১৪ দলে অসন্তোষ, নেতারা কী বলছেন?

একাদশ সংসদ নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগের নেতৃত্বধীন ১৪ দলে চাপা অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। সংসদ নির্বাচনের আগে দলীয় মনোনয়ন ও পরে মন্ত্রিত্ব নিয়ে চাওয়া-পাওয়ার হিসাব মিলাতে না পারায় ১৪ দলে অভ্যন্তরীণ কোন্দল এখন প্রকাশ্যে রূপ নিয়েছে।

- Advertisement -

শুধু তাই নয়, জোটের শরিক নেতারা এখন সরকারের পাশাপাশি ব্যক্তিগত সমালোচনায় মুখর হয়ে উঠেছেন।

- Advertisement -google news follower

সম্প্রতি রাজধানীর চকবাজারে ভয়াবহ আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত ভবন পরিদর্শনে গিয়ে ১৪ দলের অন্যতম নেতা সাবেক শিল্পমন্ত্রী ও সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়ায় একটি বক্তব্যেকে কেন্দ্র করে জোটে সন্দেহ ও অবিশ্বাস বাড়ছে। কারণ চকবাজারের আগুন লাগার ঘটনায় কেমিক্যাল কারখানা থাকার জন্য সাবেক শিল্পমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আমির হোসেন আমুকে এককভাবে দায়ী করেন দিলীপ বড়ুয়া।

দিলীপ বড়ুয়া বলেন, আমি মনে করি কেমিক্যাল কারখানা আমির হোসেন আমুর জন্যই সরানো যায়নি। তিনি পজেটিভ থাকলে অনেক আগেই কেমিক্যালের গুদাম চকবাজার থেকে উঠানো যেত।

- Advertisement -islamibank

দিলীপ বড়ুয়ার এমন বক্তব্যে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়ায় সাবেক শিল্পপতি আমির হোসেন আমু বলেন, দিলীপ বাবুর অযোগ্যতার কারণেই তাঁর সময়ে কেমিক্যাল কারখানা সরিয়ে দেওয়া সম্ভব হয়নি।

শুধু তাই নয়, দিলীপ বড়ুয়ার রাজনৈতিক দল নিয়েও আমু বিরূপ মন্তব্য করায় জোটে ক্ষোভ বাড়ছে।

জোটের অনেকেই মনে করেন চকবাজারের ঘটনায় দুই শিল্পমন্ত্রী যে ধরনের বক্তব্য দিয়েছেন তা শোভন নয়। এতে জোটে প্রভাব পড়বেই।
একাদশ সংসদ নির্বাচন জোটগতভাবে করলেও নির্বাচনের পর এককভাবে সরকার গঠন করে আওয়ামী লীগ। মন্ত্রিসভায় রাখা হয়নি জোটের কোনো নেতাকে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জোটের নেতাদের সংসদ কার্যকর রাখতে বিরোধী দলের ভূমিকা রাখারও অনুরোধ করেন।

রাজনৈতিক মহলে ধারনা ছিল, একাদশ সংসদ নির্বাচনের পর জোটের বাঘা বাঘা নেতাদের অনেকেই মন্ত্রী হবেন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নতুন সরকারে তরুণদের ঠাঁই দিতে পুরোনো হেভিওয়েটদের মন্ত্রিসভা থেকে অব্যাহতি দেন। বিষয়টি প্রথম থেকেই স্বাভাবিকভাবে মেনে নিতে পারেনি জোটের শীর্ষ নেতারা। একদিকে মন্ত্রিত্ব না পাওয়ার হতাশা ,অন্যদিকে ব্যক্তিগত আক্রোশ- সবমিলিয়ে ক্ষোভ এখন চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে। যদিও এ বিষয়ে কেউ প্রকাশ্যে মুখ খুলতে নারাজ।

১৪ দলের একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এখনও মন্ত্রিত্বের আশায় আছেন ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন ও জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু। তাদের ধারনা, চলতি বছরের শেষ নাগাদ মন্ত্রিসভায় আরো কয়েকজন নতুন মন্ত্রী যুক্ত হতে পারেন। আর এ তালিকার প্রথম ভাগে তাদের নাম থাকবে। এজন্য প্রকাশ্যে সরকারবিরোধী বক্তব্য দিচ্ছেন না। ভেতরে ভেতরে এক ধরনের চাপে থাকেন তারা।
এদিকে সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়াও মনে করেন, নতুন মন্ত্রিপরিষদে তাঁর মূল্যায়ন হবে। কারণ দলের ও জোটের প্রয়োজনে তিনি নির্বাচন করেননি। তাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার ত্যাগের মূল্যায়ন করবেন।

এ বিষয়ে ১৪ দলের সমন্বয়ক মো. নাসিম জয়নিউজকে বলেন, আমি ১৪ দলে বিভক্তি দেখছি না। বিশেষ প্রেক্ষাপটে ১৪ দল গঠিত হয়েছিল। আওয়ামী লীগের সঙ্গে ১৪ দল আছে, ১৪ দল থাকবে।

তিনি বলেন, বড় জোটে চাহিদা থাকবেই। তার মানে এই নয় আমরা আলাদা হয়ে গেলাম।

১৪ দল আওয়ামী লীগের দুঃসময়ের বন্ধু উল্লেখ করে তিনি বলেন, অভিমান থাকতেই পারে। কিন্তু দিন শেষে সরকারের উন্নয়ন প্রশ্নে সবাই এক ।

জোটের অন্যতম সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া জয়নিউজকে বলেন, আমি মনে করি ত্যাগের মূল্যায়ন হবেই। নীতির প্রশ্নের আমরা এক।

তিনি বলেন, ১৪ দলে অভিমান থাকতেই পারে। কারণ সবাইকে একসঙ্গে মূল্যায়ন করা হয়তো সম্ভব না। কিন্তু ১৪ দলের প্রশ্নে সবাই এক।
আমির হোসেন আমুর সঙ্গে ভালো সর্ম্পক রয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, কিছু কিছু গণমাধ্যম এ নিয়ে ভুল সংবাদ পরিবেশন করেছে। যা কাম্য ছিল না । তিনি সবাইকে জেনে-বুঝে সংবাদ পরিবেশন করার অনুরোধ করেন।

জয়নিউজ/অভিজিত/বিশু
KSRM
পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জয়নিউজবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন news@joynewsbd.com ঠিকানায়।

এই বিভাগের আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ

×KSRM