ওমিক্রনের বিষয়ে যা বলছেন বিশেষজ্ঞরা

সম্প্রতি বিভিন্ন দেশে করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রনের সংক্রমণ বেড়েছে। বাংলাদেশে ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত ৩০ জন ওমিক্রনে আক্রান্ত হয়েছেন।

- Advertisement -

জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে ১২৮টি দেশে ওমিক্রন ছড়িয়ে পড়েছে। প্রতিবেশী দেশ ভারতেও করোনার এই নতুন ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণ বাড়ছে। দুই দিন আগে ভারতে ওমিক্রনে আক্রান্ত একজনের মৃত্যু হয়েছে।

- Advertisement -google news follower

সাম্প্রতিক সময়ে বহুল আলোচিত করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রনের লক্ষণগুলো কী কী? এ বিষয়ে স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. ফরহাদ মনজুর বলেছেন, ‘অনেক মানুষের কাছে ওমিক্রন সাধারণ ঠান্ডাজনিত অসুখের মতো মনে হবে। আক্রান্ত হওয়ার পর কারো কারো গলা শুকিয়ে যায়, সর্দি হয়, শরীরের জয়েন্টে ব্যথা বা মাথাব্যথা হয়।’

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইরোলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. সাইফুল্লাহ মুনশি বলেছেন, ‘ওমিক্রনের লক্ষণগুলো খুবই হালকা হয়। ডেলটা বা অন্য ধরনগুলোর মতো অতটা প্রকট নয়। অনেকের ফুসফুসের ওপরের দিকে ব্যথা হতে পারে।’

- Advertisement -islamibank

তিনি আরও বলেন, ‘করোনার লক্ষণ দেখা গেলে যেসব সতর্কতা অবলম্বনের কথা বলা হয়েছে, সবাইকে সেগুলো মানতে হবে। ওমিক্রনের জন্য আলাদা কোনো ব্যবস্থা নেওয়ার দরকার নেই।’

করোনায় আক্রান্ত হলে দেখা গেছে, স্বাদ বা গন্ধের অনুভূতি চলে যায়। এছাড়া, কাশি এবং উচ্চ তাপমাত্রার জ্বর হয় কারো কারো। এখনো করোনার ক্ষেত্রে এই তিনটি প্রধান লক্ষণই দেখা যাচ্ছে।

স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, ওমিক্রনে আক্রান্ত হলে অনেক সময় হালকা ঠান্ডা লাগা বা সাধারণ অসুস্থতা মনে হতে পারে।

ওমিক্রনের সংক্রমণের ফলে যেসব উপসর্গ দেখা দিতে পারে:
০ বুকের ওপরের অংশে ব্যথা
০ মাথাব্যথা
০ জ্বর
০ ক্লান্ত লাগা
০ শরীরে ব্যথা
০ গলা শুকিয়ে যাওয়া

শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসক ডা. তৌফিক আহমেদ বলেন, ‘ডেলটা ভ্যারিয়েন্টের তুলনায় ওমিক্রন অনেক দ্রুত ছড়িয়ে পড়লেও এখন পর্যন্ত পাওয়া তথ্য-উপাত্তে জানা যাচ্ছে, ওমিক্রন একটু হালকা ধরনের। ডেল্টায় আক্রান্তদের মতো গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়া বা হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার হার খুবই কম।’

এদিকে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহামারি বিশেষজ্ঞ ড. আব্দি মাহামুদ বলেছেন, ‘ওমিক্রন যে করোনার অন্যান্য ভ্যারিয়েন্টের চেয়ে কম ক্ষতিকর, তা নিশ্চিত করে বলার মতো যথেষ্ট তথ্য-প্রমাণ এখনো পাওয়া যায়নি। আপনি যদি করোনা টিকার দুই ডোজ নিয়ে থাকেন, তাহলে আপনি অনেকটাই নিরাপদ।’

মেডিসিন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক মনজুর রহমান গালিব বলেন, ‘যতদূর জানা গেছে, করোনার সব ধরনের ভ্যারিয়েন্ট দ্রুত নিজেদের বিস্তার করছে। এ কারণেই করোনার এরকম নতুন নতুন ভ্যারিয়েন্টের জন্ম হচ্ছে। অনেক ভ্যারিয়েন্ট ভাইরাসকে আরও বেশি ক্ষতিকর করে তুলতে পারে। আবার অনেকগুলো শুধু নিজেকে বিস্তার করে বা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। তবে ওমিক্রন অতটা ক্ষতিকারক নয়।’

সহযোগী অধ্যাপক ডা. সিয়াম ভূঁইয়া বলেন, ‘এটা সত্যি যে, করোনার ডেল্টা বা অন্য ভ্যারিয়েন্টের তুলনায় ওমিক্রন খুব দ্রুত ছড়ায়। এটাও ঠিক, ওমিক্রন ততটা প্রাণঘাতী নয়। বিশ্বব্যাপী দেখা গেছে, এই ভাইরাসে আক্রান্ত হলেও অন্যগুলোর তুলনায় রোগীদের হাসপাতালে ভর্তি হওয়া বা গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ার হার অনেক কম।’

স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা সবাই একটা বিষয়ে একমত হয়ে বলছেন, ‘ওমিক্রন নাকি ডেল্টায় আক্রান্ত হয়েছেন, সেটা নিয়ে ভাবনার চেয়ে বরং করোনায় যাতে আক্রান্ত না হন, সবাইকে সে চেষ্টা করতে হবে। সেজন্য স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। মাস্ক পরতে হবে। তারপরও কোনোভাবে আক্রান্ত হয়ে গেলে আইসোলেশনসহ চিকিৎসার যেসব পদ্ধতি আছে, সেগুলোই অনুসরণ করতে হবে।’

করোনার অন্য ধরনগুলোর সঙ্গে ওমিক্রনের বড় পার্থক্য লক্ষণ প্রকাশের ক্ষেত্রে। দক্ষিণ আফ্রিকায় বিস্তারের ধরন পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, করোনাভাইরাসের অন্য ধরনগুলোয় লক্ষণ প্রকাশে সাত দিন সময় লাগলেও, ওমিক্রনের ক্ষেত্রে সাধারণত তিন দিনের মধ্যেই লক্ষণ প্রকাশ পায়।

জয়নিউজ/এসআই
KSRM
পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জয়নিউজবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন news@joynewsbd.com ঠিকানায়।

এই বিভাগের আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ

×KSRM