রামুতে কর্মহীনদের পাশে ‘সেনা বাজার’

রামুতে নিত্যপণের বাজার নিয়ে কর্মহীন অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ১০ পদাতিক ডিভিশন।

- Advertisement -

বুধবার (৩ জুন) সকাল সাড়ে ৯টা থেকে রামু খিজারী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রী সহ কাঁচা বাজারের চাহিদা পূরণ করতে ‘সেনা বাজার’ আয়োজন করে সেনাবাহিনী।

- Advertisement -google news follower

কক্সবাজারে করোনাভাইরাস ও ঘূর্ণিঝড় আম্পানের প্রভাবে কর্মহীন, অসহায় ও ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তায় তৃতীয় বারের মতো সেনাবাজারের আয়োজন করেছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ১০ পদাতিক ডিভিশন।

রামুতে কর্মহীনদের পাশে 'সেনা বাজার' | 101302053 2587627924823268 4570357884600188928 n

- Advertisement -islamibank

ইতোপূর্বে ঈদের আগে ও পরে ২২ ও ৩০ মে কক্সবাজার শেখ কামাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রী যেমন- চাল, আটা, তৈল, লবণ, ডাল এবং বিভিন্ন ধরনের সবজি সম্বলিত সেনাবাজারের আয়োজন করা হয়।

গ্রামের প্রান্তিক কৃষকদের হতে উপযুক্ত দামে সবজি সংগ্রহ করে বাজারে নিয়ে অসহায় ও দুস্থ ৫শ’ পরিবারের মধ্যে বিনামূল্যে এ বাজার সুবিধা দেওয়া হয়।

২ পদাতিক ব্রিগেডের তত্ত্বাবধানে আয়োজিত বুধবার সকালে রামুতে সেনা বাজার কার্যক্রম পরিদর্শন করেন রামু সেনানিবাসের ২ পদাতিক ব্রিগেড কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আলিমুল আলিম, ১০ পদাতিক ডিভিশনের এ্যাডমিন কর্ণেল ফারুক, ২৪ বীরের অধিনায়ক লে. কর্ণেল শফিকুল ইসলাম সহ রামু সেনানিবাসের ঊর্ধ্বতন সেনা কর্মকর্তারা।

রামুতে কর্মহীনদের পাশে 'সেনা বাজার' | 101532226 384997495780491 3190187761986437120 n

সেনা কর্মকর্তারা জানান, প্রধানমন্ত্রীর সার্বিক দিকনির্দেশনা এবং সেনাপ্রধানের বলিষ্ঠ নেতৃত্বে করোনার প্রভাবে ও সাম্প্রতিক ঘূর্ণিঝড় আম্পানের প্রকোপের কারণে অসহায় দুস্থ ও কর্মহীন মানুষের কল্যাণে সমগ্র বাংলাদেশ জুড়েই সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে নানাবিধ কর্মকাণ্ড পরিচালিত হচ্ছে। ওই ধারাবাহিকতায় রামুতে সেনাবাজারের আয়োজন করা হয়েছে।

রামু সেনানিবাস সূত্র জানায়, কক্সবাজারের রামুর ফতেখাঁরকুল ইউনিয়নের জুলেখারপাড়া, খিজারীপাড়া, সিপাহীপাড়া, মন্ডলপাড়া, মেরংলোয়া, জোয়ারিয়ানালা ও রশিদনগর ইউনিয়ন এবং কক্সবাজার সদর উপজেলার খরুলিয়া ও ঈদগাহ এলাকা হতে সেনাসদস্যরা বৌদ্ধ ও হিন্দুসহ সকল সম্প্রদায়ের হত দরিদ্র মানুষদের তালিকা তৈরি করে, বিশেষ টোকেন দেওয়া হয়। টোকেনপ্রাপ্ত মানুষগুলো রামু সেনাবাজারে বিনামূল্যে নিত্যপণ্য সামগ্রী সংগ্রহ করার সুয়োগ পেয়েছে। পর্যায়ক্রমে জেলার অন্যান্য এলাকাতেও এ ধরনের কর্মকাণ্ড পরিচালনা করা হবে বলে জানান সেনাসদস্যরা।

রামুতে কর্মহীনদের পাশে 'সেনা বাজার' | 101622345 271235587560740 5407122680430198784 n

