বনখেকোদের কারণে মরছে মানুষ, মরছে হাতি

0

বাঁশখালীতে বনখেকোদের কারণে উজাড় হয়ে যাচ্ছে বন। এ কারণে দেখা দিচ্ছে খাদ্যাভাব। খাদ্যাভাবে মারা যাচ্ছে হাতি। আবার খাবারের সন্ধানে লোকালয়ে আসা ক্ষুধার্ত হাতির আক্রমণে মারা যাচ্ছে অসহায় মানুষ।

মাত্র পাঁচদিনের ব্যবধানে বাঁশখালীর সংরক্ষিত বনাঞ্চলের কালীপুর রেঞ্জ ও জলদী রেঞ্জ এলাকায় হাতির আক্রমণে দুই দিনমজুরের মৃত্যু হয়েছে। খাদ্যাভাবে মারা গেছে একটি হাতি

বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) কালীপুর রেঞ্জের জঙ্গল বাণীগ্রাম এলাকায় আব্দুল মোমিন (৫৫) নামে এক দিনমজুর গরু চড়াতে গেলে হাতির আক্রমণে প্রাণ হারান। তিনি বাণীগ্রামের ছমাদারপাড়ার আব্দুস ছালামের ছেলে।

এর আগে গত ১ ফেব্রুয়ারি রাতে পুঁইছড়ি রেঞ্জের জঙ্গল নাপোড়া এলাকায় আলুক্ষেত পাহারা দেওয়ার সময় হাতির আক্রমণে মারা যান আরেক দিনমজুর জহরলাল দেব।

আবার ইকোপার্কের কাছেই চাম্বলের জঙ্গল পাহাড়ে খাদ্যাভাবে মারা গেছে এক হাতি। এ ব্যাপারে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. সমরঞ্জন বড়ুয়া জয়নিউজকে বলেন, পাহাড়ে মারা যাওয়া হাতিটি বয়োবৃদ্ধ ছিল। প্রাথমিক তদন্তে দেখা গেছে, শারীরিক অক্ষমতা এবং খাদ্য সংকটে কোনো এক সময় অসুস্থ হয়ে হাতিটি মারা গেছে। ময়নাতদন্ত শেষে হাতিটিকে মাটিচাপা দেওয়া হয়েছে।

এদিকে স্থানীয় গ্রামবাসীদের অভিযোগ, বাঁশখালীর বিস্তীর্ণ পাহাড়ি এলাকা এখন অরক্ষিত। বির্স্তীণ এলাকাজুড়ে প্রতিদিন বনদস্যুরা অপ্রতিরোধ্য গতিতে গাছ ও পাহাড় কেটে সাবাড় করে দিচ্ছে। প্রশাসন কিংবা বন কর্মকর্তাদের যথাযথ তদারকি নেই।

অভিযোগ আছে, কতিপয় বন কর্মকর্তা ও প্রশাসনকে মাসোহারা দিয়ে পাহাড় ও গাছ কাটছে বেশ কয়েকটি চক্র। নির্বিচারে সংরক্ষিত বনাঞ্চলে ধ্বংসলীলা চলায় খাদ্য সংকটে পড়ছে পশুপাখি। খাবারের খোঁজ জঙ্গল ছেড়ে লোকালয়ে চলে আসছে বন্য হাতির দল। ক্ষুধার্ত হাতির সামনে পড়ে প্রাণ হারাচ্ছে অসহায় মানুষ। আবার বন্য হাতির আক্রমণে নষ্ট ক্ষেত-খামার এবং ঘরবাড়িও।

সাধনপুর ইউপি চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন চৌধুরী ও পুকুরিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আসহাব উদ্দিন বলেন, বনাঞ্চল রক্ষায় বাঁশখালীতে আসলে কোনো প্রশাসন নেই। আমরা উপজেলা সমন্বয়সভায় বন্য হাতির আক্রমণ নিয়ে দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে অভিযোগ করেও কোনো প্রতিকার পায়নি।

এ ব্যাপারে ‍দৃষ্টি  আকর্ষণ করা হলে জলদি রেঞ্জের রেঞ্জার (বন কর্মকর্তা) আনিচ্ছুজ্জামান শেখ জয়নিউজকে বলেন, সম্প্রতি হাতির আক্রমণ এবং লোকালয়ে কেন হাতি এসে পড়ছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। হাতির মৃত্যু এবং হাতির আক্রমণে কারণ অনুসন্ধানে আমাদের টিম মাঠে রয়েছে।

যোগাযোগ করা হলে কালীপুর রেঞ্জের রেঞ্জার মো. আলাউদ্দিন বলেন, সাধনপুর ও পুকুরিয়ায় হাতির আক্রমণ বেড়েছে ব্যাপক হারে। হাতির আক্রমণে মৃত্যুগুলো আমাদেরকে ভাবিয়ে তুলেছে। তবে বনদস্যু ও পাহাড়খেকোদের আমরা লোকবলের অভাবে দমন করতে পারছি না।

জয়নিউজ/পিডি

KSRM
আরও পড়ুন
লোড হচ্ছে...
×KSRM