ওষুধের প্রতিক্রিয়া নাকি অন্যকিছু?

চট্টগ্রামে সিজারের পর ১৩ প্রসূতির মৃত্যু, তদন্ত কমিটি গঠন

অনলাইন ডেস্ক

ধচট্টগ্রামের কয়েকটি হাসপাতালে সিজার করানোর পর একের পর এক প্রসূতি মায়ের মৃত্যু হচ্ছে। গত কয়েক মাসে সেখানে ১৩ জন প্রসূতি মায়ের মৃত্যু হয়েছে। এসব ঘটনা খতিয়ে দেখতে ১০ সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির সদস্যরা প্রসূতিদের মৃত্যুর কারণ খুঁজে বের করার চেষ্টা করছেন।

- Advertisement -

তদন্ত কমিটিতে থাকা চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত চট্টগ্রামের ইন্টারন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতাল এবং সিটি কর্পোরেশন পরিচালিত মেমন হাসপাতালে মোট ১৩ জন প্রসূতি সিজারের পর মারা গেছেন। এর মধ্যে মা ও শিশু হাসপাতালে ৭ জন, ইন্টারন্যাশনাল হাসপাতালে ৪ জন এবং মেমন হাসাপাতালে ২ জনের সিজার হয়েছিল। মেমন হাসপাতালের দুজনকে সিজারের পর অন্য হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। সেখানে তাদের মৃত্যু হয়।

- Advertisement -google news follower

সিজারের পর মৃত্যুর ঘটনায় নাম এসেছে চট্টগ্রামের ইন্টারন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের। এর উপপরিচালক আবদুর রাজ্জাক বলেন, আমাদের হাসপাতালে প্রতিদিন গড়ে ৮ থেকে ১০ জন প্রসূতি মায়ের সিজার হয়। আগে এ ধরনের জটিলতা হতো না। গত জানুয়ারি থেকে আমরা হঠাৎ লক্ষ্য করলাম কোনো কোনো মায়ের অপারেশনের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই শরীরে নানা জটিলতা দেখা দিচ্ছে।

তিনি বলেন, তাদের বেশিরভাগেরই কমন সমস্যা ছিল কিডনি বিকল হয়ে যাওয়া। আবার কারও ক্ষেত্রে হার্টের সমস্যা দেখা যাচ্ছিল। কোনো চিকিৎসাতেই তাদের সুস্থ করা যাচ্ছিল না। তাদের এমন সব জটিলতা হচ্ছিল যে, শেষ পর্যন্ত তাদের আইসিইউ সাপোর্ট দরকার পড়ছিল। এ কারণে আমরা তাদের বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠিয়ে দিই। একইসঙ্গে বিষয়টি সিভিল সার্জন কার্যালয়কে জানাই।

- Advertisement -islamibank

সিজারের সময় ব্যবহৃত ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কারণে এসব প্রসূতি মায়ের মৃত্যু হতে পারে বলে ধারণা করছেন কোনো কোনো চিকিৎসক। মৃত্যুর কারণ নিয়ে ইন্টারন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল যে ব্যাখ্যা দিয়েছে সেখানেও তারা ওষুধের প্রতিক্রিয়াকেই সামনে এনেছে। তারা বলেছে, এ হাসপাতালে এ ধরনের জটিলতায় মোট চারজন প্রসূতি মারা গেছেন। হাসপাতালটির পক্ষ থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ওই কমিটিতে থাকা চিকিৎসকদের প্রাথমিক ধারণা, ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থেকেই এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটতে পারে।

ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কারণে প্রসূতি মায়েদের মৃত্যু হয়েছে কি না তা খতিয়ে দেখতে পরীক্ষার জন্য সিজারে ব্যবহৃত ওষুধগুলো সংগ্রহ করেছে চট্টগ্রামের ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর।

তবে, এ বিষয়ে একমত নন চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইলিয়াছ চৌধুরী। তিনি বলেন, সিজারের সময় যেসব মেডিসিন ব্যবহার করা হয়, সেটি অন্যান্য সার্জারির ক্ষেত্রেও ব্যবহৃত হয়। একই মেডিসিন ব্যবহার করে জেনারেল সার্জারি কিংবা অর্থোপেডিক্স সার্জারির ক্ষেত্রে তো কারও মৃত্যু হচ্ছে না।

তাহলে সিজারে প্রসূতি মায়েদের মৃত্যুর কারণ কী? জানতে চাইলে সিভিল সার্জন বলেন, করোনাভাইরাসে সংক্রমণের কারণে আমাদের শরীরে নানা পরিবর্তন হয়েছে। সেটির কারণে সিজারে প্রসূতি নারীরা মারা যাচ্ছে কি না তা তদন্ত করে দেখছি। কারণ তারা সিজার করালে মারা যাচ্ছে, সাধারণভাবে প্রসব করলে সমস্যা হচ্ছে না।

এখনই এ ধরনের মৃত্যু নিয়ে মন্তব্য করতে নারাজ চমেক হাসপাতালের অধ্যক্ষ ডা. সাহেনা আক্তার। তিনি বলেন, প্রসূতি মায়েদের মৃত্যুর কারণ এখনো জানা যায়নি। এ বিষয়ে তদন্ত চলছে। তদন্ত কমিটিতে মোট ১০ জন রয়েছেন। আমরা একটি বৈঠক করেছি। সেখানে সদস্যদের কিছু কাজ দেওয়া হয়েছে। আগামী বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) এ কমিটির আরেকটি বৈঠক আছে। সেখানে এগুলো আবার পর্যালোচনা করা হবে।

জেএন/এমআর

KSRM
পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জয়নিউজবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন news@joynewsbd.com ঠিকানায়।

এই বিভাগের আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ

×KSRM