লামায় পাহাড়ধসে বৃদ্ধার মৃত্যু

বান্দরবানের লামার মধুঝিড়ি এলাকায় বসতবাড়িতে পাহাড়ধসে নূর জাহান (৬৫) নামে এক বৃদ্ধার মৃত্যু হয়েছে। এসময় পাহাড়ধসে নিহতের ছেলে মোহাম্মদ ইরান এবং পুত্রবধূ ফাতেমা বেগমসহ আরও ২ জন আহত হয়েছেন।

- Advertisement -

নিহত নূর জাহান স্থানীয় বাসিন্দা নূর হোসেনের স্ত্রী।
লামায় পাহাড়ধসে বৃদ্ধার মৃত্যু | Bandarban Bonna pic 01
বান্দরবান-কেরানীহাট প্রধান সড়ক প্লাবিত হওয়ায় রোববার (১৪ জুলাই) ষষ্ঠদিনের মত সারাদেশের সঙ্গে জেলা বান্দরবানের সড়ক যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। তবে বৃষ্টিপাত কমে যাওয়ায় রোববার দুপুরের পর বন্যায় প্লাবিত অভ্যন্তরীন সড়কগুলো থেকে পানি নেমে যায়। কিন্তু প্লাবিত এলাকাগুলোর অধিকাংশ বসতবাড়ি এখনো বন্যার পানিতে তলিয়ে আছে।

- Advertisement -google news follower

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, অবিরাম ভারি বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে পার্বত্য জেলা বান্দরবানের সাত উপজেলায় অভ্যন্তরীন সড়কগুলোতে পাহাড়ধসের ঘটনা ঘটে।

লামায় পাহাড়ধসে বৃদ্ধার মৃত্যু | Bandarban Bonna pic 03

- Advertisement -islamibank

বৃষ্টিতে সদরের কালাঘাটা, হাফেজঘোনা, ইসলামপুর, বনরুপাপাড়াসহ আশপাশের এলাকাগুলোতে পাহাড়ধসে বেশকিছু ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

এদিকে পাহাড়ধসে লামা উপজেলার মধুঝিড়ি এলাকায় এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে হতাহতদের উদ্ধার করেছে। আহতদের লামা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

লামার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আপেলা রাজু নাহা জয়নিউজকে জানান, ঝুকিপূর্ণ বসতি থেকে পাহাড়ধসে হতাহতদের আশ্রয়কেন্দ্রে সরিয়ে আনা হয়েছিল। কিন্তু রোববার সকালে তারা আশ্রয়কেন্দ্র ছেড়ে পালিয়ে বসত বাড়িতে ফিরে গেলে পাহাড়ধসে প্রাণহানীর ঘটনা ঘটে।

লামায় পাহাড়ধসে বৃদ্ধার মৃত্যু | Bandarban Bonna pic 05

এদিকে, অব্যাহত ভারি বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে জেলার রুমা, থানচি, রোয়াংছড়ি, লামা, আলীকদম এবং সদর উপজেলায় ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। ছয়টি উপজেলা এবং দুটি পৌরসভায় কমপক্ষে অর্ধলক্ষাধিক মানুষ বন্যায় ক্ষতির শিকার হয়েছেন। বন্যায় পুলিশ সুপারের বাংলো, ডিসিবাংলো, জজকোর্ট, নির্বাচন অফিস, ইউএনও অফিস, রোয়াংছড়ি-লামা থানা, পুলিশ লাইনস, বনবিভাগ, পার্বত্য জেলা পরিষদের রেস্টহাউজ, ক্যান্ট. পাবলিক স্কুল ও কলেজ, অরুনসার্কি টাউনহল, ফায়ারসার্ভিস অফিস, ক্রীড়া অফিস, সেনাবাহিনীর এমডিএস এলাকা, অফিসার্স ক্লাব, মহিলা ক্লাব সবগুলো প্লাবিত হয়েছে।

বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আবাসিক হোটেল হিলভিউ, হিলটন, রিভারভিউ, পূরবী এবং বাজারের বেশকিছু ব্যবসা প্রতিষ্ঠান।

রুমা সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শৈমং মারমা জয়নিউজকে বলেন, ১৯৯৭ সালের পর বিগত বাইশটি বছরে এতটা বড় বন্যা আর হয়নি। রুমা বাজারসহ আশপাশের এলাকাগুলো বন্যায় প্লাবিত হয়েছে। সড়ক-ব্রিজ ডুবে যাওয়ায় বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থাও। বন্যা ও পাহাড়ধসে রাস্তাঘাট-ঘরবাড়ির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

থানচি সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাংসার ম্রো বলেন, সাঙ্গু নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় থানচি বাজারসহ আশপাশের এলাকাগুলো বন্যায় প্লাবিত হয়। নদী তীরবর্তী অসংখ্য ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

রোয়াংছড়ি সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান চহ্লামং মারমা বলেন, রোয়াংছড়ি স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যা হয়েছে এবার। রোয়াংছড়ি ইউএনও অফিস, থানা, এলজিইডি অফিস এবং বাজার এলাকার সবগুলো সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান-ঘরবাড়ি প্লাবিত হয়েছে বন্যার পানিতে। রাস্তাঘাটের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এখনো বিচ্ছিন্ন রয়েছে সড়ক যোগাযোগ।

বান্দরবান পৌরসভার মেয়র মো. ইসলাম বেবী এবং লামা পৌরসভার মেয়র জহিরুল ইসলাম জয়নিউজকে বলেন, অবিরাম বর্ষণে বন্যা-পাহাড়ধসে পৌরসভার রাস্তাঘাটের ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে।

জয়নিউজ/আলাউদ্দিন/বিআর
KSRM
পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জয়নিউজবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন news@joynewsbd.com ঠিকানায়।

এই বিভাগের আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ

×KSRM