বিএনপির অভিযোগে হনুমানও ভেংচি কাটে: তথ্যমন্ত্রী

0

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, দুর্নীতির ও টাকা পাচারের কারণে বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের শাস্তি হয়েছে।

লুটের টাকা বিদেশে পাচার করার কারণে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে আমেরিকার এফবিআই এসে বাংলাদেশে স্বাক্ষ্য দিয়ে গেছে। দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন হয়ে বিএনপি বিশ্ব চোরের উপাধি অর্জন করেছিল। সেই বিশ্বচোর বিএনপি যখন দূর্নীতির অভিযোগ করেন তখন শুধু মানুষ নয় গাধাও হাসেন, হনুমানও ভেংচি কাটে।

মঙ্গলবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় এম এ আজিজ স্টেডিয়াম সংলগ্ন জিমনেসিয়ামে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন আয়োজিত ২১দিন ব্যাপী অমর একুশে বই মেলার সমাপনী ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা রেজাউল করিম চৌধুরীর সভাপতিত্বে সমাপনি অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন একুশে পদকপ্রাপ্ত গুণীজন অভিনেত্রী সুবর্ণা মুস্তাফা এমপি, বক্তব্য রাখেন অমার একুশে বইমেলা উদযাপন পরিষদের আহ্বায়ক কাউন্সিলর ড. নিছার উদ্দিন আহমেদ মঞ্জু, সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী শেখ মো. তৌহিদুল ইসলাম।

মন্ত্রী বলেন, আজকে সংবাদ সম্মেলন করে সরকারের বিরুদ্ধে একগাধা দূর্নীতির অভিযোগ উপস্থাপন করেছেন বিএনপির মহাসচিব মীর্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেব। আমার প্রশ্ন হচ্ছে যারা নিজেদের দুর্নীতির কারণে পর পর বাংলাদেশকে পাঁচবার চ্যাম্পিয়ন করেছিল তারা কারা? তারা হচ্ছে বিএনপি।

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বই পোড়ানো যেমন অপরাধ, বই না পড়াও অপরাধ। বাংলাদেশে শিক্ষার্থীদের মাঝে বিনামূল্যে বই প্রদান প্রথা বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চালু করেছেন। গত এক যুগের বেশি সময় ধরে প্রতিবছর ৩৫ কোটির বেশি বই বিনামূল্যে প্রদান করা হচ্ছে।

বাংলাদেশের মতো জনবহুল আর কোন দেশে এমন ব্যবস্থা চালু নেই। যেটি বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগের সরকার চালু করেছে।

তিনি বলেন, অন্যদিকে আপনাদের মনে আছে ২০১৪ সালে সেই নতুন বই সংরক্ষিত ছিল স্কুল ঘরে। সেই বইয়ের মধ্যে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়েছিল। পাঁচশ স্কুল ঘর আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছিল। নির্বাচন প্রতিহতের নামে এই কাজটি করেছে বিএনপি এবং তার নেতৃত্বাধীন জোট।

শিক্ষার্থীদের বই নয় শুধু তাদের ভবিষ্যৎ পুড়িয়ে দিয়েছে। সেই পোড়া বই বুকে জড়িয়ে ধরে শিক্ষার্থীরা আহাজারি করেছে। রাজনীতির নামে বই পোড়ানো এমন ঘটনা পৃথিবীর অন্য কোন দেশে ঘটেছে কিনা সন্দেহ!

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, এমন সময় ছিল প্রতিবছর শিক্ষাবর্ষ যখন শুরু হতো তখন দরিদ্র ঘরের অভিভাবকরা অবস্থা সম্পন্ন পরিবারের কাছে ধর্ণা দিত তার ছেলের পুরনো বইগুলো সংগ্রহ করার জন্য, এটিই ছিল নিয়মিত ঘটনা। সেই ঘটনা এখনো পার্শ্ববর্তী দেশগুলোতে আছে।

কিন্তু আমাদের দেশে জননেত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে নতুন বই প্রদান প্রথা চালু করেছেন। বাংলাদেশের মতো জনবহুল আর কোন দেশে এমন ব্যবস্থা চালু নেই।

দ্রব্যমূল্যের উর্ধগতি বিষয়ে বিএনপি মহাসচিব মীর্জা ফখরুলের বক্তব্যের ব্যাপারে আওয়ামী লীগের যুগ্ন সাধারন সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ পৃথিবীর দিকে চোখ মেলে তাকানোর জন্য আর চোখ মেলে নিজেদের চেহারা একটু আয়নায় দেখতে বিএনপি নেতাদেও অনুরোধ জানিয়ে বলেন, কিভাবে তাদের সময়ে দেশ পরপর পাঁচবার দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল।

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং করোনা মহামারির কারণে আজকে সমগ্র পৃথিবীতে দ্রব্যমূল্য বেড়েছে। আমাদের দেশের মূল্যস্ফীতি ৮ শতাংশ, যা পৃথিবীর অন্যান্য দেশের তুলনায় অনেক কম।

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বই মানুষের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। বই পড়া ছাড়া মানুষের জীবন কখনো সমৃদ্ধ হয়না। যারা পৃথিবী বদলে দিয়েছে মানুষের জীবন বদলে দিয়েছে, সাহিত্য বদলে দিয়েছে, পৃথিবীর মানচিত্র বদলে দিয়েছে তারা সবাই বই পড়ার উপর গুরুত্ব দিয়েছেন। আগে পাড়ায় পাড়ায় লাইব্রেরী ছিল, মানুষ গো গ্রাসে বাই পড়তো। এখন তরুন ও কিশোরদের মধ্যে সেই অভ্যাস নাই।

তিনি বলেন, বই পড়ার অভ্যাসটা কেড়ে নিয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, মোবাইল ফোনের আসক্তি। এটা বড় যন্ত্রনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। দেখা যাই ছাত্রছাত্রীরা বই পড়ার চেয়েও মোবাইল ফোনের আসক্তিতেই মগ্ন। এখান থেকে আমাদের কিশোর তরুনদের রক্ষা করতে হবে। বই পড়ার ওপর জোড় দিতে হবে। না হয় আমরা ভবিষ্যতে এমন একটি প্রজন্ম পাব, যেই প্রজন্ম হয়তো প্রযুক্তিতে অনেক সমৃদ্ধ হবে জ্ঞানে সমৃদ্ধ হবেনা।

প্রযুক্তিতে সমৃদ্ধ হওয়া আর জ্ঞানে সমৃদ্ধ হবার মাঝে পার্থক্য আছে। সেজন্য বইমেলার আয়োজন এবং মানুষের পাঠ অভ্যাস পুনরুদ্ধার করা এটি অত্যন্ত প্রয়োজন।

জেএন/পিআর

KSRM
আরও পড়ুন
লোড হচ্ছে...
×KSRM