করোনা মোকাবিলায় চট্টগ্রামের আ জ ম নাছির

করোনা- এক প্রাণঘাতি ভাইরাসের নাম। পারমাণবিক যুদ্ধ না হলেও এই ভাইরাস বিশ্বকে তছনছ করে দিয়েছে। এখন পর্যন্ত এই ভাইরাস বিশ্বের ১ লাখ ৬৫ হাজার ১৫৪ জন মানুষের প্রাণ কেড়েছে। বৈশ্বিক মহামারির এই সমস্যায় বিশ্ব যেখানে কোণঠাসা, সেখানে বাংলাদেশও এর ব্যতিক্রম নয়।

- Advertisement -

আইইডিসিআর বলছে, এখন পর্যন্ত (১৯ এপ্রিল) বাংলাদেশে করোনায় আক্রান্ত দুই হাজার ৪৫৬ জন। এতে মৃত্যু হয়েছে ৯১ জন। আর চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন বলছে, চট্টগ্রামে এখন পর্যন্ত করোনা শনাক্ত হয়েছে ৩৯ জনের। মৃত্যু হয়েছে ৫ জনের।

- Advertisement -google news follower

চট্টগ্রামে করোনায় মোকাবিলায় শুরু থেকে মাঠে-ঘাটে একজন ব্যক্তি ‘যুদ্ধ’ করে চলেছেন। করোনা পরিস্থিতিতে শুরু থেকে তাকে ছাড়া চট্টগ্রাম শহরের অলিগলিতে আর কোনো জনপ্রতিনিধিকে দেখা যায়নি। বাকিরা যখন হোম কোয়ারেন্টাইনে ছিলেন, তখন শহরের মানুষদের সেবা করায় ব্যস্ত ছিলেন তিনি। এই মানুষটি আর কেউ নন, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন।

সাধারণ ছুটি ঘোষণার পর মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন ছাড়া শহরের অলিগলিতে আর কোনো জনপ্রতিনিধিকে দেখা যায়নি। যখন এ নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় সমালোচনা শুরু হয়, তখন কিছু জনপ্রতিনিধি কাজ করা শুরু করলেও এখনো বেশিরভাগ সংসদ সদস্য হোম কোয়ারেন্টাইনে আছেন বলে সাধারণ মানুষের অভিযোগ।

- Advertisement -islamibank

চসিক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন করোনা মোকাবিলায় প্রথম থেকে নগরবাসীর জন্য যেসব কাজ করেছেন, তার মধ্যে কিছু কর্মকাণ্ড হলো-

নগরে সাবান বিতরণ
করোনা প্রকোপ শুরু হওয়ার আগেই পুরো চট্টগ্রামজুড়ে সাবান বিতরণ করেন মেয়র নাছির। নগরের ৪১টি ওয়ার্ডে জনগণকে কাউন্সিলরদের মাধ্যমে সাবান বিতরণ করেন।

করোনা মোকাবিলায় চট্টগ্রামের আ জ ম নাছির

মাইকিং করে সচেতনতা
চট্টগ্রামের জনপ্রতিনিধিরা যখন চট্টগ্রাম থেকে দূরে গিয়ে হোম কোয়ারেন্টাইনে ছিলেন, তখন মেয়র নাছির পুরো নগরজুড়ে করেছেন মাইকিং। নিজে মাইকিং করার একটি কারণ ছিল, যেন মানুষ ঘরে থাকার জন্য সচেতন হয়। এছাড়া সিটি করপোরেশনের ১৫ থেকে ২০টি গাড়ি দিয়ে করা হয় প্রচার-প্রচারণা।

স্যানিটাইজার বিতরণ
৪১টি ওয়ার্ডে জীবাণুনাশক স্প্রেকরণ এবং চুয়েট ও চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ছাত্রদের যৌথ উদ্যোগে তৈরিকৃত অটোমেটেড হ্যান্ড স্যানিটাইজার উদ্বোধন ও স্থাপন।

ব্যক্তিগত উদ্যোগে নিন্ম ও মধ্যবিত্তদের ত্রাণ বিতরণ
করোনা পরিস্থিতিতে সবচেয়ে বেশি কষ্টে আছেন নিম্নআয়ের মানুষেরা। তারা কর্মহীন থাকায় পরিবার চালাতে কষ্ট সাধ্য হয়ে পড়ছে। অন্যদিকে মধ্যবিত্তরাও আছেন কষ্টে। তারা না পারছেন কাউকে বলতে, আবার না পারছেন না খেয়ে থাকতে। সব বিবেচনা করে তাদের পাশে দাঁড়িয়েছে সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন। ব্যক্তিগত তহবিল থেকে চাল, ডাল, আলু, তেল ও লবণ পৌঁছে দিচ্ছেন নিন্মআয়ের মানুষের ঘরে ঘরে। ব্যক্তিগত উদ্যোগে প্রায় ১২ হাজার পরিবারের ঘরে পৌঁছে দিয়েছেন তার ভালোবাসার উপহার।

