খাবারের রাজ্যের মানুষের ঘরেই এখন খাবার নেই!

`চা বিক্রি করে কোনোরকম জীবন চালাই। আগে সবাইরে রাইন্ধা-বাইড়া খাওয়াইসি, আর এখন আমরাই অনাহারে।’

- Advertisement -

এভাবেই করোনাকালে নিজের কষ্টের কথা বলছিলের বাচ্চু বাবুর্চি।

- Advertisement -google news follower

বাচ্চুর মতোই অস্তিত বাঁচানোর সংকটে আছে অজস্র বাবুর্চি। করোনাকালে এসব রন্ধনশিল্পীর মনে ভর করেছে অনিশ্চয়তার কালো মেঘ। কখন কাটবে জীবনের সেই অন্ধকার, জানা নেই কারো। এতদিন যারা সুস্বাদু খাবারে অজস্র মানুষের রসনা বিলাস করেছেন আজ তাদের ঘরই খাবারশূন্য!

জানা গেছে, সামাজিক অনুষ্ঠান বন্ধ হওয়ার পর থেকে বাবুর্চিসহ এ পেশায় উপর নির্ভরশীল ২০ হাজার মানুষের জীবন থমকে গেছে। জীবনের ব্যয় মিটিয়ে তাদের সঞ্চয়ও তেমন নেই। কাজ না থাকায় ঘাড়ের উপর চেপেছে ঋণের বাড়তি বোঝা। তাই তাদের অনেকেরই এখন দিন কাটছে অর্ধাহারে-অনাহারে।

- Advertisement -islamibank

ইতোমধ্যে কেউ কেউ পরিবার নিয়ে গ্রামের বাড়ি চলে গেছেন। আবার কেউ কেউ বনে গেছেন সবজি কিংবা ফল বিক্রেতা!

এমনই একজন সেলিম বাবুর্চি। নগরের গোলাপ সিং লেইনে পরিবার নিয়ে থাকেন। কাজ না থাকায় এখন হয়ে গেছেন কাঁঠাল বিক্রেতা। প্রতিদিন সকাল-সন্ধ্যা নিজ এলাকার গলির মুখে তিনি কাঁঠাল বিক্রি করেন।

নগরের কমিউনিট সেন্টারে এখন বাহারি বাতি জ্বলে না। ঘরোয়া অনুষ্ঠানগুলোও বন্ধ। তাই বাবুর্চি সাহাবউদ্দীন এখন আলু-পেঁয়াজ ফেরি করেন!

নগরের কাজীর দেউরি বাবুর্চি সমিতির সভাপতি আহমদ উল্লাহ জয়নিউজকে বলেন, সুস্বাদু খাবারের কারিগর আমরা। বিয়ে-মেজবানসহ বড়-ছোট সব অনুষ্ঠানে সুস্বাদু রান্না করি। কিন্তু  করোনার কারণে এখন আমাদের ঘরেই খাবার সংকট। অনেকেই ঘর ছেড়ে দিয়েছেন। আমি নিজেই বাসা ছেড়ে আকবরশাহের ছিন্নমূল এলাকায় চলে এসেছি।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন,  আমাদের সমিতিতে ৪শ’ বাবুর্চি আছে। তাদের সঙ্গে বিভিন্ন ক্যাটাগরির হেলপারসহ ২০ হাজার মানুষ এ পেশার উপর নির্ভরশীল। তারা আজ মানবেতর জীবন যাপন করছেন। করোনার কারণে আজ সবাই বেকার। সরকার বিভিন্ন পেশার মানুষকে সহযোগিতা করছেন। কিন্তু আমাদের কেউ সহযোগিতা করেনি।

কাজীর দেউরি বাবুর্চি সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. শাহাদাত হোসেন জয়নিউজকে বলেন,  সীমিত আকারে দোকান পাট-অফিস খুললেও কমিউনিটি সেন্টার বন্ধ। ঘরোয়া কোনো সামাজিক আয়োজনও নেই। তাই চার মাস ধরে বন্ধ বাবুর্চিদের কাজ। সরকারের কাছে অনুরোধ আমাদের সহযোগিতা করার। আমরা জেলা প্রশাসন বরাবর সাহায্যের জন্য চিঠি দিয়েছি। এখন পর্যন্ত কোনো সাড়া পাইনি।

জয়নিউজ/পিডি
KSRM
পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জয়নিউজবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন news@joynewsbd.com ঠিকানায়।

এই বিভাগের আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ

×KSRM