চট্টগ্রামে করোনার সংক্রমণ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমরা ভ্যাকসিন নেওয়ার পর উদাসীন হয়ে পড়েছি, সচেতনতাও কমে গেছে। আজ ২০০ জন শনাক্ত হয়েছেন শুধু চট্টগ্রাম জেলায়। এটি ক্রমশ বাড়ছে। তাই স্বাস্থ্যবিধি না মানলে আমরা কঠোর অবস্থানে যাবো।
চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ মমিনুর রহমান এসব কথা বলেন। সোমবার (২২ মার্চ) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে ডিসির কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে এক সভা হয়।
তিনি বলেন, নগরের তিনটি প্রবেশমুখে চেক পোস্ট বসানো হবে। সেখানে মানুষকে সচেতনতার পাশাপাশি মাস্ক ও হ্যান্ড স্যানিটাইজার বিতরণ করা হবে। আগামী দু’দিন আমাদের এ কার্যক্রম চলবে। প্রথমে সর্তক করবো। যদি কাজ না হয়, তাহলে আমরা কঠোর অবস্থানে যাবো। আমরা বিআরটিএ, পুলিশসহ সবার সহায়তায় আমাদের কার্যক্রম চালাবো।
জেলা প্রশাসক বলেন, সচেতনতা বাড়াতে নগরে মাইকিং করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। গাড়িতে গাদাগাদি করে বসা থেকে বিরত থাকতে হবে। মসজিদ ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে মাস্ক পরার পাশাপাশি সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। সবার কার্যক্রম সঠিকভাবে সম্পন্ন হলে আমরা আগের সুন্দর জীবনে ফিরে যাবো। আমাদের সঙ্গে বিভিন্ন এনজিও ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন কাজ করবে।
সভায় চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি বলেন, আমাদের এখন স্বাস্থ্যবিধি মানার কোনো বালাই নেই। ভ্যাকসিন নেওয়ার পর ১৫ দিন অন্তত ঘরে থাকতে হবে। সামাজিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানে জনসমাগম বিপুল পরিমাণে বৃদ্ধি পেয়েছে। সেখানে কোনো ধরণের স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে না। কারো কোনো সতর্ক অবস্থান নেই।
তিনি বলেন, মাস্ক ব্যবহার করলে ৯৫ শতাংশ সংক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে। তাই সবাইকে মাস্ক পরিধান করা বাধ্যতামূলক করতে হবে।
সিভিল সার্জন বলেন, হাসপাতালগুলোতে যাতে অতিরিক্ত বিল না নিতে পারে সেদিকে আমাদের আরও সতর্ক হতে হবে। আমাদের প্রস্তুতি অনেক ভালো, সবার সহযোগিতা কাম্য।
চট্টগ্রাম জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মহিউদ্দিন বলেন, করোনার সংক্রমণ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাই আমাদের আগের কার্যক্রমে ফিরে যেতে হবে। যেভাবে ২০২০ সালে শুরু করেছিলাম। রাজনৈতিক, ধর্মীয় সমাবেশ, কমিউনিটি সেন্টারগুলোর সামাজিক অনুষ্ঠানে তদারকি বাড়াতে হবে। জনগণকে শুধু সচেতনতার জন্য বললে হবে না তা প্রয়োগ করতে হবে।
তিনি বলেন, চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ ইতোমধ্যে নানামুখী কার্যক্রম শুরু করেছে। আমরা আরও কার্যক্রম চালাবো। আশা করি সবার সম্মিলিত প্রয়াসে আমরা করোনা মহামারী থেকে রক্ষা পাবো।
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের জোনাল মেডিকেল অফিসার (বন্দর) মোহাম্মাদ হাসান মুরাদ চৌধুরী বলেন, আমরা এখন ভ্যাকসিন নিয়ে কাজ করছি। ভ্যাকসিন নেওয়ার পর মানুষ এখন রিলাক্স পর্যায়ে চলে গেছে। কিন্ত এটা ঠিক না। আমাদের আরও অনেক বেশি সচেতন হতে হবে। বিয়ের অনুষ্ঠানে চলছে রমরমাভাবে। সেখান থেকে আমাদের সংক্রমণ বাড়ছে। এখন থেকে এসব রুখতে হবে।
তিনি বলেন, নগরের ৪১টি ওয়ার্ডে কাল সকাল থেকে করোনার সংক্রমণ রোধে সচেতনামূলক মাইকিং শুরু হবে। যদি রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পায় তাহলে আমাদের আইসোলেশন সেন্টার ফের চালু করা হবে।
সভায় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) এস এম জাকারিয়া, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সুমনী আক্তারসহ সরকারি বিভিন্ন সংস্থার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।