বিতর্কের মাধ্যমে গৃহীত সিদ্ধান্তে গণমত প্রতিফলিত হয়: আবদুন নূর তুষার

অনলাইন ডেস্ক

বিতর্কের মাধ্যমে গৃহীত সিদ্ধান্তে গণমত প্রতিফলিত হয় বলে মন্তব্য করেছেন প্রাক্তন বিতার্কিক ও মিডিয়া ব্যক্তিত্ব ডাঃ আবদুন নূর তুষার।

- Advertisement -

সোমবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে সৃজনশীল প্রকাশনা পরিষদ ও নাগরিক সমাজের সহযোগিতায় অমর একুশে বই মেলা মঞ্চে বিতর্ক উৎসবে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, যুক্তি নির্ভর বিজ্ঞানমনস্ক আলোকিত মানুষ গড়তে বিতর্কচর্চা খুবই ফলপ্রসূ অবদান রাখতে পারে। সত্যের অনুসন্ধানে ও বহুমাত্রিক মতামতকে একত্রিকরণে বিতর্ক উপযোগী মাধ্যম। বিতর্কের মাধ্যমে গৃহীত সিদ্ধান্তে গণমত প্রতিফলিত হয়। স্মার্ট বাংলাদেশের প্রাণশক্তি হবে যুক্তি-তর্কের তলোয়ারে শানিত স্মার্ট তরুণরাই। শিক্ষার অপরিহার্য অনুসঙ্গ হিসেবে ‘বিতর্ক’ গৃহীত এবং রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা অর্জনে সক্ষম হলে যুগোপযোগী জনসম্পদ তৈরীতে বিশেষ অবদান রাখবে।

- Advertisement -google news follower

আবদুন নূর তুষার বলেন, বিশ্বায়নের ফলে জ্ঞান বিজ্ঞানের সব দরজা মানুষের জন্য খোলা। সময়ের সঙ্গে এগিয়ে যেতে হলে নতুন প্রজন্মকে অত্যন্ত যুক্তিবাদী, দেশপ্রেমিক, পরমতসহিষ্ণু হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। তৈরি করতে হবে আগামী দিনের জন্য। এক্ষেত্রে বিতর্ক শক্তিশালী অস্ত্র হিসেবে কাজ করবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

”ভাষা আন্দোলনের চেতনাটা আসলে কোথায়? পৃথিবী থেকে প্রতিদিন একটি ও দুটি করে ভাষা হারিয়ে যাচ্ছে। এটা শুধু বাংলাদেশ নয়, সারা বিশ্বেই হচ্ছে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের একটা গান আছে, ‘এই তো ভালো লেগেছিল আলোর নাচন পাতায় পাতায়’। এগুলি কিন্তু ভাববার বিষয়। একুশের ভাষা আন্দোলনের পরে বাংলাদেশ বুঝে গিয়েছিল যে, পাকিস্তানিদের সঙ্গে থাকা সম্ভব নয়। এর ফলে মুক্তিযুদ্ধের বীজ বপণ হয়। বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষের ভাষা, স্বাধীনতা আমরা সমুন্নত রাখব, আমরা এই চেতনায় বিশ্বাস করি।”

- Advertisement -islamibank

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে চট্টগ্রাম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-পরিচালক ডাঃ বিদ্যুৎ বড়ুয়া বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, বঙ্গবন্ধু, বাংলাদেশকে ভালোবাসতে হবে। এসব কিছুকে ধারণ করে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড বায়োটেকনোলজি বিভাগের প্রফেসর ড আদনান মান্নান বলেন, বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ার দাবির মধ্যে ভাষা আন্দোলন সীমাবদ্ধ ছিল না। একুশের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে পরবর্তীকালে ১৯৬২ সালের শিক্ষা আন্দোলন, ১৯৬৬ সালের ছয় দফা আন্দোলন, ৬৯’র গণঅভ্যুত্থান, ৭০’র সাধারণ নির্বাচন এবং ৭১’র স্বাধীনতাযুদ্ধে আমরা জয়লাভ করতে পেরেছি। এসব জয়লাভের পেছনে প্রধান অনুঘটক ছিল ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন।

সভাপতির বক্তব্যে একুশে পদকপ্রাপ্ত নাট্যজন আহমেদ ইকবাল হায়দার বলেন, বিতর্ক হচ্ছে কোনো বিষয়কে গভীরভাবে অনুসন্ধানের চেষ্টা। যুক্তি হচ্ছে তার ভিত্তি। বিদ্যমান সমাজ ও রাজনৈতিক বাস্তবতায় অবক্ষয়ের যে লক্ষণগুলো স্পষ্ট, বিতর্কের সুযোগ থাকলে তার একধরনের সমাধান হতে পারে। তাই তিনি বিতর্কের মাধ্যমে পরমতসহিষ্ণুতার চর্চা অব্যাহত রেখে মানবতা প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানিয়েছেন।

সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন সাউথইস্ট ব্যাংক লিমিটেডের আঞ্চলিক প্রধান রাশেদুল আমিন রাশেদ, দৃষ্টির প্রতিষ্ঠাতা মাসুদ বকুল। এসময় মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন চসিকের প্রধান শিক্ষা কর্মকর্তা আবুল হাশেম। বিতর্ক উৎসবে অংশগ্রহণ করেন ডাঃ খাস্তগীর স্কুলের বিতার্কিক অমৃতা সেন, নুসরাত তাবাসসুম, প্রতিতি বড়ুয়া, চট্টগ্রাম সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ইসফার তাসনিয়া, অংকুর সোসাইটি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের মিমবর হুরে জান্নাত, উইলিয়াম কেরি একাডেমির সুমাইয়া লাইসা কাবির।

আগামীকাল মঙ্গলবার বিকালে অমর একুশে বই মেলা মঞ্চে নারী দিবস অনুষ্ঠিত হবে। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন চট্টগ্রাম মহানগর মহিলা আওয়ামীলীগের সভাপতি বেগম হাসিনা মহিউদ্দিন।

জেএন/এমআর

KSRM
পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জয়নিউজবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন news@joynewsbd.com ঠিকানায়।

এই বিভাগের আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ

×KSRM