এবার আঁরা ন খাই মইরগম

আগে তো খাঁচা বানাইতাম। পত্যদিন বেইচতাম। এহন কেউ আর খাঁচা ন কিনের। আঁরারে কেউ কিছু ন দের। এবার আঁরা ন খাই মইরগম। এভাবে নিজেদের বর্তমান দুরাবস্থার কথা জানালেন লোহাগাড়ার আমিরাবাদ ইউনিয়নের ছাটিয়াল পাড়ার খাঁচা বিক্রেতা রেনু আক্তার।

- Advertisement -

শনিবার (১৮ এপ্রিল) দুপুরে কথা হয় রেনু আক্তারের সঙ্গে। রেনু আক্তারের মতো ছাটিয়ালপাড়ার দুই শতাধিক পরিবার বাঁশ ও বেতের তৈরি খাঁচা বানিয়ে জীবিকা নির্বাহ করে। কিন্তু করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে বর্তমানে লোহাগাড়াও লকডাউন।

- Advertisement -google news follower

এ পরিস্থিতিতে তাদের খাঁচা বিক্রি একেবারেই নেই। শত বছর ধরে এ গ্রামের মানুষ বাঁশ-বেতের তৈরি খাঁচাসহ অন্যান্য জিনিসপত্র বানিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতো। বর্তমানে এখানকার পরিবারগুলো খেয়ে না খেয়ে দিনযাপন করছেন। লোহাগাড়ার পদুয়া ও আমিরাবাদ ইউনিয়নের প্রান্তসীমায় অবস্থিত এ ছাটিয়ালপাড়া।

খাঁচা বিক্রেতা রেনু আক্তার জয়নিউজকে বলেন, বছরের শুরু থেকে রমজান মাস পর্যন্ত আমরা পরিবারের সবাই দিন-রাত পরিশ্রম করে খাঁচা বানাইতাম। বিক্রিও হতো প্রচুর। এখন যেগুলো বানিয়ে রেখেছি সেগুলো বিক্রি করতে পারছি না। বিক্রি করেছি সেগুলোর টাকা পাচ্ছিনা। ছেলে-মেয়ে নিয়ে খুব কষ্ট করে দিন কাটাচ্ছি।

- Advertisement -islamibank

অপর খাঁচা বিক্রেতা আহমদ কবির জয়নিউজকে বলেন, প্রতিমাসে কিস্তি দিতে হয় ৫ হাজার টাকা। খাঁচা বানিয়ে ঋণের টাকা শোধ করবো মনে করেছিলাম। এখন কেউ আর খাঁচা নিতে আসেনা। যেগুলো বিক্রি করেছি সেগুলোর টাকাও পাইনি।

একই গ্রামের রেহেনা আক্তার জয়নিউজকে বলেন, সম্প্রতি আমার স্বামী মারা যান। এখন ছেলে-মেয়ে নিয়ে খুব কষ্টে আছি। খাঁচা বানানোর কাজও কমে গেছে। সরকারি সহযোগিতা পেলে একটু উপকার হতো।

স্থানীয় খাঁচার পাইকারি বিক্রেতা আব্দুল ছালাম জয়নিউজকে বলেন, এ গ্রাম থেকে প্রতি সপ্তাহে ৭০০-১০০০ খাঁচা আমরা কিনি। বিশেষ করে মাছ, সব্জি, ফল, পান ও অন্যান্য জিনিসপত্র আনা-নেওয়াতে এসব খাঁচা ব্যবহার করা হয়। বর্তমান পরিস্থিতিতে আমরা খাঁচা কিনতে যেতে পারছিনা ছাটিয়ালপাড়ায়।

এ ব্যাপারে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য আতাউর রহমান বাবুল জানান, সরকারিভাবে প্রাপ্ত বরাদ্দ থেকে ছাটিয়ালপাড়ায় এ পর্যন্ত চার পরিবারকে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করেছি।

লোহাগাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. তৌছিফ আহমেদ জয়নিউজকে বলেন, সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের জনপ্রতিনিধির সঙ্গে কথা বলে এসব খাঁচা বিক্রেতাদের খাদ্যসামগ্রীসহ অন্যান্য সহযোগিতার উদ্যোগ নেওয়া হবে।

জয়নিউজ/পুষ্পেন/বিআর
KSRM
পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জয়নিউজবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন news@joynewsbd.com ঠিকানায়।

এই বিভাগের আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ

×KSRM