পাকিস্তানকে ৩৭ রানে হারিয়ে এশিয়া কাপের ফাইনালে উঠল বাংলাদেশ। মুশফিক-মুস্তাফিজদের ব্যাটিং বোলিং নৈপুণ্যে একরকম পাত্তাই পেল না পাকিস্তান।
২৬ সেপ্টেম্বর (বুধবার) টস জিতে ম্যাচের শুরুতেই সেই আগের ম্যাচগুলিরই যেন পুনরাবৃত্তি। জুনায়েদ খান আর শাহিন আফ্রিদির পেস বোলিংয়ের তোপে ১২ রানেই ৩ ইউকেট হারায় বাংলাদেশ। এরপর ত্রাতা হয়ে ব্যাট হাতে ক্রিজে এলেন মুশফিকুর রহিম। সাথে পেলেন মিঠুনকে।
চতুর্থ উইকেটে দুজনে মিলে গড়লেন ১৪৪ রানের জুটি। দূর হল শংকা, আশা পেল ফাইট স্কোরের। যদিও মুশফিকের ৯৯ রানের বিদায়ে বাংলাদেশ শিবিরে নেমে এসেছিল রাজ্যের হতাশা। প্রথম কোন বাংলাদেশি হিসেবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের যেকোন ফরম্যাটে ৯৯ রানে আউট হওয়া ব্যাটসম্যান যে মুশফিকই প্রথম! মুশফিকের বিদায়ের পর আর খুব বেশি দূর আগাতে পারেনি বাংলাদেশ। ৪৭ রানে শেষ ৫ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশের সংগ্রহ দাঁড়ালো ২৩৯।
রান খুব বেশি নয়, তবে লড়াই করার জন্য যথেষ্ট! মুস্তাফিজ-মিরাজে বোলিং শুরু করে কিছুটা মচকে দিলেন মাশরাফি। সাফল্য আসতেও দেরি হল না। মুস্তাফিজের জোড়া আঘাত আর মিরাজের এক উইকেট এবং নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে কোণঠাসা পাকিস্তানের হাল ধরলেন ইমাম উল হক আর শোয়েব মালিক। বিপদজনক হয়ে উঠা মালিক কে ফেরালো রুবেল। তবে বলা যায় রুবেলকে এই উইকেট উপহার দিয়েছেন ক্যাপ্টেন মাশরাফি! নিজেকে শুণ্যে ভাসিয়ে বাজপাখির মত সেকেন্ডেরও কম সময়ে তালুবন্ধি করা ক্যাচ ক্রিকেট প্রেমীদের মনে থাকবে আজীবন।
এরপর সোম্য দ্রুত সাদাব খানকে শর্টপিছে বিদায় করলে আবার চাপে পড়ে পাকিস্তান। এইবার আসিফ আলীকে নিয়ে ইমাম উল হকের লড়াই শুরু। কে জানে, কারো কারো মনে হয়তো তখন মুলতানের সেই ইনজামকে মনে পড়ছিল কিনা! ইমাম যে ইনজামের ভাতিজা হন।
তবে না, পারলেন না আসিফ আলী। মিরাজের ঘূর্ণিতে পরাস্ত হয়ে স্টাম্পড আউট আসিফ। আসিফের দেখানো পথেই হাটলেন ইমাম। পথের কাঁটা হয়ে দাঁড়ানো ইমাম পারলেন না দুবাইয়ে মুলতান ফিরিয়ে আনতে। এইবার রিয়াদের ঘূর্ণিতে পরাস্ত ইমামের উইকেট ভেঙ্গে দিতে দেরি করেনি লিটন।
এরপর জয়টা শুধুই সময়ের ব্যাপার ছিল। মুস্তাফিজের আরো দুই উইকেট পাকিস্তান যেন তখন পরাজয় মেনেই নিল। এরপর তারা অল আউট না হয়ে ৫০ ওভার ব্যাটিং করাটাকেই যেন শ্রেয় মনে করল। শেষ পর্যন্ত ৯ উইকেট হারিয়ে তাদের সংগ্রহ দাঁড়াল ২০২। বাংলাদেশ জিতল ৩৭ রানে।
সেই সাথে শেষ চার এশিয়া কাপের তিনবারই ফাইনালে উঠল বাংলাদেশ। টুর্নামেন্টের ট্রফি অধরা থেকে যাওয়ার অসমাপ্ত গল্পটার বৃত্ত পূরণের সুযোগ আবার পেল মাশরাফির বাংলাদেশ।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বাংলাদেশ: ৪৮.৫ ওভারে ২৩৯ (লিটন ৬, শান্ত ০, মুমিনুল ৫, মুশফিক ৯৯, মিঠুন ৬০ ইমরুল ৯, মাহমুদউল্লাহ ২৫, মিরাজ ১২, মাশরাফি ১৩, রুবেল ১, মুস্তাফিজ ১*; জুনাইদ ৪/১৯, আফ্রিদি ২/৪৭, হাসান ২/৬০, নওয়াজ ০/৩৯, মালিক ০/১৪, শাদাব ১/৫২)।
পাকিস্তান: ৫০ ওভারে ২০২ (ফখর ১, ইমাম ৮৩, বাবর ১, সরফরাজ ১০, মালিক ৩০, শাদাব ৪, আসিফ ৩১, নওয়াজ ৮, হাসান ৮, ; মিরাজ ২/২৮, মুস্তাফিজ ৪/৪৩, মাশরাফি ০/৩৩, রুবেল ১/৩৮, মাহমুদউল্লাহ ১/৩৮, সৌম্য ১/১৯)।
ফল: বাংলাদেশ ৩৭ রানে জয়ী
ম্যান অব দা ম্যাচ: মুশফিকুর রহিম