রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে বিশ্বকে গুরুত্ব সহকারে কাজ করার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে তাদের মাতৃভূমি মিয়ানমারে শিগগিরই প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করতে বিশ্বনেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

- Advertisement -

তিনি বলেন, ‘এসব (রোহিঙ্গা) মানুষ যাতে দ্রুত মিয়ানমারে ফিরে যেতে পারে তা নিশ্চিত করতে বিশ্বকে অবশ্যই গুরুত্ব সহকারে কাজ করতে হবে। অন্যথায় সংকট থেকে তৈরি নিরাপত্তাঝুঁকি শুধু আমাদের সীমানায় সীমাবদ্ধ থাকবে না। আমরা ইতোমধ্যে এর লক্ষণ দেখতে পাচ্ছি।’

- Advertisement -google news follower

বৃহস্পতিবার (১১ নভেম্বর) বিকেলে প্যারিস পিস ফোরাম, ২০২১-এর চতুর্থ সংস্করণ ‘মাইন্ডিং দ্য গ্যাপ: ইমপ্রুভিং গ্লোবাল গভর্ন্যান্স আফটার কোভিড-১৯’-এ ভাষণ দেওয়ার সময় প্রধানমন্ত্রী এ আহ্বান জানান।

শেখ হাসিনা বলেন, ২০১৭ সালের আগস্টে মিয়ানমারের জোরপূর্বক বাস্তচ্যুত রোহিঙ্গাদের অস্থায়ীভাবে আশ্রয় দিয়ে একটি বড় আঞ্চলিক সংকট এড়াতে সাহায্য করেছে বাংলাদেশ। তাদের মধ্যে এক মিলিয়নেরও বেশি অনিশ্চিত ভবিষ্যতের মুখোমুখি হচ্ছে।

- Advertisement -islamibank

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৯৭ সালে বাংলাদেশ ঐতিহাসিক শান্তিচুক্তির মাধ্যমে পার্বত্য চট্টগ্রামে সশস্ত্র সংঘাতের অবসান ঘটিয়েছে। আমরা সব ধরনের সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতির প্রতিশ্রুতি দিয়েছি। আমরা এর বিস্তার নিয়ন্ত্রণে কমিউনিটি স্তরে বিনিয়োগ করে যাচ্ছি।

তিনি বলেন, বহু বছর ধরে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে সৈন্য ও পুলিশ দিয়ে অবদান রাখা দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ শীর্ষে রয়েছে এবং মধ্যপ্রাচ্য শান্তিপ্রক্রিয়ায় ফিলিস্তিনিদের সমর্থনের মাধ্যমে তার দেশ সেই অবস্থান ধরে রেখেছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোভিড-১৯ মহামারি আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য ও আর্থিক ব্যবস্থার গভীরে চলমান দুর্বলতাগুলো উন্মোচিত করেছে। এটি আবারও ধনী-গরিবের মধ্যকার ব্যবধান ঘুচিয়ে দিয়েছে। আমাদের অবশ্যই মনে রাখতে হবে এবং সেই ফাঁক বন্ধ করতে হবে।

শেখ হাসিনা বলেন, আন্তর্জাতিক সীমান্তে আটকে পড়া শত শত অভিবাসীর সমাধান খুঁজে বের করা প্রয়োজন। আমাদের অবশ্যই জাতি, বর্ণ এবং জাতিগত ভিত্তিতে বৈষম্যের অবসান ঘটাতে হবে। আমাদের নারী এবং মেয়েদের সব কাঁচের দেয়াল ভাঙার অনুমতি দিতে হবে। আমাদের সবার জন্য উপযুক্ত কাজের সুযোগ তৈরি করতে হবে। আমাদের কাজ এবং সম্পদের সাথে কথার মিল রাখতে হবে।

এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, একটি আইনভিত্তিক বহুপাক্ষিক পদ্ধতি থাকতে হবে যা অবশ্যই সকল মানুষের জন্য ন্যায্য এবং অর্থবহ হতে হবে।

তিনি উল্লেখ করেন, বাংলাদেশ তার প্রতিবেশীদের সঙ্গে স্থল ও সমুদ্রসীমা সমস্যা আলোচনা ও আইনসম্মত উপায়ে সমাধান করেছে। আমরা আমাদের ভূমিকে অন্য কোনো দেশের বিরুদ্ধে ক্ষতিকর কার্যকলাপের জন্য ব্যবহার করতে দেবো না।

শেখ হাসিনা বলেন, বিশ্ব এখনও অনেক দ্বন্দ্বে জর্জরিত এবং মহামারির পর আন্তর্জাতিক শান্তি কূটনীতিতে উত্থান প্রয়োজন। পুরোনো এবং নতুন দ্বন্দ্বের ন্যায্য এবং স্থায়ী সমাধান খোঁজার জন্য আমাদের একটি যৌথ দায়িত্ব রয়েছে।

জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য হিসেবে তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য ফ্রান্স অনন্যভাবে স্থান পেয়েছে।

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা যে পৃথিবীকে আমাদের বাড়ি বলি, উত্তর ও দক্ষিণের মধ্যে বিভক্ত থাকার দরকার নেই। এক গ্রহের নাগরিক হিসেবে, আমাদের সহানুভূতি, মানবতা ও বৈচিত্র্য উদযাপন করে আমাদের ঐক্যকে চ্যাম্পিয়ন করতে হবে।’

ফরাসি রাষ্ট্রপতি ইমানুয়েল ম্যাখোঁ এই ফোরামের আহ্বান করেন এবং ফোরামের সভাপতি প্যাসকেল ল্যামি অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন। নাইজেরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুহাম্মাদু বুহারি এবং মার্কি ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন।

জয়নিউজ/পিডি

KSRM
পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জয়নিউজবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন news@joynewsbd.com ঠিকানায়।

এই বিভাগের আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ

×KSRM