দুর্দান্ত জুটিতে স্মরণীয় জয়

সিনিয়র ক্রিকেটারই শুধু পারফর্ম করেন, তরুণরা পারছেন না— বাংলাদেশের ক্রিকেটের এই আক্ষেপ এবার বুঝি ঘুচলো। আফগানিস্তানের বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডেতে সিনিয়র ক্রিকেটার তথা টপ অর্ডার ভেঙে পড়লেও ঘুরে দাঁড়ানোর নজির স্থাপন করে স্মরণীয় এক জয় উপহার দিলেন আফিফ হোসেন ও মেহেদী হাসান মিরাজ। তাদের লড়াকু ব্যাটিংয়ে চট্টগ্রাামের প্রথম ওয়ানডে ৪ উইকেটে জিতে নিয়েছে বাংলাদেশ।

- Advertisement -

৬ উইকেট পড়লো ৪৫ রানে। হারের চোখ রাঙানিতে হতাশার ছবি ফুটে ওঠে বাংলাদেশ ক্যাম্পে। তবে ওই শেষ, আর উইকেটই পড়তে দেননি আফিফ-মিরাজ। তাদের অবিচ্ছিন্ন ১৭৪ রানের জুটিতে ৬ উইকেট হারিয়ে ৭ বল আগেই জয় নিশ্চিত করে স্বাগতিকরা। আফগানদের ৪৯.১ ওভারে ২১৫ রানে অলআউট করে জয়ের পথ সহজ করলেও ব্যাটিংয়ে কঠিন পরীক্ষা দিতে হয়েছে তামিম ইকবালদের। তারপরও দুর্দান্ত জুটিতে জয় তুলে নিয়ে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ ১-০তে এগিয়ে গেছে বাংলাদেশ।

- Advertisement -google news follower

অথচ এক ফজলহক ফারুকির পেস বোলিংয়েই খেই হারায় বাংলাদেশের ব্যাটিং। ২৮ রানে পড়ে ৫ উইকেট! পরে মাহমুদউল্লাহও বিদায় নেওয়ায় সাজঘরে ফিরেছেন ছয়জন। এমন পরিস্থিতিতে ম্যাচ জয়ের পরিস্থিতি তৈরি করা অবিশ্বাস্য একটি কাজ। সেটিই করে দেখিয়েছেন দুই তরুণ। কেউই সেঞ্চুরি করেননি, তবে স্মৃতির মণিকোঠায় সাজিয়ে রাখার মতো ইনিংস খেলে ফেলেছেন তারা। আফিফ খেলেছেন হার না মানা ৯১ রানের ইনিংস। আর মিরাজ অপরাজিত ছিলেন ৮১ রানে। ম্যাচসেরার পুরস্কার জিতেছেন এই অলরাউন্ডার।

চট্টগ্রামে শুরুতে ভালো কিছুর ইঙ্গিত দিয়েছিলেন তামিম। প্রথম ওভারে মেরেছেন দুটি চার। ছন্দপতন ঘটে তৃতীয় ওভারেই। ফারুকির তৃতীয় বলে শুরুতে গ্লাভসবন্দি হন লিটন দাস (১)। আফগানিস্তান রিভিউ নেওয়ার পরেই আউটের সিদ্ধান্ত দেন আম্পায়ার। এক বল বিরতি দিয়ে এলবিডাব্লিউ হন তামিমও (৮)। শুরুতে অবশ্য অনফিল্ড আম্পায়ার আউট দেননি। সফরকারীরা রিভিউ নেওয়ার পর মিলেছে সাফল্য।

- Advertisement -islamibank

দুই ওপেনার ফেরার পর মুশফিক পরিস্থিতি সামাল দেবেন কী, উল্টো নিজেই ফাঁদে পড়েন এলবিডাব্লিউর। পঞ্চম ওভারে ফারুকির ভালো লেংথের বল খেলতে গিয়ে পুরোপুরি পরাস্ত হয়েছেন। রিভিউ নিয়েও তার শেষরক্ষা হয়নি! ফিরেছেন মাত্র ৩ রানে। বিপদ পড়ে যাওয়া পরিস্থিতিতে অভিষিক্ত ইয়াসির আলীও দাঁড়াতে পারেননি। একই ওভারের শেষ বলে বোল্ড হয়েছেন রানের খাতা না খুলে! বিপর্যয়ের সেই শুরু। অভিজ্ঞ সাকিব আল হাসানও সাজঘরের পথ ধরলে রীতিমতো ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে বাংলাদেশ। ১০ রানে মুজিবের বলে আন্ডার এজ হয়ে বোল্ড হয়েছেন বামহাতি অলরাউন্ডার!

ধ্বংসস্তূপ থেকে উত্তরণের পথ খুঁজে পাননি মাহমুদউল্লাহও। কিছুক্ষণ ক্রিজে থেকেও থিতু হতে পারেননি তিনি। বরং রশিদ খানের ঘূর্ণিতে স্লিপে ক্যাচ দিয়ে ফিরেছেন ৮ রানে। তবে চাপের মাঝে থেকেও বাংলাদেশকে টেনে তুলেছেন আফিফ-মেহেদী।

অথচ দারুণ বোলিংয়ে আফগানিস্তানকে ২১৫ রানে আটকে রাখতে পেরেছিল বাংলাদেশ। টস জিতে ব্যাট করা আফগানিস্তান একটা সময় মোহাম্মদ নবী-নাজিবুল্লাহ জাদরান জুটিতে ভালো স্কোরের স্বপ্ন দেখছিল। কিন্তু তাসকিন আহমেদের বলে জুটি ভাঙার পর বেশিদূর যেতে পারেনি তারা। পরে সাকিবও উইকেট উৎসবে যোগ দেওয়ায় ২১৫ রানে থেমেছে আফগানিস্তানের ইনিংস। পুরো ইনিংসে জাদরানের ৬৭ রানই ছিল মূল আকর্ষণ।তার কারণেই স্কোর দুইশো ছাড়িয়েছে। আফগান ইনিংসের সর্বোচ্চ স্কোরারও তিনি। তার ৮৪ বলের ইনিংসে ছিল ৪ চার ও ২ ছয়। তার বিদায়ের পর পর ৪৯.১ ওভারে ২১৫ রানে গুটিয়ে যায় আফগানিস্তান।

৩৫ রানে মোস্তাফিজুর রহমান নিয়েছেন ৩ উইকেট। তাসকিন, সাকিব ও শরিফুল ২ উইকেট নিলেও খরুচে ছিলেন দুজন। তাসকিন ৫৫ রান দিয়েছেন আর সাকিব দিয়েছেন ৫০ রান। এক ওভারে ৪ রান দিয়ে একটি উইকেট মাহমুদউল্লাহর।

জয়নিউজ/এসআই
KSRM
পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জয়নিউজবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন news@joynewsbd.com ঠিকানায়।

এই বিভাগের আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ

×KSRM