google news follower

বুধবার (১০এপ্রিল) সকাল সাড়ে ১১টায় চট্টগ্রাম নগরীর দেওয়ানজি পুকুর লেনস্থ ওয়াইএনটি সেন্টারে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় করেন পররাষ্ট্র মন্ত্রী।

আওয়ামী লীগ দেশে গণতন্ত্রকে ধ্বংস করেছে এবং সারাবিশ্বে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে এটি প্রচার হচ্ছে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও দলটির নেতা ড. আবদুল মঈন খানের এমন বক্তব্যের বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

- Advertisement -islamibank

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, শুধু বিএনপির জন্মই অগণতান্ত্রিক নয়, তারা দেশে সবসময় গণতন্ত্র হরণ করার জন্য অপচেষ্টা চালিয়েছে এবং এখনো চালিয়ে যাচ্ছে। ২০০৮ সালের নির্বাচনের পর বিডিআর বিদ্রোহের পিছনে তাদের হাত ছিল। নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত এবং গণতন্ত্রকে ধ্বংস করার উদ্দেশ্যেই সেটি ঘটানো হয়েছে। ২০১৪ সালের নির্বাচনের আগে ১৩ সালে কি ধরণের সন্ত্রাসী ও জঘন্য মানুষ পোড়ানোর মহোৎসব করে গণতন্ত্রকে ধ্বংস করার অপচেষ্টা তারা চালিয়েছিল, আপনারা জানেন। ১৪ সালের নির্বাচনে পাঁচশ নির্বাচনী কেন্দ্র জালিয়ে দিয়েছিল এবং নির্বাচনী কর্মকর্তা ও বিদ্যুৎ কর্মকর্তাদের হত্যা করা হয়েছিল। সেটির উদ্দেশ্য ছিল নির্বাচনকে ভণ্ডুল করা, গণতন্ত্রকে ধ্বংস করা। ১৮ সালের নির্বাচনেও একই প্রচেষ্টা ছিল। সর্বশেষ ২৪ সালের বিগত নির্বাচন বর্জন করার মধ্য দিয়ে গণতন্ত্রকে ধ্বংস করার অপচেষ্টা চালানো হয়।

সোমালিয়ার জলদস্যুদের কাছে আটক জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ ও নাবিকদের কখন উদ্ধার করা সম্ভব – সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে পররাষ্ট্র মন্ত্রী বলেন, জলদস্যুদের হাত থেকে নাবিক এবং জাহাজ দুটোই উদ্ধার করার ক্ষেত্রেই অল্প সময়ের মধ্যে অনেক অগ্রগতি হয়েছে, আশা করছি শিগগির তাদেরকে মুক্ত করতে পারব। তবে উদ্ধারের দিনক্ষণ বলাটা কঠিন।

তিনি বলেন, আমরা নাবিকদের পরিবারকে আশ^স্ত করতে চাই যে, সরকার সর্বাত্মকভাবে চেষ্টা করছে, প্রথমত যারা অপহরণ করেছে তাদের সাথে বিভিন্ন পক্ষের মাধ্যমে আলোচনা চলছে। দ্বিতীয়ত তাদের ওপর মনস্তাত্বিক প্রচুর চাপ তৈরি করা হয়েছে। নাবিকরা ভালো আছে, নিয়মিতভাবে তাদের পরিবারের সাথে যোগাযোগ রাখছে, এমনকি ভিডিও কলেও কথা বলছে। সুতরাং যে উদ্বেগটা কিছুদিন আগে ছিল সেটি এই মুহূর্তে নেই। আমরা আশা করছি তাদেরকে শিগগির মুক্ত করতে পারব।

চট্টগ্রামে কিশোর গ্যাংয়ের তৎপরতা বৃদ্ধি এবং কিশোর গ্যাংয়ের হামলায় আজকে এক চিকিৎসকের মৃত্যুর ঘটনার বিষয়ে সাংবাদিকরা চট্টগ্রামের সন্তান পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, গত মন্ত্রীসভার মিটিংয়ে অনানুষ্ঠানিক আলোচনায় কিশোর গ্যাং নিয়ে আলোচনা হয়েছে। অত্যন্ত দুঃখজনকভাবে বিভিন্ন জেলা শহরে এই কিশোর গ্যাং তৈরি হচ্ছে। তাদের ব্যাপারে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী যাতে যথাযথ পদক্ষেপ নেয় সে ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছেন।

তিনি বলেন, কিশোর গ্যাংদেরকে গ্রেপ্তারের পর স্বাভাবিক জেলে না রেখে সংশোধনাগারে পাঠানোর জন্য পরামর্শ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। কারণ, সাধারণ জেলে যদি তাদেরকে পাঠানো হয় সেখানে থাকা অন্যান্য সন্ত্রাসীদের সাথে যুক্ত হয়ে তারা আরো ভয়ংকর সন্ত্রাসী হয়ে উঠতে পারে। দেশে এটি নতুন সমস্যা, এটিকে দূরীভুত করার জন্য সরকার কাজ করছে। কিশোর গ্যাংয়ের সাথে নেপথ্যে যেই থাকুক, সে যেই দলেরই হোক তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে এবং হচ্ছে।

সাংবাদিকদের মাধ্যমে দেশবাসীকে পবিত্র ঈদুল ফিতরের আগাম শুভেচ্ছা জানিয়ে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, আপনারা জানেন আমাদের দেশে রমজান আসার আগে এবং রমজানের সময় দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি করার জন্য একটি অসাধু চক্র ও কিছু মজুদদার সবসময় সক্রিয় হয়। এবারও তার ব্যত্যয় হয়নি। সেটির সাথে নতুনভাবে যুক্ত হয়েছিল বিএনপির ভারতীয় পণ্য বর্জনের ডাক। তাদের উদ্দেশ্য ছিল বাজারকে অস্থিতিশীল করা, পণ্যের মূল্য যাতে বাড়ে। কিন্তু সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়ার প্রেক্ষিতে এবার রমজানের সময় বাজার স্থিতিশীল ছিল এবং অনেক পণ্যের দাম কমেছে।

তিনি বলেন, আগামীকাল দেশে পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপিত হবে। কয়েক কোটি মানুষ যার যার গন্তব্যে যাচ্ছেন। এই সুযোগে পরিবহণের সাথে সংশ্লিষ্ট কেউ কেউ বাড়তি ভাড়া আদায় করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। সরকার বিষয়টি নজর রাখছে। এ ধরণের বাড়তি বাড়া আদায় অযৌক্তিক ও কোনভাবেই সমীচিন নয়। গতকালও বিভিন্ন জায়গায় পরিদর্শক টিম গেছে। বাড়িতে যাবার সময় জনগণেরও সচেতন থাকতে হবে, অযথা হুড়োহুড়ি করে যাতে দুর্ঘটনা না ঘটে। মহান আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করি, আগামীকাল যেন সারা দেশে বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপিত হয়।

জেএন/এমআর

KSRM
পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জয়নিউজবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন news@joynewsbd.com ঠিকানায়।

এই বিভাগের আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ

×KSRM