পাঁচলাইশের ওসিসহ ৩ পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা

সিএমপির পাঁচলাইশ থানার ওসি মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন ও এস আই আব্দুল আজিজসহ ৩ পুলিশের বিরুদ্ধে আদালতে মামলার আবেদন করা হয়েছে।

- Advertisement -

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মায়ের ডায়ালাইসিস করাতে গিয়ে পাঁচলাইশ থানা পুলিশের হেফাজতে নির্মমভাবে নির্যাতনের অভিযোগে মামলার আবেদন করেন ভুক্তভোগী সৈয়দ মোস্তাকিম।

- Advertisement -google news follower

আজ সোমবার দুপুরে শুনানি শেষে চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ ড. বেগম জেবুননেছা অভিযোগটি আমলে নিয়ে সিআইডিকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। আগামী ২৭ মার্চ তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।

বাদীর আইনজীবী অ্যাডভোকেট জিয়া হাবীব আহ্সান জয় নিউজকে বলেন, পাঁচলাইশ থানা হেফাজতে সৈয়দ মোহাম্মদ মুনতাকিমকে নির্যাতনের অভিযোগে ওসি মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন এবং এসআই আবদুল আজিজের বিরুদ্ধে হেফাজত নিবারণ আইনে মামলার আবেদন করা হয়।

- Advertisement -islamibank

ভুক্তভোগী আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। শুনানি শেষে মামলাটি গ্রহণ করে সিআইডিকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।

মামলার আবেদনে উল্লেখ করা হয়, মোস্তাকিম তাঁর মাকে সাত বছর ধরে ডায়ালাইসিস করান। সম্প্রতি ডায়ালাইসিস ফি বেড়ে যাওয়ায় তিনি ও অন্যান্য কিডনি রোগীর স্বজনরা আন্দোলন শুরু করেন। গত ১০ জানুয়ারি তাঁরা চমেক হাসপাতালের প্রধান গেটে জড়ো হয়ে মানববন্ধন করেন।

সে সময় পাঁচলাইশ থানার ওসি নাজিম উদ্দিনের নেতৃত্বে একদল পুলিশ সেখানে এসে আন্দোলনকারীদের ওপর চড়াও হন। একপর্যায়ে মোস্তাকিমকে গ্রেপ্তার করে প্রথমে একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিচে মারধর করেন ওসি নাজিম উদ্দিন।

এরপর তাঁকে থানায় নিয়ে আবার মারধর করেন। মারধরের সময় এসআই আবদুল আজিজ মোস্তাকিমকে বলেন ‘ওসি নাজিম স্যারের সাথে আর বেয়াদবি করবি?’

সেসময় ওসি নাজিম বলেন, ‘…রিমান্ডে এনে থানায় পিটাতে হবে, তারপর বুঝবি পুলিশ কী জিনিস!’ এরপর থানায় ধরে এনে মারধরের বিষয়টি ফাঁস করলে মোস্তাকিমকে ক্রসফায়ারের হুমকি দেওয়া হয়।

জানা গেছে, ডায়ালাইসিস ফি বৃদ্ধির প্রতিবাদে গত জানুয়ারির শুরুর দিকে চমেক হাসপাতালে আন্দোলনে নামেন রোগী ও তাদের স্বজনরা। কয়েকদিন ধরে চলা ওই আন্দোলনে গত ১০ জানুয়ারি চমেকের প্রধান ফটকের সামনের সড়ক অবরোধ করেন বিক্ষোভকারীরা।

সেদিন ঘটনাস্থলে পৌঁছে আন্দোলনকারীদের সড়ক ছেড়ে দিতে অনুরোধ করে পুলিশ। কিন্তু আন্দোলনকারীরা সড়ক না ছাড়ার ঘোষণা দেন। বাগ-বিতণ্ডার একপর্যায়ে পাঁচলাইশ থানার ওসি নাজিম উদ্দিন উত্তেজিত হন।

তিনি নিজের মুঠোফোন বের করে বিক্ষোভকারীদের ভিডিও ধারণ করেন ও তাদের দেখে নেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন। এরপর একযোগে আন্দোলনকারীরা ওসির বিরুদ্ধে হইচই শুরু করেন ও ভিডিও ডিলিট করার দাবি জানান।

সে সময় মোস্তাকিমও ওসির সেই মোবাইল সরিয়ে নিতে চেষ্টা করেন। এরইমধ্যে হাতাহাতিতে ওসির মোবাইল মাটিতে পড়ে ভেঙে যায়। এরপর মোস্তাকিমকে পেটাতে পেটাতে চমেকের প্রধান ফটকের বিপরীতে এপিক হাসপাতালে নিয়ে যান ওসি নাজিম উদ্দিন।

সেখানেও তাঁকে আরেক দফা মারধর করা হয়। কিছুক্ষণ পর এপিকের সামনে থেকে আরও একজনকে ধরে এনে ভেতরে নিয়ে যান ওসি নাজিম উদ্দিন। তখন বিক্ষোভকারীদের ধাওয়া দিয়ে ছত্রভঙ্গ করে দেন অন্য পুলিশ সদস্যরা।

একপর্যায়ে একজনকে ছেড়ে দিলেও মোস্তাকিমকে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। এরপর ওই দিন রাতে সংঘর্ষের ঘটনায় বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন পাঁচলাইশ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোস্তাফিজুর রহমান। এতে মোস্তাকিমকে আসামি করা হয়।

এছাড়া মামলাটিতে অজ্ঞাতনামা ৫০ থেকে ৬০ জনকে আসামি করা হয়। এতে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে পুলিশের ওপর হামলা ও দায়িত্বে বাধা দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়।

গত ১১ জানুয়ারি এই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে মোস্তাকিমকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। এরপর ১৫ জানুয়ারি তাঁকে জামিন দেন আদালত। জামিনে মুক্ত হওয়ার পর পুলিশ হেফাজতে নির্যাতনের অভিযোগ তোলেন মোস্তাকিম।

জেএন/এফও/পিআর

KSRM
পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জয়নিউজবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন news@joynewsbd.com ঠিকানায়।

এই বিভাগের আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ

×KSRM