রোহিঙ্গা ক্যাম্প: ইয়াবা পাচারে নিরাপদ জোন

0

উখিয়া-টেকনাফের রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরগুলো মাদক বিক্রি ও সেবনের আখড়াই পরিণত হচ্ছে । ইয়াবা মজুতের জন্যও ব্যবহৃত হচ্ছে জনবহুল রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলো। শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ীরা নিরাপদ জোন হিসেবে ব্যবহার করছে ক্যাম্পগুলোকে ।

প্রশাসনকে ফাঁকি দিয়ে সীমান্তের কাঁটাতারের বেড়া পেরিয়ে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে প্রতিদিন ঢুকছে কোটি কোটি টাকার ইয়াবা। শীর্ষস্থানীয় ইয়াবা ও মাদক পাচারকারী সিন্ডিকেট কৌশল পাল্টিয়ে রোহিঙ্গা নেতাদের ব্যবহার করে চালিয়ে যাচ্ছে তাদের ব্যবসা।

প্রশাসন মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রাখলেও কিছুতেই বন্ধ হচ্ছে না ইয়াবা ও মাদক পাচার। ফলে দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রতিদিন ধরা পড়ছে ইয়াবা ও মাদকসহ পাচারকারী সিন্ডিকেটের সদস্যরা।

আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী সূত্রে জানা গেছে, কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফে ইয়াবাসহ স্থানীয়দের পাশাপাশি আটককৃতদের মধ্যে রোহিঙ্গা শরণার্থীর সংখ্যা দিন দিন বেড়ে চলেছে। মিয়ানমার থেকে ইয়াবা এনে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পৌঁছে দিচ্ছে রোহিঙ্গা নারীরা। জেলা গোয়েন্দা পুলিশের তৈরি করা ইয়াবা কারবারিদের তালিকায় রয়েছে ১৩ নেতৃস্থানীয় রোহিঙ্গা শরণার্থীর নাম।

তবে রোহিঙ্গা নেতাদের দাবি, ইয়াবা গডফাদারদের অধিকাংশ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের ঘনিষ্ঠ বা তাদের স্বজন। এমনকি অনেক ইয়াবা কারবারিও সেখানে আশ্রয় নিচ্ছে। এভাবেই উখিয়া ও টেকনাফের রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্পে ইয়াবা ব্যবসা ও পাচার বেড়ে চলেছে। উখিয়া-টেকনাফের শতাধিক রোহিঙ্গা ইয়াবা পাচারকারীর নাম গোয়েন্দা সংস্থার হাতে রয়েছে।

উখিয়ার পালংখালী ইউনিয়নের চিহ্নিত কয়েকজন ইয়াবা ব্যবসায়ী নিরাপদ জোন হিসেবে এখন ব্যবহার করছে শফিউল্লাহকাটা রোহিঙ্গা ক্যাম্পকে। একইভাবে থাইংখালী, বালুখালী, কুতুপালং এলাকায় বেশ কয়েকজন গডফাদার অবস্থান করছে। প্রশাসনের নজরদারি এড়াতে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে তাদের এই অবস্থান বলে জানিয়েছেন স্থানীয় যুবক মোহাম্মদ শফিক ।

কুতুপালং ক্যাম্পের ডি-ব্লকের নেতা মনির আহমেদ জানান, রোহিঙ্গাদের অভাব-অনটনের সুযোগকে কাজে লাগিয়ে স্থানীয় শীর্ষ মাদক কারবারিরা রোহিঙ্গা নারী-পুরুষদের পাচারকাজে নিয়োজিত করছে।

থাইংখালী তাজনিমারখোলা রোহিঙ্গা ক্যাম্প নেতা মো. আলম বলেন, একসময় অভাবে পড়ে রোহিঙ্গারা ইয়াবা পাচারে জড়িয়ে পড়েছিল এ কথা সত্য। স্থানীয় প্রভাবশালীরা রোহিঙ্গাদের অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে এ কাজে ব্যবহার করেছে। তবে অনেক রোহিঙ্গা এখন খুচরা ইয়াবা ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে এমন অভিযোগ রয়েছে।

চলতি বছরের শুরু থেকে কক্সবাজারে পুলিশ, র‌্যাব ও বিজিবির সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহতদের মধ্যে ৪ জনই রোহিঙ্গা বলে জানিয়েছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী।

উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ আবুল খায়ের জানান, চলতি মাসে ১৫ জনের মতো রোহিঙ্গা শরণার্থীকে আটক করেছে পুলিশ। রোহিঙ্গারা আসার পর থেকে ইয়াবা পাচার বেড়েছে। কিছু স্থানীয় মাদক ব্যবসায়ী রোহিঙ্গাদের এ কাজে জড়াতে সহায়তা করছে, এমন তথ্য আমরাও পেয়েছি। তবে এখন অনেক রোহিঙ্গা এই ইয়াবা ব্যবসায় জড়িয়ে পড়েছে। তাদের ধরতে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

জয়নিউজ/আরসি
KSRM
আরও পড়ুন
লোড হচ্ছে...
×KSRM