শান্তর প্রথম সেঞ্চুরিতে বাংলাদেশের দুর্দান্ত জয়

শেষ ওভারে জয়ের জন্য বাংলাদেশের প্রয়োজন ছিল ৫ রান। হাতে ছিল ৩ উইকেট। মার্ক অ্যাডেয়ারের করা ওভারের প্রথম দুই বলে বড় শটে যাননি মুশফিক। কিন্তু গ্রাউন্ডে খেলতে গিয়ে গ্যাপ বের করতে পারেননি। তাতে দুই বলই হয় ডট। ফলে সমীকরণ দাঁড়ায় ৪ বলে ৫ রানের।

- Advertisement -

তবে রোমাঞ্চের আরও কিছু তখনও বাকি ছিল! তৃতীয় ডেলিভারিটি ফুলটস করতে গিয়ে হাই নো করেন অ্যাডেয়ার, তাতে জোরে হাঁকালেও কোনো রান নিতে পারেননি মুশফিক। তবে নো বল হওয়ায় একটি রান পায় বাংলাদেশ। সমীকরণ দাঁড়ায় ৪ বলে ৪ রানের। পরের বলেই স্কুপ করে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে জয় নিশ্চিত করেন মুশি। ৩ বল হাতে রেখে ৩২০ রানের টার্গেট ছুঁয়ে ফেলে লাল সবুজরা।

- Advertisement -google news follower

বড় লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ৪৫ ওভারের ম্যাচে ৪৪ ওভার ৩ বলে ৭ উইকেট হারিয়ে জয়ের বন্দরে পৌঁছেছে বাংলাদেশ। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ১১৭ রান এসেছে শান্তর ব্যাট থেকে। মুশফিক অপরাজিত ছিলেন ৩৬ রানে। তাওহীদ হৃদয় করেন ৬৮ রান।

এর আগে প্রথমে ব্যাট করে হ্যারি টেক্টরের সেঞ্চুরিতে নির্ধারিত ৪৫ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ৩১৯ রান তোলে আয়ারল্যান্ড। যা বাংলাদেশের বিপক্ষে আইরিশদের সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ।

- Advertisement -islamibank

৩২০ রানের জয়ের লক্ষ্যে খেলতে নেমে শুরুতেই আউট হয়ে সাজঘরে ফেরেন তামিম ইকবাল। মার্ক অ্যাডায়ারের বলে লেগ স্কয়ারে ফ্লিক করতে গিয়ে তিনি শর্ট লেগে থাকা ফিল্ডারের তালুবন্দি হন। সাজঘরে ফেরার আগে অধিনায়কের ব্যাট থেকে এসেছে ১৩ বলে ৭ রান। দলীয় ৯ রানেই প্রথম উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়ে টাইগাররা।

তামিমের বিদায়ের পর দেখেশুনে খেলছিলেন লিটন। কিন্তু দশম ওভারে গ্রাহাম হিউমের করা অফ স্টাম্পের বাইরের বলে অযথাই খোঁচা দিয়ে বসেন তিনি। আইরিশ উইকেটরক্ষক লরকান টাকার সেটি তালুবন্দি করতে মোটেও ভুল করেননি। ২১ বলে ২১ রান করে আউট হয়ে যান লিটন। ৪০ রান তুলতেই দুই ওপেনারকে হারিয়ে বেশ বিপাকে পড়ে বাংলাদেশ, যেহেতু টার্গেট অনেক বড়।

সেখান থেকে দলকে টেনে তোলেন নাজমুল হোসেন শান্ত ও সাকিব আল হাসান। এই দুই বাঁহাতি ব্যাটারে ভর করে ১৬.২ ওভারে বাংলাদেশ শতরান পূর্ণ করে।

