‘বে-টার্মিনাল নির্মিত হলে চট্টগ্রাম বন্দর হবে সিঙ্গাপুরের মতো’

‘গত ৫ বছরে চট্টগ্রাম বন্দরের অবকাঠামো অনেক উন্নত হয়েছে। বহির্নোঙরে কমেছে জাহাজ জট। এখন জাহাজ সরাসরি জেটিতে এসে ভিড়ছে। বে-টার্মিনাল প্রকল্পের কাজ শেষ হলে চট্টগ্রাম বন্দর হবে সিঙ্গাপুরের মতো অত্যাধুনিক একটি বন্দর।’

- Advertisement -

মঙ্গলবার (৫ মার্চ) বেলা ১২টায় নগরের আগ্রাবাদের ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন চট্টগ্রাম চেম্বারের পরিচালক ও সাইফ পাওয়ারটেকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তরফদার মো. রুহুল আমিন।

- Advertisement -google news follower

তিনি বলেন, গত বছরের এই সময়ের তুলনায় চট্টগ্রাম বন্দরে কনটেইনার হ্যান্ডেলিং বেড়েছে ২০ হাজার টিইইউএস। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে ২ লাখ ২০ হাজার টিইইউএস কনটেইনার হ্যান্ডেলিং হয়েছে। এর আগে ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে কনটেইনার হ্যান্ডেলিং হয়েছিল ২ লাখ টিইইউএস।

চট্টগ্রাম বন্দরে প্রবৃদ্ধি ১০ শতাংশ বেড়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এখন জাহাজ আগের চেয়ে কম সময়ে কনটেইনার খালাস করতে পারছে।

- Advertisement -islamibank

বন্দরের কাজে গতি বেড়েছে জানিয়ে তিনি জানান, চট্টগ্রাম বন্দরের ৬০ শতাংশ কনটেইনার হ্যান্ডেলিং করছে সাইফ পাওয়ারটেক।

রুহুল আমিন বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরে প্রতিদিন দুই হাজার কনটেইনার ডেলিভারির জন্য ৬ হাজার ট্রাক প্রবেশ করে। আর প্রতি ট্রাকে তিনজন করে জনবল প্রবেশ করলে ১৮ হাজার মানুষ প্রবেশ করে বন্দরের ভেতরে। এটা যেমন বন্দরের নিরাপত্তার জন্য সমস্যা, তেমনিভাবে কনটেইনার হ্যান্ডেলিং এর ক্ষেত্রেও সমস্যা। এজন্য ওভার-ফ্লো ইয়ার্ড চালু করছে বন্দর। এই ইয়ার্ড এক বছরের মধ্যে চালু হলে এখানে আরো ১৫-২০ শতাংশ কনটেইনার ডেলিভারি করা সম্ভব হবে।

তিনি আরো বলেন, চট্টগ্রাম বন্দর বে-টার্মিনাল এলাকায় ট্রাক টার্মিনাল ও ডেলিভারি ইয়ার্ড নির্মাণ করা হচ্ছে। এই কাজ দ্রুত শেষ করা দরকার। ইয়ার্ডটিতে দুই থেকে তিন হাজার কনটেইনার ডেলিভারি করা গেলে বন্দরের কাজে আরো গতি আসবে।

চট্টগ্রাম বন্দর সিঙ্গাপুরের মতো অত্যাধুনিক বন্দর হতে পারে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বে-টার্মিনাল প্রকল্পের কাজ শেষ হলে চট্টগ্রাম বন্দর সিঙ্গাপুর বন্দরের মতো হয়ে যাবে। জাহাজ থেকে নামানোর পর কনটেইনার সঙ্গে সঙ্গে ডেলিভারির জন্য নিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে। বর্তমানে যেখানে ৭২ ঘণ্টা সময় লাগে, সেক্ষেত্রে সময় লাগবে ৪৮ ঘণ্টা। তাই বে-টার্মিনাল এলাকায় কনটেইনার ইয়ার্ড নির্মাণ অত্যন্ত জরুরি। এছাড়া পতেঙ্গা টার্মিনালের কাজ শেষ হয়ে গেলে বন্দরের সক্ষমতা আরো বৃদ্ধি পাবে। বিজিএমই-এর যে ৫০ মিলিয়ন ডলার রপ্তানির টার্গেট আছে তা পূরণ করা সম্ভব হবে।

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের একার পক্ষে বন্দরের সার্বিক উন্নয়ন করা সম্ভব নয় মন্তব্য করে তিনি বলেন, বন্দরের অপারেশনের সঙ্গে অনেক স্টেকহোল্ডার, কাস্টমস হাউস, শিপিং, সিএন্ডএফ এজেন্ট, ফ্রেইট ফরওয়ার্ড প্রতিষ্ঠান জড়িত। উন্নয়নের জন্য সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।

এই ব্যবসায়ী নেতা বলেন, বন্দরের কাজে গতি আনতে বর্তমানে কাস্টমস ও ব্যাংকগুলোর বন্দর শাখা ২৪ ঘণ্টা খোলা রাখা হয়। শিপিং এজেন্টগুলোর ডেলিভারি অর্ডারের (ডিইউ) সময়সীমা আরো বেড়েছে।

তিনি বলেন, এখন প্রতিটি জাহাজে কনটেইনার খালাসের জন্য দুটি গ্যান্ট্রি ক্রেন দেওয়া হয়। এর ফলে দ্রুত কনটেইনার খালাস করে সঙ্গে সঙ্গে জাহাজগুলো চলে যাচ্ছে। আগামী জুন-জুলাই মাসে আরো চারটি গ্যান্ট্রি ক্রেন চলে আসবে। জাহাজের পরিধি আগে ছিল ১৫০ মিটার, এখন তা বেড়ে হয়েছে ১৮০-১৯০ মিটার। তাই দুটির স্থলে তিনটি গ্যান্ট্রি ক্রেন ব্যবহার করলে কনটেইনার আরো দ্রুত খালাস করা সম্ভব হবে।

জয়নিউজ/ফয়সাল/জুলফিকার
KSRM
পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জয়নিউজবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন news@joynewsbd.com ঠিকানায়।

এই বিভাগের আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ

×KSRM