কক্সবাজারে অসহায়দের জন্য বিনামূল্যে সেনাবাজার

কক্সবাজারে কর্মহীন অসহায় মানুষের জন্য বিনামূল্যে সেনাবাজার ও মেডিকেল ক্যাম্পেইনের আয়োজন করেছে রামু সেনা নিবাসের ১০ পদাতিক ডিভিশন।

- Advertisement -

শুক্রবার (২২ মে) সকালে কক্সবাজার ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে নিত্যপণ্যের দ্রব্যসামগ্রী বিনামূল্যে ক্রেতাদের হাতে তুলে দেয়া হয়।

- Advertisement -google news follower

১০ পদাতিক ডিভিশনের পরিচালনায় এক হাজার পরিবারকে বিনামূল্যে চাল, ডাল, লবণ, তেল ও আটাসহ বিভিন্নধরনের সবজি সরবরাহ করা হয়। পাশাপাশি ১শ’ জন মানুষের বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা ও ওষুধ বিতরণ করেন সেনা চিকিৎসকরা।

কক্সবাজারে অসহায়দের জন্য বিনামূল্যে সেনাবাজার
সামাজিক দূরত্ব মেনে বাজার করছেন মহিলারা

ঘূর্ণিঝড় আম্পান পরবর্তী সময়ে পবিত্র ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে কক্সবাজারে দুর্গত ও করোনাভাইরাসের কারণে কর্মহীন অসহায় মানুষদের নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রী এবং কাঁচা বাজারের চাহিদা পূরণ করতে সেনা বাজার ও ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পেইনের আয়োজন করা হয়েছে বলে জানান, সেনাবাহিনীর ১০ পদাতিক ডিভিশন কর্মকর্তারা।

- Advertisement -islamibank

সেনানিবাস সূত্র জানায়, লকডাউন ও সাম্প্রতিক ঘূর্ণিঝড় আম্পানের ঝড়ো হাওয়া ও বৃষ্টিপাতের কারণে এ অঞ্চলের যে সকল প্রান্তিক কৃষকরা তাদের উৎপাদিত সবজি বাজারে বিক্রি করতে পারছেনা, সেনাসদস্যরা সরাসরি সেসব কৃষকদের নিকট হতে সবজি ক্রয় করে এই বাজারে নিয়ে আসেন। ফলে অসহায় মানুষদের পাশাপাশি কৃষকরাও তাদের সবজির ন্যায্য মূল্য পেয়ে উপকৃত হয়েছেন। এছাড়াও ঈদের ঠিক আগমুহূর্তে এ ধরনের মহতি কাজের উদ্যোগ অসহায় মানুষের জন্য যেমন ঈদ বোনাসের মতো তেমনি কৃষকদের জন্যও এটি ঈদের উপহার।

সরেজমিনে দেখা যায়, শুক্রবার সকালে কক্সবাজার শহরে অবস্থিত ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সেনাবাহিনীর সার্বিক ব্যবস্থাপনায় বাজারের প্রবেশ পথে ছিল জীবাণুনাশক বুথ ও হাত ধোয়ার ব্যবস্থা। প্রকৃত অভাবীদের প্রয়োজনীয় বাজার কোনোপ্রকার ঝামেলা ছাড়াই সম্পূর্ণ বিনামূল্যে সংগ্রহ করা হচ্ছে।

বাজার করতে আসা কলাতলীর এক হোটেল কর্মচারী লিয়াকত জয়নিউজকে বলেন, করোনার কারণে সবধরনের কাজ বন্ধ থাকায় নিজের জমানো যে অর্থ ছিল তা অনেক আগেই শেষ, বর্তমানে ধার দেনা করে সংসার চলছে। সেনা বাজার থেকে চাল, আলু, বরবটি, কচুর লতি, কাঁচামরিচসহ নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র পেয়ে আমি অত্যন্ত আনন্দিত।

তিনি আরও বলেন, কানের ব্যথায় গত এক সপ্তাহ ধরে তিনি কষ্ট পাচ্ছিলেন, আজ এখানে সেনা মেডিকেল ক্যাম্পেইনে বিশেষজ্ঞ ডাক্তার দেখিয়ে ফ্রি ওষুধও পেয়েছেন। ঈদের আগে সেনাবাহিনীর এ ধরনের কার্যক্রম আমাদের মতো অসহায়দের ঈদের আনন্দকে উপভোগ করার সুযোগ করে দিয়েছে।

কক্সবাজার সৈকতের ফটোগ্রাফার হাসান আলী জয়নিউজকে বলেন, ৩৫ হাজার টাকায় কেনা ক্যানন ব্র্যান্ডের সেমি ডিএসএলআর ক্যামেরা তার ৫ জনের পরিবারের আয়ের একমাত্র মাধ্যম। পর্যটন নগরী কক্সবাজারে সারাবছরই টুরিস্টের ভিড় লেগেই থাকে। ঈদের সময় টুরিস্টের আনাগোনা আরো বেড়ে যায়। বর্তমানে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে কোনো টুরিস্ট প্রায় তিন মাস ধরে কক্সবাজারে না আসায় তার মত স্বল্পআয়ের মানুষদের পথে বসার উপক্রম হয়েছে। ঈদের সময় সেনাবাহিনীর উদ্যোগে আয়োজিত এই সেনা বাজার তার কাছে স্বপ্নের মতো মনে হচ্ছে। পরিবারের সবাইকে নিয়ে এখন সেও ঈদের উৎসবে শামিল হতে পারবে বলে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন তিনি।

সেনাসদস্যরা জয়নিউজকে বলেন, কক্সবাজার জেলা ও চট্টগ্রাম জেলার চারটি উপজেলায় ২৪ মার্চ থেকেই মাঠে আছে সেনাবাহিনী। টহল কার্যক্রমসহ করোনার ভয়াবহতার ব্যাপারে মানুষকে সচেতন করার পাশাপাশি হ্যান্ড স্যানিটাইজার এবং মাস্ক বিতরণ করছেন তারা। এছাড়া নিজেদের রেশন বাঁচিয়ে বাড়ি বাড়ি গিয়ে নিত্যপ্রয়োজনীয় বিভিন্ন সামগ্রী কর্মহীন অসহায় পরিবারের মানুষগুলোর হাতে তুলে দিচ্ছেন। বর্তমানে তারা ঘূর্ণিঝড় আম্পান উপদ্রুত এলাকাগুলোতে ক্ষতিগ্রস্ত ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট ও বাঁধ পুনঃনির্মাণে স্থানীয়দের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করছেন। পাশাপাশি দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোতে জনসাধারণদেরকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সহায়তা দেওয়ার জন্য সেনাবাহিনীর ১০টি মেডিকেল টিম বৃহস্পতিবার থেকে একযোগে কাজ করছে।

জয়নিউজ/খালেদ/বিআর
KSRM
পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জয়নিউজবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন news@joynewsbd.com ঠিকানায়।

এই বিভাগের আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ

×KSRM