সাকিব ২৬ রান করে বিদায় নিলে ভাঙে ৬১ রানের জুটি। এরপর তাওহীদ হৃদয়কে সঙ্গে নিয়ে দুর্দান্ত ব্যাটিং করেন নাজমুল হোসেন শান্ত। সমান ৪৯ বলে ব্যক্তিগত অর্ধশতক স্পর্শ করেন দুজনই। এরপর হৃদয় ৬৮ রানে ফিরলে ১৩১ রানের চতুর্থ উইকেট জুটি ভেঙে যায়। সঙ্গীকে হারালেও রানের চাকা সচল রাখেন শান্ত। ৮৩ বলে নিজের প্রথম সাদা বলের সেঞ্চুরি তুলে নেন এই টপ অর্ডার ব্যাটার।

১১৭ রান করে শান্ত যখন প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন তখন ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ বাংলাদেশের হাতে। মিরাজ-তাইজুলদের সঙ্গে নিয়ে পাকা হাতে বাকি কাজটুকু সেরেছেন মুশফিকুর রহিম।

৩১৯ রানের বড় সংগ্রহ গড়া আয়ারল্যান্ডের শুরুটা অবশ্য খুব একটা ভালো হয়নি। ম্যাচের আগে বৃষ্টি হওয়ায় বাড়তি সুবিধা পেয়েছেন বাংলাদেশের পেসাররা। ১ম ওভারে হাসান মাহমুদের ৫ম বলে পেইস আর বাউন্সে পরাস্ত হন পল স্টার্লিং। সিলভার ডাক খাওয়া এই ওপেনার ডিফেন্স করতে গিয়ে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন। যদিও আম্পায়ার আউট দেননি। রিভিউতে নিশ্চিত হয় আউট।

সপ্তম ওভারে আরও একবার হাসান ম্যাজিক। প্রথম বলটি ব্যাক অব লেন্থে করেছিলেন, পেছনের পায়ে ভর দিয়ে কাট করতে গিয়ে পয়েন্টে মিরাজের হাতে ধরা পড়েন স্টিফেন ডোহেনি। সাজঘরে ফেরার আগে তার ব্যাট থেকে এসেছে ২১ বলে ১২ রান। ১৬ রান তুলতেই দুই ওপেনারকে হারায় আইরিশরা।

এমন বিপর্যয় থেকে দলকে টেনে তোলেন অধিনায়ক অ্যান্ডু বার্লবির্নি ও হ্যারি টেক্টর। আইরিশ অধিনায়ক ৪২ রান করে ফিরে যান। এতে ৯৮ রানের তৃতীয় উইকেট জুটির সমাপ্তি হয়। এই জুটিতে ভালো ভিত পেয়ে যায় তারা। সেখানে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশি বোলারদের ওপর ছড়ি ঘুরিয়েছেন টেক্টর। তুলে নেন দারুণ এক সেঞ্চুরি। শেষ পর্যন্ত ১১৩ বলে ১৪০ রানে থামেন এই অভিজ্ঞ ব্যাটার। ৪২তম ওভারের শেষ বলে তাকে দুর্দান্ত এক ডেলিভারিতে বোল্ড করেন এবাদত হোসেন।

টেক্টর ফিরলেও রানের গতি কমেনি আইরিশদের। ডকরেলের সঙ্গে তাল মিলিয়ে সমান তালে রান তুলেছেন মার্ক অ্যাডায়ার। তিনি সাজঘরে ফেরার আগে ৮ বলে ২০ রানের ক্যামিও উপহার দিয়েছেন। আর এতেই বাংলাদেশের বিপক্ষে ওয়ানডেতে সর্বোচ্চ (রেকর্ড) ৩১৯ রানের সংগ্রহ পেয়ে যায় আয়ারল্যান্ড। তাও ৪৫ ওভারে! টাইগারদের বিপক্ষে এর আগে তাদের সর্বোচ্চ সংগ্রহ ছিল ২৯২ রান।

বাংলাদেশের হয়ে দুটি করে উইকেট পেয়েছেন হাসান ও শরীফুল। এবাদত ও তাইজুল নেন একটি করে উইকেট।

জেএন/এমআর

KSRM
পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জয়নিউজবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন news@joynewsbd.com ঠিকানায়।

এই বিভাগের আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ

×KSRM