আফ্রিকার ৪২৮ রান তাড়ায় লড়াই করে হারল শ্রীলঙ্কা

পরাজয়ের ব্যবধান দেখে মনে হতেই পারে, কোথাও একটু ভুল হচ্ছে। একপেশে এই ম্যাচে কোনভাবেই লড়াই করতে পারেনি লঙ্কানরা। দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে এক অর্থে নাস্তানাবুদ হয়েছে তারা। কিন্তু টার্গেট যখন বিশ্বকাপের নতুন রেকর্ডের, রান তাড়ায় চারশো’র বেশি যখন লক্ষ্য, তখন লঙ্কানদের প্রচেষ্টাকে সাধুবাদ জানাতেই হয়।

- Advertisement -

ম্যাচের ৩৬তম ওভার পর্যন্ত রানের বিচারে দক্ষিণ আফ্রিকার চেয়ে এগিয়ে ছিল শ্রীলঙ্কা। তবে, হাতে পর্যাপ্ত উইকেট না থাকায় হার মানতে হয়েছে এশিয়ান দেশটিকে। তবু ক্ষণে ক্ষণে লড়াই চালিয়ে গিয়েছেন লঙ্কান ক্রিকেটাররা। কখনো কুশাল মেন্ডিস, কখনো চারিথ আসালাঙ্কা, কখনোবা দাসুন শানাকা লড়ে গিয়েছেন। তবে শেষরক্ষা আর হয়নি। বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে লঙ্কানরা হেরেছে ১০২ রানের বড় ব্যবধানে।

- Advertisement -google news follower

অথচ ৪২৯ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে লঙ্কানদের শুরুটা ছিল নড়বড়ে। দলীয় এক রানেই সাজঘরে ফিরে যান পাথুম নিশাঙ্কা। তিনে নামা কুশাল মেন্ডিস যেন হাল ছাড়তে নারাজ। রিভিউ নিয়ে বেঁচে গিয়েছিলেন শুরুতেই। এরপরই খেললেন অসাধারণ এক ইনিংস। একপর্যায়ে স্কোর ছিল এমন, দলীয় রান ৫৪, কুশাল মেন্ডিস ৫১। অপর ব্যাটার কুশাল পেরেরা তখনও রানের খাতাই খোলেননি।

কুশাল পেরেরা আর বড় কিছু করতেও পারেননি। ব্যক্তিগত ৭ রানে ফিরেছেন তিনি। এরপর সাদিরা সামারাবিক্রমাকে নিয়ে শুরু হয় মেন্ডিসের সংগ্রাম। এই জুটি যোগ করে ৪২ রান। দারুণ খেলতে থাকা মেন্ডিস ফেরেন ৪২ বলে ৭৬ রানের বিধ্বংসী ইনিংস খেলে। রাবাদার বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন তিনি।

- Advertisement -islamibank

দুই রান পরেই আবার উইকেটের পতন। কোয়েটজের বলে আউট সামারাবিক্রমা। ১১১ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় লঙ্কানরা। তবে হাল ছাড়তে রাজি ছিল না ৯৬ এর চ্যাম্পিয়নরা। ব্যাট হাতে এবার নায়ক চারিথ আসালাঙ্কা। ৮ চার এবং ৪ ছয়ে খেলেছেন ৬৫ বলে ৭৯ রানের ইনিংস। তবে দলীয় ২৩২ রানে আসালাঙ্কা ফিরে গেলে আবারও চাপে পড়ে যায় শ্রীলঙ্কা। এর এক রান পরেই আউট দুনিথ ভেল্লালাগে।

কাসুন রাজিথাকে নিয়ে এরপর লড়াই চালিয়ে যান অধিনায়ক দাসুন শানাকা। অধিনায়ক হয়ে খেলেছেন অধিনায়কের মতোই ইনিংস। তার ৬৮ রানের ইনিংস কিছুটা হলেও স্বপ্ন দেখাচ্ছিল লঙ্কানদের। তবে কেশব মহারাজের বলে আউট হওয়ার পর শ্রীলঙ্কার স্বপ্নটাও শেষ হয়ে যায়। লঙ্কানদের ইনিংস শেষ পর্যন্ত থেমেছে সবকটি উইকেট হারিয়ে ৩২৬ রানে।

এর আগে ব্যাট করতে নেমে রেকর্ডবুক তোলপাড় করে দেওয়া এক ইনিংস উপহার দিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা। দিল্লির অরুণ জেটলি স্টেডিয়াম আগে থেকেই ব্যাটিংবান্ধব হিসেবে পরিচিত। এবার তাতে যেন রানের বন্যা বসিয়ে দিয়েছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটাররা।

বড় স্কোরের দিনে বিশ্বকাপের রেকর্ডবুকে নিজের নাম তুলেছেন এইডেন মার্করাম। বিশ্বকাপে দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ড নিজের করে নিয়েছেন এই প্রোটিয়া ব্যাটার। ৪৯ বলে পৌঁছে গেছেন সেঞ্চুরির মাইলফলকে। এর আগে বিশ্বকাপের দ্রুততম সেঞ্চুরির মালিক ছিলেন আয়ারল্যান্ডের কেভিন ও ব্রায়ান। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ২০১১ বিশ্বকাপে ৫০ বলে শতরান করেছিলেন এই আইরিশ ব্যাটার।

এইডেন মার্করাম ছাড়াও এদিন সেঞ্চুরির দেখা পেয়েছেন আরও দুই প্রোটিয়া ব্যাটার। ওপেনার কুইন্টন ডি কক করেছেন ৮৪ বলে ১০০। আর রাসি ভ্যান ডার ডুসেন ১১০ বলে খেলেছেন ১০৮ রানের ইনিংস। আর এই ত্রয়ীর সেঞ্চুরিতে ভর করে এদিন বিশ্বকাপের আরও এক নতুন রেকর্ড করেছে তারা।

এর আগে বিশ্বকাপের দলীয় সংগ্রহে শীর্ষে ছিল অস্ট্রেলিয়া। নিজ দেশের মাটিতে ২০১৫ সালে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ৪১৭ রান করেছিল অজিরা। আজ ৪২৮ রান করে তাদের ছাড়িয়ে গেল প্রোটিয়ারা।

বল হাতে লঙ্কানরা এদিন ছিল অসহায়। দলের সবচেয়ে সফল বোলার দিলশান মাদুশাঙ্কা দুই উইকেট পেলেও ৮৬ রান খরচা করেছেন। কাসুন রাজিথা ১ উইকেট পেলেও দিয়েছেন ৯০ রান। মাথিশা পাথিরানা এবং দুনিথ ওয়েল্লালাগে দুজনে রান দিয়েছেন যথাক্রমে ৯৫ ও ৮১।

জেএন/এমআর

KSRM
পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জয়নিউজবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন news@joynewsbd.com ঠিকানায়।

এই বিভাগের আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ

×KSRM