জাল এনআইডি দিয়ে ব্যাংক ঋণ, নেপথ্যে ইসির ২ কর্মী

রাজধানীতে ডিবির জালে ধরা পড়লেন আব্দুল্লাহ-আল-মামুন, তিনি জাল জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) দেখিয়ে দুটি ব্যাংক থেকে ২০ লাখ টাকা ঋণ নিয়েছেন। তবে এই ঋণ পরিশোধ করতেন না তিনি, আর ব্যাংকও খুঁজে পেত না তাকে। এ জন্যই জাল জাতীয় পরিচয়পত্র ব্যবহার করতেন মামুন।

- Advertisement -

এই জাল জাতীয় পরিচয়পত্র তিনি বানিয়েছেন প্রায় লাখ টাকা খরচ করে। তবে সেখানেই শেষ নয়, যারা বানিয়ে দিয়েছেন, তাদের এই শর্তও ছিল— ব্যাংক ঋণ পেলে তা থেকে ১০ শতাংশ দিতে হবে। অর্থাৎ ২০ লাখ টাকায় দিতে হচ্ছে ২ লাখ টাকা।

- Advertisement -google news follower

আল-মামুনসহ এ চক্রের পাঁচজনকে শনিবার (১২ সেপ্টেম্বর) রাতে ঢাকার মিরপুর এলাকা থেকে গ্রেপ্তারের পর এসব তথ্য জানতে পারে ডিবি। মিরপুরের চিড়িয়াখানা রোডের ডি-ব্লক এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন— আব্দুল্লাহ-আল-মামুন (৪১), সুমন পারভেজ (৪০), মো. মজিদ (৪২), সিদ্ধার্থ শংকর সূত্রধর (৩২) ও আনোয়ারুল ইসলাম (২৬)।

- Advertisement -islamibank

এদের মধ্যে সিদ্ধার্থ ও আনোয়ারুল আউটসোর্সিংয়ে নিয়োগ পেয়ে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) অধীনে খিলগাঁও ও গুলশান অফিসে ডাটা এন্ট্রি অপারেটর হিসেবে কাজ করতো।

তাদের কাছে থেকে দ্বৈত, জাল ও ডুপ্লিকেট ১২টি জাতীয় পরিচয়পত্র পাওয়া গেছে বলে ডিবি জানিয়েছে। অভিযানটি চালিয়েছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের লালবাগ বিভাগ।

লালবাগ বিভাগের গোয়েন্দা পুলিশের সহকারী কমিশনার মধুসূদন দাস বলেন, মামুন ইতোমধ্যে দুটি ব্যাংক থেকে নকল জাতীয় পরিচয়পত্র দিয়ে ২০ লাখ টাকা লোন নিয়েছে। রাতে আরেকটি নকল জাতীয় পরিচয়পত্র নেওয়ার জন্য এসেছিল, তখন গোয়েন্দা পুলিশের অভিযানে সে গ্রেপ্তার হয়।

জাল এনআইডি দিয়ে ব্যাংক ঋণ, নেপথ্যে ইসির ২ কর্মী | cb1b991eb91c2238d4290127de797823 5f5e23ec1c38f

এই চক্রের অপকর্ম তুলে ধরে ডিবির লালবাগ বিভাগের উপ-কমিশনার রাজিব আল মাসউদ বলেন, ব্যাংকের লোন নিয়ে কেউ ঋণ খেলাপি হলে তাদের সিআইবি খারাপ হয়, ফলে পুনরায় তারা ব্যাংকে লোনের জন্য আবেদন করতে পারে না। তাদের জন্য এরা জাল এনআইডি করিয়ে দেয়।

বিভিন্ন জনের কাছ থেকে কাজটি সুমন ও মজিদ নিয়ে তা সিদ্ধার্থ ও আনোয়ারুলকে দিয়ে করিয়ে দিতেন বলে জানান ডিবি কর্মকর্তারা।

তিনি বলেন, সুমন ও মজিদ জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরির জন্য প্রত্যেকের নিকট হতে ৮০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা গ্রহণ করে। পরবর্তী সময়ে লোন পাস হলে লোনের সমুদয় টাকার ১০ শতাংশ হারে দিতে হবে মর্মে চুক্তি করতো। চুক্তিতে একমত হলে তারা প্রথমে জাল জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরি করে দিত। পরে লোন পাশ হলে চুক্তি অনুযায়ী লোনের সম্পূর্ণ টাকার ১০% হারে নিয়ে নিত।

সিদ্ধার্থ ও আনোয়ারুলের প্রত্যেক প্রতিটি জাল জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরি করে ৩৫ হাজার থেকে ৪০ হাজার টাকা নিতেন বলে ডিবি জানতে পেরেছে।

উপ-কমিশনার রাজিব বলেন, সিদ্ধার্থ শংকর সূত্রধর ও আনোয়ারুল ইসলাম ‘ই-জোন’ কোম্পানির মাধ্যমে আউটসোর্সিংয়ে নিয়োগ পেয়ে ইসির অধীনে খিলগাঁও ও গুলশান অফিসে ডাটা এন্ট্রি অপারেটর হিসেবে কাজ করার কারণে তারা ইসি অফিসের সফটওয়্যার ব্যবহার করে সহজেই জাল জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরি করতে পারত। গত দুই বছর ধরে তারা এই জালিয়াতি চালিয়ে যাচ্ছিলেন বলে স্বীকার করেছেন।

ডিবি কর্মকর্তারা বলেন, মামুনের মতো অনেককে বিভিন্ন ব্যাংক থেকে জাল এনআইডি দিয়ে ঋণ তুলতে তারা সহযোগিতা করেছেন। তাদের বিরুদ্ধে মিরপুর থানায় মামলা হয়েছে।

জয়নিউজ/এসআই
KSRM
পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জয়নিউজবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন news@joynewsbd.com ঠিকানায়।

এই বিভাগের আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ

×KSRM