৪ মামলা আদালতে বিচারাধীন, পটিয়ার পৌর কাউন্সিলর ডাকলো নিষ্পত্তিতে

আদালতে ৪টি মামলার বিচারাধীন থাকার কথা জেনেও পটিয়া পৌরসভায় নিষ্পত্তির জন্য বাদিকে চাপ প্রয়োগের অভিযোগ উঠেছে পটিয়া পৌরসভার দুই কাউন্সিলর ও যুবদলের এক নেতার বিরুদ্ধে। ভোক্তভোগী পটিয়া পৌরসভার ৭ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা আব্দুল মন্নান এ ব্যাপারে প্রতিকার চেয়ে ডিআইজিসহ প্রশাসনের বিভিন্নস্তরে অভিযোগ করেছেন।

- Advertisement -

আব্দুল মন্নানের অভিযোগ, তাঁর বসতবাড়ির কিছু অংশ জালিয়াতির মাধ্যমে কচুয়াই ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা নন্না মিয়া নামজারি করেন। এ ব্যাপারে তিনি একটি নামজারি মামলা নং-৩৫৮০/০৯ দায়ের করেন। ২০০৯ সালের ২২ জুন এসিল্যান্ড পটিয়া এক আদেশে নন্না মিয়ার নামজারি খতিয়ানটি বাতিল করেন। এরপর থেকেই নন্না মিয়া ও ভূমিদস্যূ একটি চক্র তাঁর জায়গাটি জবর দখলের চেস্টা চালিয়ে আসছে।

- Advertisement -google news follower

তিনি বলেন, জায়গাটি নিয়ে চট্টগ্রাম অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেটের আদালত, পটিয়ার যুগ্ম জেলা জজ আদালত, পটিয়ার প্রথম সিনিয়র সহকারি জজ আদালত, পটিয়ার সহকারি কমিশনার ভূমির আদালতে ৪টি মামলা বিচারাধীন রয়েছে। তারপরও একই বিষয় নিয়ে পটিয়া পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ডের কমিশনার মোহাম্মদ বেলাল উদ্দিন নন্না মিয়ার একটি অভিযোগের ভিত্তিতে ৬ ফেব্রুয়ারি শালিশী বৈঠকে বসার নোটিশ দেন। নোটিশে বলা হয় ১৯ জানুয়ারি নন্না মিয়া পৌর কার্যালয়ে একটি অভিযোগ দায়ের করেন। ৬ ফেব্রুয়ারি বেলা ৫ টায় পৌর কার্যালয়ে আব্দুল মন্নানকে উপস্থিত থাকার অনুরাধ করা হয়।

আব্দুল মন্নানের অভিযোগ, আমি ৬ ফেব্রুয়ারি কাউন্সিলরের সাথে বৈঠকে বসি। সেখানে পৌরসভার ৬ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শফিউল আলম ও যুবদল নেতা মোহাম্মদ শাহজাহান উপস্থিত ছিলেন। তাদেরকে আমি নন্না মিয়ার অভিযোগের বিষয়ে আদালতে ৪টি মামলা বিচারাধীন রয়েছে বলে জানায়। এসময় জাহাঙ্গীর আলম,আলমগীর, যুবদল নেতা মোহাম্মদ শাহজাহান, কাউন্সিলর শফিউল আলম ও নন্না মিয়া কাউন্সিলরের কাছে বিচারাধীন মামলাগুলো নিষ্পত্তির জন্য আমাকে চাপ প্রয়োগ করেন। ভয়-ভীতি দেখায়।

- Advertisement -islamibank

আব্দুল মন্নান বলেন, আদালতে বিচারাধীন মামলা পৌরসভায় কিভাবে নিষ্পত্তি করবে পৌর কাউন্সিলর শফিউল আলমকে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, আমরা মামলা নিষ্পত্তি করতে পারব। পরে বৈঠক থেকে আমি উঠে বাসায় চলে আসি।

তিনি বলেন, যুবদল নেতা শাহজাহান আমাকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেন। পুনরায় ৬ ফেব্রয়ারি আমাকে আরেকটি নোটিশ করে পৌরসভা থেকে। ২ মার্চ বেলা ৪টায় পৌর অফিস কার্যালয়ে উপস্থিত থাকতে বলেন। ওই তারিখে অনেকটা চাপের মুখে আমি পৌর কার্যালয়ে বৈঠকে গেলে নন্না মিয়া, শাহাজাহান ও কাউন্সিলর শফিউল আলম আমাকে পৌরসভায় আদালতে বিচারাধীন মামলাগুলো নিষ্পত্তির জন্য চাপ প্রয়োগ করেন।

আদালতে বিচারাধীন বিষয়ে বিচার বিষ্পত্তির জন্য পটিয়া পৌরসভা থেকে পাঠানো দুটি নোটিশের কপি এ প্রতিবেদকের হাতে পৌছেছে। এতে কমিশনার ও সচিবের স্বাক্ষর ও সই রয়েছে।

সংশ্লিষ্ট আদালত সূত্রে জানা গেছে, নন্না মিয়া বাদি হয়ে ২০১০ সালের ২৫ জানুয়ারি আব্দুল মন্নানের বিরুদ্ধে যুগ্ম জেলা জজ পটিয়া আদালতে মামলা নং-২১/২০১০ দায়ের করেন। ওই মামলায় আগামী ২৬ জুলাই শুনানির দিন ধার্য্য আছে। সিনিয়র সহকারি জজ (প্রথম) এর আদালত পটিয়া চট্টগ্রামে মামলা নং-৪৪০/২০০৯- এ মামলার পরবর্তী শুনানির জন্য ২৩ জুলাই শুনানির তারিখ ধার্য্য রয়েছে। এছাড়া অতিরিক্ত জেলা মেজিষ্ট্রেট আদালতে মিস মামলা নং-৭৪৫/২২ এর শুনানী ছিল চলতি ২৬ ফেব্রুয়ারি। মামলাটি এখনও বিচারাধীন।

আদালতে বিচারাধীন বিষয়ে পৌরসভায় বিচার করতে পারে কিনা প্রশ্ন করা হলে কাউন্সিলর মোহাম্মদ বেলাল ও কাউন্সিলর মোহাম্মদ শফিউল আলম বলেন, নন্না মিয়ার অভিযোগের প্রেক্ষিতে আব্দুল মন্নানকে নোটিশ করা হয়েছিল। তিনি বৈঠকে এসে এ বিষয়ে আদালতে মামলা বিচারাধীন থাকার কথা জানালে আমরা এ বিষয়ে আর এগোইনি। দ্বিতীয়বার কেন নোটিশ করা হয়েছে প্রশ্ন করা হলে তাঁরা কোন উত্তর দিতে পারেননি।

এদিকে জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে আব্দুল মন্নান ডিআইজি, পুলিশ সুপারের কাছে আইনী সহযোগিতা চেয়ে আবেদন করেছেন।

এব্যাপারে অভিযুক্ত যুবদল নেতা মোহাম্মদ শাহজাহানের মোবাইলে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ধরেননি।

জেএন/এফও/এমআর

KSRM
পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জয়নিউজবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন news@joynewsbd.com ঠিকানায়।

এই বিভাগের আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ

×KSRM