ডিসিরা নিজেরা রাজত্ব কায়েম করেছেন, তারা আদেশ মানেন না : হাইকোর্ট

বারবার সময় দেওয়ার পরও বরিশালের সন্ধ্যা নদী দখলমুক্ত করে প্রতিবেদন না দেওয়ার ঘটনায় জেলা প্রশাসকের প্রতি অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন হাইকোর্ট। আদালত বলেছেন, ডিসিরা নিজেরা রাজত্ব কায়েম করেছেন। তারা আদালতের আদেশ মানেন না। তাহলে এই আদেশ দিয়ে কী লাভ হবে?

- Advertisement -

রোববার (২৮ মে) প্রতিবেদন দাখিলের জন্য ডিসির পক্ষে রাষ্ট্রপক্ষ সময় চাইলে বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি মোহাম্মদ শওকত আলী চৌধুরীর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ কথা বলেন।

- Advertisement -google news follower

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে সময় আবেদন করেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল জুলফিয়া আক্তার। রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ।

জুলফিয়া আক্তার আদালতে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য ডিসির পক্ষে আবারও সময় চান। তিনি বলেন, আমাদের সময় দিন, আমরা জেলা প্রশাসকের সঙ্গে যোগাযোগ করব।

- Advertisement -islamibank

রিটকারী আইনজীবী মনজিল মোরসেদ বলেন, আদেশ নিয়ে ডিসিরা এক ধরনের খেলা করেন। তখন আদালত বলেন, যা দেখবে তাই তো শিখবে। সচিবরাও তো তাই করে। আদালত অবমাননার হাজার হাজার মামলা পড়ে আছে।

মনজিল মোরসেদ বলেন, আমরা তাহলে কোথায় যাব? আদালত বলেন, আপনারা কনটেম্পট (আদালত অবমাননা) কোর্টে যান। মনজিল মোরসেদ বলেন, আদালতের আদেশ মানাতে হলে সংবিধানের ১০৮ অনুচ্ছেদের ক্ষমতা (আদালত অবমাননা সংক্রান্ত) সেটা চর্চা করতে হবে। সেটা না করলে আইনের শাসন থাকবে না। জনগণও কোনো বিচার পাবে না। রাষ্ট্র কলাপস করলে জনগণ ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

এসময় রাষ্ট্রপক্ষের কাছে প্রতিবেদন না দেওয়ার কারণ জানতে চান হাইকোর্ট। সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, আমাদের সর্বশেষ আরও একটু সময় দিন। এসময় মনজিল মোরসেদ পাশ থেকে বলেন, ৫ বছর চলছে। তখন আদালত বলেন, সাইড টক করছেন কেন? আপনি সিনিয়র আইনজীবী। আপিনও বোঝেন-জানেন দেশের পরিস্থিতি, আদালতের অবস্থা। তারা (রাষ্ট্রপক্ষ) চেষ্টা করে।

সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল শেষবারের মতো সময় চাইলে আদালত বলেন, আপনি যদি একশ বছরও সময় নেন লাভ হবে না। দেশ এটাই, এখানেই থাকতে হবে। লুট করে আমেরিকা নিয়ে যাবেন, সব রেখে দেব। তাই পরিবেশটা ঠিক রাখতে বলেন। জেলা প্রশাসককে ভালো করে বুঝিয়ে বলেন। সম্মানের জায়গাটা ঠিক রাখতে বলবেন। না হলে জবাব দিতে হবে। এরপর আদালত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য ১৮ জুন দিন ধার্য করেন।

পরে আইনজীবী মনজিল মোরসেদ বলেন, সন্ধ্যা নদীর ভেতরে গুচ্ছগ্রাম দখল করা হচ্ছিল মাটি ভরাট করে। বিষয়টি আমরা চ্যালেঞ্জ করে রিট করেছিলাম। হাইকোর্ট অনেকগুলো নির্দেশনা দিয়েছিলেন। তার একটিও বাস্তবায়ন হয়নি। তারা প্রতিবেদন না দেওয়ায় ৫ বছর পর আদালতে আবেদন করেছিলাম। রোববার প্রতিবেদন দেওয়ার দিন ধার্য ছিল। কিন্তু আজও প্রতিবেদন না দেওয়ায় আদালত অসন্তোষ প্রকাশ করেন।

আদালতের নির্দেশনার বিষয়ে মনজিল মোরসেদ বলেন, গুচ্ছগ্রামের স্থাপনা অপসারণ করে প্রতিবেদন দেওয়ার কথা ছিল। যাদেরকে সেখানে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে, তাদেরকে সরকারি জমিতে অন্যকোথাও বরাদ্দ দিতে নির্দেশনা ছিল। বরিশালের যত নদ-নদী আছে, সেগুলো যাতে দখল না হয়, সেজন্য মনিটরিং টিম গঠন করতে বলা হয়েছিল। এছাড়া অবৈধ মাটি ভরাট উচ্ছেদ করতে নির্দেশ ছিল। সেই আদেশ বাস্তবায়ন করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট।

জেএন/এমআর

KSRM
পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জয়নিউজবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন news@joynewsbd.com ঠিকানায়।

এই বিভাগের আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ

×KSRM