বুধবার সকালে রামুতে সেনাবাজার পরিদর্শনে দেখা যায়, সেনা বাজারের প্রবেশ পথে জীবাণুনাশক বুথ ও হাত ধোয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। সেনা মেডিকেল টিমের শারীরিক তাপমাত্রা পরীক্ষা ও মাক্স দেওয়ার পর টোকেনপ্রাপ্ত দরিদ্র মানুষগুলোকে সেনা বাজার থেকে প্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রী ও কাঁচা বাজার সংগ্রহ করে। সেনা সদস্যরা
বাজারে আগতদের সার্বিক সহায়তা দিচ্ছেন।

এদিকে মানবিক সহায়তা পেয়ে উচ্ছ্বসিত হয়ে সেনাবাহিনীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন, রামুর জোয়ারিয়ানালা ইউনিয়নের সিকদার পাড়া এলাকার ছৈয়দা খাতুন, ফতেখাঁরকুল ইউনিয়নের মধ্যম মেরংলোয়া গ্রামের ছমুদা খাতুন, রিকশাচালক আবদুস ছালাম, সিপাহীরপাড়ার প্রতিবন্ধী বরিন্দ্র নাথ, রশিদনগর ইউনিয়নের জেটিরাস্তা এলাকার শেফালী শর্মা, কুসুম বালা, কক্সবাজার সদর উপজেলার আবদুল মালেক।

রামুতে কর্মহীনদের পাশে 'সেনা বাজার' | 102409477 621916935083713 3550937505584906240 n

আবেগপ্রবণ হয়ে তারা জয়নিউজকে বলেন, করোনার এই দূরাবস্থায় কর্মহীন হয়ে দিনযাপন করতে হচ্ছে। কাজ না থাকায় উপার্জন নেই। তাই হাতে টাকা-পয়সাও নেই। এই অবস্থায় সেনাবাহিনী আমাদের মতো অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে।
সেনা বাজার থেকে চাল, ডাল, তেল, পেঁয়াজ, আটা ও তরিতরকারিসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র পেয়ে আমরা অত্যন্ত আনন্দিত। এর আগে সেনাবাহিনী কর্তৃক এ ধরনের বাজার পরিচালনার কথা শুনেছি। আজ নিজে বাজার হতে সুবিধা গ্রহণ করতে পেরেছি। সেনাবাহিনীর কাছে আমরা কৃতজ্ঞ।

সেনা কর্মকর্তারা জয়নিউজকে বলেন, কক্সবাজার জেলা ও চট্টগ্রাম জেলার চারটি উপজেলায় ২৪ মার্চ থেকেই মাঠে আছে সেনাবাহিনী। টহল কার্যক্রমসহ করোনার ভয়াবহতার ব্যাপারে মানুষকে সচেতন করার পাশাপাশি হ্যান্ড স্যানিটাইজার এবং মাস্ক বিতরণ করছেন তারা। পথচারীদেরকে ফুল দিয়ে বুঝিয়ে শুনিয়ে তাদের ঘরে ফেরাতে সচেষ্ট হয়েছেন। এছাড়া নিজেদের রেশন বাঁচিয়ে বাড়ি বাড়ি গিয়ে চাল, ডাল, তেল, আলু, পেঁয়াজ ও সাবানসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় বিভিন্ন সামগ্রী কর্মহীন অসহায় পরিবারের মানুষগুলোর হাতে তুলে দিচ্ছেন। সেনা সদস্যরা কক্সবাজার জেলার প্রবেশদ্বার চকরিয়ায় এবং রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্পের প্রবেশদ্বারে একাধিক ডিজইনফেকশন বুথের মাধ্যমে জরুরি সরবরাহ কাজে নিয়োজিত যানবাহন সমূহকে ও মানুষজনদের জীবাণুমুক্ত করছেন।

তারা সর্বশেষ সুপার সাইক্লোন ‘ঘূর্ণিঝড় আম্পান’ উপদ্রুত এলাকাগুলোতে ক্ষতিগ্রস্ত ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট ও বাঁধ পুনঃনির্মাণ এবং দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোতে জনসাধারণদেরকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সহায়তা ও ত্রাণ দিয়ে বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তা অব্যাহত রেখেছেন।

জয়নিউজ/খালেদ/বিআর
KSRM
পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জয়নিউজবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন news@joynewsbd.com ঠিকানায়।

এই বিভাগের আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ

×KSRM