কুলির কাঁধে শতকোটি টাকা

প্রতিদিন শতকোটি টাকার পণ্য আনা-নেওয়া হয় তাদের কাঁধে। সকাল থেকে শুরু হওয়া তাদের এ ব্যস্ততা থাকে রাত পর্যন্ত। এভাবেই প্রতিদিন গড়ে তারা বহন করে ১৩৮ কোটি ২৪ লাখ টাকার পণ্য। নগরের পাইকারি বাণিজ্যকেন্দ্র খাতুনগঞ্জের কুলিদের নিত্যদিনের গল্প এটি।

- Advertisement -

সকাল থেকেই জমতে থাকে চট্টগ্রামের ব্যবসার প্রাণকেন্দ্র খাতুনগঞ্জ। ঘড়ির কাঁটা ৮টার ঘর স্পর্শ করার আগেই আসতে থাকে কুলির দল। দিনজুড়েই থাকে তাদের ব্যস্ততা। আর এ ব্যস্ততা যখন থামে তখন ঘড়িতে রাত ১০টা! দিনভর কাঁধে বস্তা বয়ে বেড়ালেও বাড়ি ফেরাটা খুব একটা সুখকর নয় তাদের। ২৫ কেজি, ৫০ কেজি ওজনের বস্তা বয়ে বেড়ানো কুলিদের পকেটে তখনো যে জমেনি পাঁচশ’ টাকা!

- Advertisement -google news follower
কুলির কাঁধে শতকোটি টাকা
একের পর এক বস্তা কাঁধে নিয়েও দিনশেষে হাসি থাকে না কুলিদের মুখে। ছবি: বাচ্চু বড়ুয়া

কুলিদের এমন কষ্টের কথা সবাই জানেন। খাতুনগঞ্জ লোডিং ও আনলোডিং শ্রমিক কল্যাণ সমিতির একাধিক নেতা জয়নিউজকে বলেন, অল্প মজুরিতে শ্রমিকের জীবনমান এখন অনেক নিম্ন পর্যায়ে। ছেলেদের লেখাপড়ার খরচ, পারিবারিক খরচ সবকিছু মিলিয়ে সবাই অনেক কষ্টে আছি।

সরেজমিন খোঁজ নিয়ে জানা যায়, একজন কুলি গড়ে দৈনিক ১২০ বস্তা পণ্য কাঁধে বয়ে বেড়ায়। পণ্যভর্তি প্রতিটি বস্তার মূল্য প্রায় দাঁড়ায় ৩ হাজার ৮৪০ টাকা। আর প্রতি বস্তায় কুলিদের মজুরি ৪ টাকা ১৬ পয়সা। একজন কুলি সারাদিনে ৪ লাখ ৬০ হাজার ৮০০ টাকার বস্তা কাঁধে বহন করে। আর দিন শেষে বাড়ি নিয়ে যায় ৪৯৯ টাকা।

- Advertisement -islamibank

খাতুনগঞ্জজুড়ে রয়েছে প্রায় তিন হাজার কুলি। তিন হাজার কুলি দিনে প্রায় ১৩৮ কোটি ২৪ লাখ টাকার পণ্য বহন করে। আড়ত মালিক ডালের বস্তা প্রতি মূল্য ২ হাজার টাকা পেলেও কুলিরা লোডিংয়ে ৭ টাকা, আনলোডিংয়ে ৩ টাকা পায়।

ভাগ্যের পরিবর্তন হয় না মসলার বস্তায়ও। যদিও পরিবর্তন হয় বস্তার মূল্যের। কারণ এখানে প্রতি বস্তা পণ্যের মূল্য প্রায় ৮ হাজার ২০০ টাকা। ২৫ কেজি দারচিনি কাটনের মূল্য ৪ হাজার ৯০০ টাকা মিললেও শ্রমিকের কপালে মিলে ৩ টাকা। আবার ১০ কেজি দারচিনি কাটনের দাম ২ হাজার ১০০ টাকা হলেও কুলিদের মজুরি মাত্র ২ টাকা!

খাতুনগঞ্জ লোডিং ও আনলোডিং শ্রমিক কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. রফিক মাঝি জয়নিউজকে বলেন, সারাদিনে আমরা চারশ‘-পাঁচশ‘ টাকা মজুরি পায়। আমাদের পরিশ্রমের তুলনায় এটি পর্যাপ্ত নয়। তাই দারিদ্র্যতা এখানকার কুলিদের নিত্যসঙ্গী। সবচেয়ে বেশি খারাপ লাগে যখন শত বস্তা পণ্য লোডিং-আনলোডিং করেও বাড়ি ফেরার সময় পকেটে জমে না পাঁচশ‘ টাকা। অথচ এই আমরাই প্রতিদিন কাঁধে বয়ে বেড়ায় শতকোটি টাকার পণ্য!

 

জয়নিউজ

KSRM
পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জয়নিউজবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন news@joynewsbd.com ঠিকানায়।

এই বিভাগের আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ

×KSRM