পাকিস্তানে ৫০ বছরে সর্বোচ্চ মুদ্রাস্ফীতি

কয়েক বছর ধরে মুদ্রাস্ফীতি চলছে পাকিস্তানে। চলতি বছরে মার্চ মাসে যা ৩৫.৩৭ শতাংশে এসে পৌঁছেছে। এটি প্রায় পাঁচ দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ। দেশটির সরকার আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল- আইএমএফ এর শর্তপূরণ করতে তড়িঘড়ি উদ্যোগ নেয়ার ফলে এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বলে জানাচ্ছেন বিশ্লেষকেরা।

- Advertisement -

শনিবার প্রকাশিত সরকারি তথ্য অনুযায়ী এক মাস থেকে অন্য মাসে মুদ্রাস্ফীতি ছিল ৩.৭২ শতাংশ, যেখানে গত বছরের গড় মুদ্রাস্ফীতির হার ছিল ২৭.২৬ শতাংশ৷ মার্চের মুদ্রাস্ফীতির হার ফেব্রুয়ারিকে (৩১.৫%) ছাড়িয়ে গেছে। ব্যুরো জানিয়েছে, বছরে খাদ্য, পানীয় এবং পরিবহনের দাম বেড়েছে প্রায় ৫০ শতাংশ পর্যন্ত।

- Advertisement -google news follower

বছরের পর বছর ধরে পাকিস্তানের আর্থিক অব্যবস্থা এবং রাজনৈতিক অস্থিরতা অর্থনীতিকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিয়েছে। বিশ্বব্যাপী শক্তি সংকট এবং বিধ্বংসী বন্যার কারণে ২০২২ সালে দেশের এক তৃতীয়াংশ জলমগ্ন হয়। পরিস্থিতি সেইসময় থেকে আরো খারাপ হয়েছে।

বর্তমানে দেশটির যা ঋণ, এর ফলে তাদের কোটি কোটি ডলার অর্থায়নের প্রয়োজন। এদিকে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ হ্রাস পেয়েছে এবং পাকিস্তানি রুপির মান কমে গিয়েছে। দরিদ্র পাকিস্তানিরা এই অর্থনৈতিক অস্থিরতার শিকার। মুদ্রাস্ফীতির প্রভাব কমাতে সরকার-সমর্থিত কর্মসূচির আওতায় সারা দেশে আটা-ময়দা বিতরণের কেন্দ্র তৈরি করা হয়েছে।

- Advertisement -islamibank

রমজান মাস শুরু হওয়ার পর থেকে খাদ্য বিতরণ কেন্দ্রে ভিড়ে পিষ্ট হয়ে অন্তত ২০ জন প্রাণ হারিয়েছেন। করাচির এক অর্থনৈতিক বিশ্লেষক শাহিদা উইজারাত এই প্রসঙ্গে বলেন, “যেভাবে মুদ্রাস্ফীতি বা মূল্যস্ফীতি বাড়ছে, আমি মনে করি দুর্ভিক্ষের মতো পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে।”

শুক্রবার করাচিতে রমজান মাস উপলক্ষ্যে একটি কেন্দ্রে খাবার বিতরণ করা হচ্ছিল। সেখানে ভিড় পিষ্ট হয়ে কমপক্ষে ১২ জন মারা যান। খাবার লুট হওয়ার অভিযোগও এসেছে।

দক্ষিণ এশীয় দেশটিতে ২২ কোটির বেশি মানুষের বসবাস। ঋণের গভীরে ডুবে থাকা পাকিস্তানকে চাঙ্গা করতে কঠোর কর সংস্কার প্রয়োজন। এদিকে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল জানিয়েছে, তাদের থেকে ৬৫ কোটি ডলারের সাহায্য পেতে গেলে বেশ কয়েকটি পদক্ষেপে কিছু লক্ষ্য পূরণ করতে হবে পাকিস্তানকে।

মূল্যস্ফীতি “উন্নত” স্তরে থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে। অর্থমন্ত্রণালয় বলেছে, “অত্যাবশ্যকীয় জিনিসপত্রের আপেক্ষিক চাহিদা এবং সরবরাহের ব্যবধান, বিনিময় হারের মূল্যহ্রাস এবং সম্প্রতি পেট্রোল ও ডিজেলের নিয়ন্ত্রিত দামের ঊর্ধ্বমুখী সমন্বয়ের ফলে এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।”

মূল্যস্ফীতি নিয়ে পরিসংখ্যান ব্যুরোর এক মুখপাত্র বলেন, বৃদ্ধির এই হার সত্তর দশকে মাসিক রেকর্ড ব্যুরো শুরু হওয়ার পর সর্বোচ্চ। তার কথায়, “এটি আমাদের তরফে নথিভুক্ত হওয়া সর্বোচ্চ মুদ্রাস্ফীতি।”

বিদেশি ঋণের বোঝা, মুদ্রাস্ফীতি এবং খাদ্যসংকটের ভারে ঝুঁকে পড়া দেশটিতে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দামও মারাত্মক হারে বেড়েছে। সূত্র: ডিডাব্লিউ, এএফপি, রয়টার্স)

জেএন/এমআর

KSRM
পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জয়নিউজবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন news@joynewsbd.com ঠিকানায়।

এই বিভাগের আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ

×KSRM