যাত্রীদের নরকযন্ত্রণা

খানাখন্দে ভরা চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (চউক) নিয়ন্ত্রণাধীন অক্সিজেন-কুয়াইশ সড়কের বেহাল দশা। একটু বৃষ্টি হলেই ছোটখাটো খালে পরিণত হয় সড়কটি। ফলে এ সড়কে চলাচলরত যানবাহন ও যাত্রীদের দুর্ভোগের শেষ নেই। নরকযন্ত্রণা ভোগ করতে হয় তাদের।

- Advertisement -

ঝুঁকি নিয়ে এ সড়কে চলাচল করছে যানবাহন ও যাত্রীরা। প্রায় সময়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। চট্টগ্রাম ওয়াসা ও চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সমন্বয়হীনতার কারণে এই সড়কের বর্তমান অবস্থা দেখে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এলাকাবাসী। বর্ষা মৌসুমে সড়কটির অবস্থা আরো খারাপ হবে বলে শঙ্কা তাদের।

- Advertisement -google news follower

তৈরির দীর্ঘদিন অতিক্রান্ত হলেও সড়কটি এখনো সিটি করপোরেশনকে হস্তান্তর করেনি চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ। রক্ষণাবেক্ষণে চউকের কোনো বরাদ্দ না থাকায় সমস্যায় পড়তে হয়েছে চউককে।

ওয়াসা বলছে, তারা কাজ শেষে ক্ষতিপূরণ চউককে বুঝিয়ে দিয়েছে। চউক কেন কাজ শুরু করছে না তারা জানে না।

- Advertisement -islamibank

তবে চউক বলছে, রাস্তা রক্ষণাবেক্ষণের জন্য চউকের কোনো বরাদ্দ থাকে না। আর সড়কটি এখনো সিটি করপোরেশনকে হস্তান্তর করা হয়নি।
ওয়াসা তাদের ক্ষতিপূরণ কিছুদিন আগে পরিশোধ করেছে। বর্ষার পর এ সড়কের উন্নয়নকাজ শুরু হবে।

যাত্রীদের নরকযন্ত্রণা
সড়কজুড়ে খানাখন্দ। প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা।

সরেজমিনে দেখা গেছে, অক্সিজেন থেকে কুয়াইশ পর্যন্ত সড়কটির দু’পাশেই খানাখন্দে ভরা। বিভিন্ন জায়গায় পানি জমে আছে। কোনো কোনো স্থানে সড়কের একপাশ পুরোপুরি চলাচলের অনুপোযোগী হয়ে পড়েছে। অধিকাংশ স্থানে বিটুমিন উঠে গেছে। এতে চলাচলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে মানুষকে। মারাত্মক ঝুঁকি নিয়ে চলছে যানবাহন। হাটহাজারী, রাউজান, রাঙ্গুনিয়া উপজেলাসহ চান্দগাঁও এলাকার মানুষ চট্টগ্রাম শহরে যাতায়াতে এ সড়ক ব্যবহার করে। ২৪ ঘণ্টাই এ সড়ক দিয়ে ট্রাক, বাস, পিক-আপ, মোটরসাইকেল, রিকশা, অটোরিকশাসহ সহস্রাধিক যানবাহন চলাচল করে।

নজুমিয়াহাট এলাকার বাসিন্দা আবুল কালাম বলেন, অক্সিজেন থেকে কুয়াইশ পর্যন্ত রাস্তার অবস্থা খুবই খারাপ। প্রতিদিন কোনো না কোনো দুর্ঘটনা লেগেই আছে। জানমালের ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে। রিক্সা, অটোরিকশা উল্টে যাওয়া সাধারণ ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে।

চউকের প্রতি ক্ষোভ দেখিয়ে সাইফুল আলম নামে এক এলাকাবাসী জয়নিউজকে বলেন, ওয়াসা ক্ষতিপূরণ চউককে বুঝিয়ে দিলেও কেন এ সড়কের সংস্কার হচ্ছে না, আমরা জানি না। মনে হচ্ছে, ওয়াসা-চউকের মধ্যে সমন্বয়হীনতা নেই।

অটো রিকশাচালক ইয়াছিন আলী জয়নিউজকে বলেন, প্রতিদিন চলাচলে ভীষণ দুর্ভোগ পোহাতে হয় যাত্রীদের। কোমরে ব্যথা ধরে। আর রোগী পরিবহনে খুব কষ্ট হয়। আর যানবাহনের বিভিন্ন সরঞ্জাম প্রতিদিন নষ্ট হচ্ছে।

যাত্রীদের নরকযন্ত্রণাচট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী কাজী হাসান বিন সামস জয়নিউজকে বলেন, ওয়াসা আমাদেরকে ক্ষতিপূরণ দিয়েছে। আমরা সড়ক সংস্কারে টেন্ডার দেওয়ার কাজ শুরু করেছি। আশা করি, বর্ষা শেষে সড়কটির সংস্কার শুরু করতে পারব।

এতদিন দেরি হচ্ছে কেন এমন প্রশ্নে চউকের এ প্রকৌশলী বলেন, রক্ষণাবেক্ষণের জন্য চউকের কোনো বরাদ্দ থাকে না। নিয়ম অনুযায়ী রাস্তা তৈরির পর সেটি সিটি করপোরেশনকে হস্তান্তর করা উচিত। তাহলে রক্ষণাবেক্ষণের বিষয়টি আর চউককে দেখতে হয় না।

তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের একাধিক প্রকৌশলী জয়নিউজকে জানান, বারবার বলার পরও চউকের তৎকালীন চেয়ারম্যান আবদুচ ছালামের স্বেচ্ছাচারিতার কারণে নগরের কিছু সড়ক ও ফ্লাইওভার সিটি করপোরেশনকে হস্তান্তর করা হয়নি। এর ফলে সড়কগুলোর সংস্কার কাজ করা যাচ্ছে না। যার যেটা দায়িত্ব সেটা যথাযথভাবে পালন করা হলে জনগণকে দুর্ভোগ পোহাতে হয় না।

জয়নিউজ/আরসি

KSRM
পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জয়নিউজবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন news@joynewsbd.com ঠিকানায়।

এই বিভাগের আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ

×KSRM