চকবাজারে বিধবার জায়গা দখল করতে দিনদুপুরে হামলা-লুটপাট,সন্তানকে কুপিয়ে জখম

0

চট্টগ্রাম নগরের চকবাজারে এক বিধবা নারীর জায়গা দখল করতে ভাড়াটে সন্ত্রাসী এনে দিন-দুপুরে ফিল্মি স্টাইলে হামলা করেছে তার প্রতিবেশী। সন্ত্রাসীরা এই বিধবা নারীর ছেলেকে হকিস্টিক, লাঠি, দা কিরিচ দিয়ে আঘাত করে সারা শরীর থেঁতলে দিয়েছে।এছাড়া তাঁর ৭মাসের অন্তঃসত্ত্বা পুত্রবধূকেও বেধড়ক পিটিয়েছে।

গতকাল দুপুরে চকবাজার থানাধীন সিরাজুদ্দৌলা রোডের মুনাফ সওদাগর বাড়িতে এই ঘটনা ঘটে।

ভুক্তভোগী মোহসেনা বেগম (৫০) স্থানীয় মৃত আব্দুস সাত্তারের স্ত্রী।হামলায় গুরুতর আহত তার ছেলে মোহাম্মদ বারেক (২৭) চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ২৮ নং ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন আছেন।

এদিকে এই ঘটনায় মোহসেনা বেগম চকবাজার থানায় একটি এজাহার দায়ের করেন। এতে তার প্রতিবেশী মাহবুবুর রহমান তুহিনসহ ৭ জনের নাম উল্লেখপূর্বক আরও অজ্ঞাত ৪-৫ জনকে আসামী করা হয়।

চমেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মোহাম্মদ বারেক বলেন, আমার বাবা মারা গেছেন।আমি ইলেক্ট্রিকের কাজ করে পরিবার চালাই।এরমধ্যে আমার প্রতিবেশী চাচাতো ভাই মাহবুবুর রহমান তুহিন ও তার পরিবারের চোখ পড়ে আমার বাবার রেখে যাওয়া ছোট্ট জায়গাটির উপর।তারা বিভিন্নভাবে ছলচাতুরী করে কম দামে আমার মায়ের কাছ থেকে জায়গাটি কিনে নিতে চায়।এতে রাজি না হওয়ায় তারা নারাভাবে হুমকি ধামকি দিতে থাকেন।এরমধ্যে আমাদেরকে বিভিন্নভাবে হয়রানি করতে থাকে, যাতে আমরা বাধ্য হয়ে জায়গাটি তাদেরকে নামমাত্র মুল্যে দিয়ে দেই।তবে আমরা সবকিছু নীরবে সহ্য করে ধৈর্য্য ধারণ করেছি। সর্বশেষ গত মঙ্গলবার দুপুরে তুহিনের নেতৃত্বে ইমন, তানভির, ইমরান, রাশেদসহ প্রায় ৩০ জনের মতো সন্ত্রাসী ধারালো অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে আমাদের ঘরে হামলা করে।

তিনি বলেন, সন্ত্রাসীদেরকে দেখামাত্রই আমরা ঘরের দরজা ভেতর থেকে বন্ধ করে দেই। তখন তারা অশালীন ভাষায় গালিগালাজ করতে করতে আমাদেরকে দরজা খুলে দিতে বলে। একপর্যায়ে তারা দরজা ভেঙে ঢুকে পড়ে আমার উপর হায়েনার মত ঝাঁপিয়ে পড়ে।তারা হকিস্টিক, লাঠি, দা কিরিচ দিয়ে আমার মাথাসহ সারা শরিরে আঘাত করে থেঁতলে দেয়। আমার বৃদ্ধা মা, বোন এবং আমার ৭ মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীও সন্ত্রাসীদের আঘাত থেকে রেহায় পায়নি। ভাংচুরের পাশাপাশি তারা আমার বাসার মুল্যবান জিনিস-পত্র এবং স্বর্ণালংকার লুট করতে থাকে।একপর্যায়ে আমার বোন ৯৯৯ এ কল করে পুলিশ নিয়ে আসার সাথে সাথে তারা পালিয়ে যায়।

মোহাম্মদ বারেক বলেন, সন্ত্রাসীরা আমাদের আলমারিতে থাকা ৬ লাখ ত্রিশ হাজার টাকা ও ৪ ভরি স্বর্ণ লুট করে।এছাড়া হামলায় আমাদের সাড়ে ৪ লাখ টাকার আসবাবপত্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বর্তমানে আমি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে চিকিৎসাধীন আছি।আর এখন এই বিষয়ে মামলা না করতে তারা আমাদেরকে বিভিন্নভাবে হুমকি ধামকি দিচ্ছেন।’

তবে এই বিষয়ে জানতে চাইলে প্রধান অভিযুক্ত মাহবুবুর রহমান তুহিন জানান, এরকম কোন ঘটনা ঘটেনি। তাদের বিরুদ্ধে কেউ অভিযোগও দায়ের করেন নি। এই বলে তিনি ফোন কেটে দেন।

চকবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মঞ্জুর কাদের মঞ্জু বলেন, ‘বিষয়টি আমরা অবগত আছি। এরমধ্যে হোসনে আরা বেগমের পক্ষে একটা লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। আমরা তদন্ত করে এটাকে মামলা হিসেবে গ্রহণ করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবো।’

জেএন/এফও/এমআর

KSRM
আরও পড়ুন
লোড হচ্ছে...
×KSRM