৫ কারণে আত্মহত্যা করেন সালমান শাহ

নব্বইয়ের দশকের বাংলা চলচ্চিত্রের তুমুল জনপ্রিয় নায়ক সালমান শাহ আত্মহত্যার পেছনে পাঁচ কারণ খুঁজে পেয়েছে তদন্ত সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।

- Advertisement -

সংস্থাটির প্রধান ডিআইজি বনজ কুমার মজুমদার এ তথ্য জানান। সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর ধানমন্ডির পিবিআই হেড কোয়ার্টার্সে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

- Advertisement -google news follower

তিনি বলেন, তিন বছর দুই মাসের তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে চিত্রনায়ক সালমান শাহ খুন হননি, তিনি আত্মহত্যা করেছেন।

আত্মহত্যার পাঁচ কারণ সম্পর্কে তিনি বলেন, সালমান শাহ ও চিত্রনায়িকা শাবনূরের অতিরিক্ত অন্তরঙ্গতা, স্ত্রী সামিরার সঙ্গে দাম্পত্য কলহ, মাত্রাধিক আবেগ প্রবণতার কারণে একাধিকবার আত্মঘাতী হওয়ার বা আত্মহত্যার চেষ্টা, মায়ের প্রতি অসীম ভালোবাসা জটিল সম্পর্কের বেড়াজালে পড়ে পুঞ্জিভূত অভিমানে রূপ নেওয়া এবং সন্তান না হওয়ায় দাম্পত্য জীবনে অপূর্ণতা।

- Advertisement -islamibank

বনজ কুমার বলেন, পিবিআইয়ের তদন্তের সময় ঘটনার সময় উপস্থিত ঘটনা সংশ্লিষ্ট ৪৪ জন সাক্ষীর জবানবন্দি ১৬১ ধারায় লিপিবদ্ধ করা হয়। আগামীকাল মঙ্গলবার সকাল দশটায় তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে জমা দেওয়া হবে।

১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর মারা যান চলচ্চিত্র নায়ক চৌধুরী মোহাম্মদ শাহরিয়ার ইমন ওরফে সালমান শাহ। সে সময় এ বিষয়ে অপমৃত্যুর মামলা দায়ের করেছিলেন তার বাবা প্রয়াত কমরউদ্দিন আহমদ চৌধুরী।

এরপর ১৯৯৭ সালের ২৪ জুলাই ছেলেকে হত্যা করা হয়েছে অভিযোগ এনে মামলাটিকে হত্যা মামলায় রূপান্তরিত করার আবেদন জানান তিনি। ওই সময় অপমৃত্যুর মামলার সঙ্গে হত্যাকাণ্ডের অভিযোগের বিষয়টি একসঙ্গে তদন্ত করতে থানা পুলিশের পরিবর্তে সিআইডিকে নির্দেশ দেন আদালত।

তদন্তের পর ১৯৯৭ সালের ৩ নভেম্বর আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয় সিআইডি। চূড়ান্ত প্রতিবেদনে সালমান শাহের মৃত্যুকে আত্মহত্যা বলে উল্লেখ করে সংস্থাটি।

ওই মাসের ২৫ নভেম্বর ঢাকার সিএমএম আদালতে প্রতিবেদনটি গৃহীত হয়। কিন্তু সিআইডির প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করে তার বাবা কমরউদ্দিন আহমদ চৌধুরী রিভিশন মামলা দায়ের করেন। এর ফলে ২০০৩ সালের ১৯ মে মামলাটি বিচার বিভাগীয় তদন্তে পাঠায় আদালত। এরপর প্রায় ১৫ বছরে মামলাটি বিচার বিভাগীয় তদন্তে ছিল।

পরে ২০১৪ সালের ৩ আগস্ট ঢাকার সিএমএম আদালতের বিচারক বিকাশ কুমার সাহার কাছে বিচার বিভাগীয় তদন্তের প্রতিবেদন দাখিল করেন মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ইমদাদুল হক।

ওই প্রতিবেদনেও সালমান শাহ’র মৃত্যুকে আত্মহত্যা হিসেবে উল্লেখ করা হয়। আবারো ২০১৪ সালের ২১ ডিসেম্বর সালমান শাহর মা নীলা চৌধুরী ছেলের মৃত্যুতে বিচার বিভাগীয় তদন্ত প্রতিবেদন প্রত্যাখ্যান করেন এবং বিচার বিভাগীয় তদন্ত প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে নারাজি দেবেন বলে আবেদন করেন।

২০১৫ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি নীলা চৌধুরী ঢাকা মহানগর হাকিম জাহাঙ্গীর হোসেনের আদালতে বিচার বিভাগীয় তদন্ত প্রতিবেদনের নারাজির আবেদন দাখিল করেন। নারাজি আবেদনে উল্লেখ করা হয়, আজিজ মোহাম্মদ ভাইসহ ১১ জন তার ছেলে সালমান শাহর হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকতে পারেন।

পরে মামলার তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয় র‌্যাবকে। কিন্তু র‌্যাবের তদন্ত চলাকালে বেশ কয়েকবার শুনানি নিয়ে ২০১৬ সালের ১৯ মে মহানগর দায়রা জজ কামরুল হোসেন মোল্লা বিব্রত বোধ করে ঢাকার ৬ নম্বর বিশেষ জজ আদালতে মামলার নথি পাঠিয়ে দেন।

এ আদালতের বিচারক মো. ইমরুল কায়েস ওই বছরেরই ২১ আগস্ট র‌্যাবের মাধ্যমে পুনঃতদন্তের (অধিকতর) আদেশ আইনসম্মত হয়নি উল্লেখ করে বিষয়টি আবারো শুনানি নেওয়ার জন্য ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিমকে দায়িত্ব দেন।

এর ধারাবাহিকতায় মহানগর হাকিম লস্কর সোহেল রানা নারাজি আবেদনের ওপর আবারো শুনানি নেন। পরে ৭ ডিসেম্বর শুনানির পর সালমান শাহর মৃত্যুর ঘটনা হত্যা না আত্মহত্যা তা নির্ধারণের জন্য র‌্যাবের বদলে পিবিআইকে দায়িত্ব দেন।

এরপর সবশেষ গত ২ ফেব্রুয়ারি আদালতে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার সময় নির্ধারণ ছিল। কিন্তু ওই দিন প্রতিবেদন দাখিল না করে পিবিআইয়ের তদন্ত কর্মকর্তা পুনরায় সময় চেয়ে আবেদন করেন। আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালত আগামী ৩০ মার্চ তারিখে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।

জয়নিউজ/এসআই
KSRM
পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জয়নিউজবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন news@joynewsbd.com ঠিকানায়।

এই বিভাগের আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ

×KSRM