‘যেন পাশেই ভূতটি হাঁটাহাঁটি করছে’

ব্লু হোয়েল, মোমোর আতঙ্কের মধ্যেই পশ্চিমবঙ্গের ময়নাগুড়িতে এবার গ্র্যানি গেমের শিকার হল তিন বন্ধু। তাদের মধ্যে দু’জন দশম ও একাদশ শ্রেণীর ছাত্র। অন্যজন দোকানে কাজ করে।

- Advertisement -

কয়েকদিন আগে ময়নাগুড়ির এক ছাত্রের স্মার্ট ফোনে এই গেমের লিঙ্ক আসে। সে গেমটি ডাউনলোড করে প্রথম ধাপ খেলে। এরপর সে গেমটি তার অন্য দুই বন্ধুকে শেয়ার করে। বুধবার (২৯ আগস্ট) রাতে তারা একসঙ্গে এক বন্ধুর বাড়িতে গেমটি খেলতে শুরু করে। খেলা শুরুর পর ১৪টি ভিন্ন ধরনের অজানা নম্বর থেকে তাদের ফোন করে হিন্দিতে শিশুর কণ্ঠে নির্দেশ দেওয়া হয়। এরপর একে একে তারা অসুস্থ হয়ে পড়ে।

- Advertisement -google news follower

বৃহস্পতিবার (৩০ আগস্ট) এ নিয়ে ময়নাগুড়ি থানায় অভিযোগ জানায় তাদের পরিবার।

তারা জানায়, গেমটি ভৌতিক ধরনের। চার ধাপের গেমের তিনটি ধাপ তারা খেলে ফেলেছিল। প্রথম ধাপে অংশগ্রহণকারীদের মোবাইল ফোনে ভেসে ওঠা একটি ভৌতিক ঘরে বোতাম টিপে প্রবেশ করতে হয়েছে। খেলায় দেখানো হয়েছে ওই ঘরে থাকা ভূত তাদের খুন করেছে। এরপর রক্তের লাল রংয়ে ফোনের স্ক্রিন ভরে যায়। তারা সম্মোহিত হয়ে পড়ে। তৃতীয় ধাপ খেলার সময় তাদের কিছুটা সম্বিত আসে। কিন্তু পরক্ষণেই তারা অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরিবারের সদস্যদের ফোন করে জানায়, তারা আর বাঁচতে চায় না। তড়িঘড়ি পরিবারের লোকেরা তাদের উদ্ধার করে। তারপর থেকে তিনজনই অদ্ভুত আচরণ শুরু করে।

- Advertisement -islamibank

গ্র্যানি গেমের কবলে পড়া এক ছাত্র বলে, সম্প্রতি অনলাইনে থাকার সময় আমার মোবাইল ফোনে আচমকা গেমটির লিঙ্ক আসে। আমি গেমটি ডাউনলোড করি। আমাকে ‘ওকে’ করতে বলে। এরপর আমার ফোনে ভৌতিক খেলাটি চলে আসে। স্টেপ ওয়ানে একটি চিহ্ন টিপে অন্ধকার ঘরে ঢোকার নির্দেশ দেওয়া হয়। আমার প্রতিরূপ ওই ঘরে ঢুকলে আচমকা একটি ভয়াল মূর্তি বিকট আওয়াজ করে এগিয়ে এসে আমার প্রতিরূপটিতে মারে। সঙ্গে সঙ্গে মোবাইল ফোনের স্ক্রিন লাল হয়ে ওঠে। ভয়ে আমি গেমটি থেকে বেরিয়ে আসি। পরে দুই বন্ধুর সঙ্গে গেমটি শেয়ার করি। খেলতে গিয়ে প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপে একই ঘটনা ঘটে। তৃতীয় ধাপ খেলার পর আমার শরীর খারাপ লাগে। মনে হয়, যেন পাশেই ভূতটি হাঁটাহাঁটি করছে। আমার আর বাঁচতে ইচ্ছে করছিল না। আমি দিদিকে ফোন করে আমার মোবাইল ফোনটি নিয়ে যেতে বলি এবং আমি মরতে যাচ্ছি বলে জানাই। এরপর আমার শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে। আমি জ্ঞান হারিয়ে ফেলি।

একইভাবে আরেক ছাত্রের পরিবারের লোকেরা জানিয়েছে, ছেলে উঠানে মোবাইল ফোন ছুঁড়ে ফেলে চিৎকার করতে থাকে ‘আর বাঁচব না। তোমরা মোবাইল ফোন নিয়ে যাও।’ ছাত্রটির মা বলেন, আমি তো ভেবেছি ছেলেকে আর ফিরেই পাব না। অনেক কষ্টে সবাই মিলে মাথায় জল ঢেলে ছেলেকে শান্ত করেছি। এরপর ময়নাগুড়ি থানায় অভিযোগ করেছি।

ময়নাগুড়ির বিডিও শ্রেয়সী ঘোষ বলেন, শীঘ্রই স্কুলে স্কুলে ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে মোবাইল গেম নিয়ে সচেতনতা সৃষ্টিতে কর্মশালার আয়োজন করবো। ময়নাগুড়ি থানার আইসি নন্দ কুমার দত্ত বলেন, আমরা ওই তিনজনকে কাউন্সেলিং করবো। এনিয়ে সচেতনতা গড়তে ব্লক জুড়ে লাগাতার প্রচারও চালাবো।

জয়নিউজ/আরসি

KSRM
পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জয়নিউজবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন news@joynewsbd.com ঠিকানায়।

এই বিভাগের আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ

×KSRM