সরকারি ত্রাণ সুষ্ঠুভাবে বন্টন
করোনা পরিস্থিতে দেশের সববিষয় মনিটরিং করছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বারবার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, সরকারি ত্রাণ যেন সাধারণ মানুষরা পায়। এরই অংশ হিসেবে সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন সরকার থেকে প্রাপ্ত ত্রাণ ওয়ার্ড-কাউন্সিলরদের মাধ্যমে ঘরে ঘরে পৌঁছে দিয়েছেন।

সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন

শহরজুড়ে জীবাণুনাশক ছিটানো
পরিচ্ছন্নতা কর্মী ও সেবকদের সাহস দিতে মেয়র নাছির নিজেই চট্টগ্রামের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে জীবাণুনাশক পানি ছিটিয়েছেন। এছাড়া পরিচ্ছন্ন কর্মীদের মাধ্যমে নগরের ৪১টি ওয়ার্ডের অলিগলিতে জীবাণুনাশক ছিটানো হয়।

করোনা মোকাবিলায় চট্টগ্রামের আ জ ম নাছির

ম্যাসেজ দিলেই খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে যাচ্ছে ঘরে
শুধুমাত্র ফেসবুক পেইজে নাম-ঠিকানা ও মোবাইল নাম্বারসহ মেসেজ করলে খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে যাচ্ছে নির্দিষ্ট স্থানে। মধ্যবিত্ত পরিবারের জন্য ব্যতিক্রমী উদ্যোগটি নেন তিনি। মেয়রের ভেরিফাইড ফেসবুক পেইজে (https://www.facebook.com/gsajmnasiruddin) যাবতীয় ডিটেইলস দিয়ে মেসেজ করলে নগরের ৪১টি ওয়ার্ডে বসবাসরত মধ্যবিত্ত পরিবারের কাছে পৌঁছে যাচ্ছে খাবার।

মুক্তিযোদ্ধাদের পাশে মেয়র
ব্যক্তিগত উদ্যোগে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ মহানগর ইউনিট কমান্ডের মাধ্যমে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের অত্যাবশ্যকীয় খাদ্যসামগ্রী উপহার দিয়েছেন মেয়র নাছির। এছাড়া বীর মুক্তিযোদ্ধাদের গোপনে সবরকম সহযোগিতা করা হবেও জানান তিনি।

করোনাযোদ্ধাদের অবজ্ঞা করলে ব্যবস্থা
কোনো কোনো বাড়িওয়ালা করোনাযোদ্ধা অনেক নার্স, চিকিৎসকসহ অনেককে বাড়ি ছাড়ার নোটিশ দিয়েছেন। যেসব বাড়িওয়ালা এ ধরণের কাজ করছেন তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন মেয়র নাছির।

চিকিৎসকদের পিপিই প্রদান
মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের ব্যক্তিগত উদ্যোগে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজসহ বিভিন্ন হাসপাতালের চিকিৎসকদেরকে পিপিই দেওয়া হয়েছে। এছাড়া এস আলম গ্রুপের মাধ্যমেও কয়েকটি হাসপাতালকে দেওয়া হয়েছে বিভিন্ন সরঞ্জাম। চসিকের মেডিকেলগুলো তৈরি রাখা হয়েছে যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায়।

করোনা মোকাবিলায় চট্টগ্রামের আ জ ম নাছির

মেয়রের আহ্বানে চট্টগ্রামে হচ্ছে করোনার পূর্ণাঙ্গ হাসপাতাল
মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের আহ্বানে করোনা রোগীদের জন্য উন্নতমানের হাসপাতাল হচ্ছে চট্টগ্রামে। প্রাইভেট ক্লিনিক অ্যাসোসিয়েশনের অর্থায়নে খুলশীর হলি ক্রিসেন্ট হাসপাতালকে করোনা রোগীদের জন্য নতুনভাবে তৈরি করা হচ্ছে। এই হাসাপাতাল পরিচালনা কমিটির আহ্বায়কও তিনি।

শুধু এসব কাজ নয়, মেয়র নাছির দিনরাত শহরের এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্ত ঘুরে সাধারণ মানুষ থেকে মধ্যবিত্ত মানুষদের অবস্থা দেখেছেন। কখনো ত্রাণ দিয়ে, কখনো মনোবল দিয়ে এই বিপর্যয়ে মানুষের পাশে থাকছেন।

এছাড়া করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত নগরবাসীর জন্য সরকারি ত্রাণের পাশপাশি ব্যক্তিগত উদ্যোগে সর্বোচ্চ করে যাবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন মেয়র নাছির।

জয়নিউজ/এসআই
KSRM
পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জয়নিউজবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন news@joynewsbd.com ঠিকানায়।

এই বিভাগের আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ

×KSRM