আ’লীগের কমিটিতে পদোন্নতি পেলেন চট্টগ্রামের হাছান মাহমুদ

আওয়ামী লীগের ২২তম জাতীয় কাউন্সিলে কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটিতে চট্টগ্রামের ৫ শীর্ষ নেতা স্থান পেয়েছেন। তাঁদের মধ্যে চার নেতার পূর্বের পদে বহাল রয়েছে এবং একজনের পদ পরিবর্তন করে দলের ৮১ সদস্যের কেন্দ্রীয় কমিটিতে।

- Advertisement -

শনিবার আওয়ামী লীগের ২২তম জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। বিকেলে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে সম্মেলনের দ্বিতীয় পর্বে দলের সভাপতি হিসেবে শেখ হাসিনা এবং সাধারণ সম্পাদক পদে পুনরায় ওবায়দুল কাদেরের নাম ঘোষণা করা হয়।

- Advertisement -google news follower

তাদের নাম ঘোষণা করেন আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন। ভোটে পাস হওয়ার পর পৃথকভাবে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নাম ঘোষণা করেন তিনি।

পরে কাউন্সিলে প্রাপ্ত ক্ষমতাবলে দলের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির বিভিন্ন পদে মনোনীত নেতাদের নাম ঘোষণা করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। এ সময় তিনি আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য থেকে শুরু করে পর্যায়ক্রমে সম্পাদকমণ্ডলীর নাম ঘোষণা করেন।

- Advertisement -islamibank

এতে আগের স্বপদে বহাল রাখলেও চট্টগ্রামের সন্তান, বর্তমানে সরকারের তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসা ড. হাছান মাহমুদকে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে।

তিন নম্বর যুগ্ম সম্পাদক থেকে নতুন কমিটিতে এক নম্বর যুগ্ম সম্পাদক করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন আওয়ামী লীগের সেক্রেটারি ওবায়দুল কাদের।

আগের কমিটির এক নম্বর যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফের নাম দুই নম্বরে, চার নম্বর যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিমের নাম তিন নম্বরে এবং দুই নম্বর যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. দীপু মনির নাম চার নম্বরে ঘোষণা করেন।

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে ২০০২ সালের সম্মেলন থেকে আছেন ড. হাছান মাহমুদ। সেই সম্মেলন বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক হিসেবে অভিষেক হওয়া ড. হাছান ২০০৯ সালের জুলাই মাসে অনুষ্ঠিত ১৮ তম সম্মেলনে ফের একই পদে বহাল থাকেন। ওই সময় তিনি সরকারের বন ও পরিবেশ প্রতিমন্ত্রী।

২০১২ সালের সম্মেলনে আওয়ামী লীগের প্রচার-প্রকাশনা সম্পাদক ও দলের অন্যতম মুখপাত্রের দায়িত্ব পান তিনি। ২০১৬ সালের সম্মেলনে স্বপদে বহাল থাকেন তিনি। ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে সর্বশেষ সম্মেলনে পদোন্নতি পেয়ে তিনি দলের তিন নম্বর যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও অন্যতম মুখপাত্র মনোনীত হন। এবারের নতুন কমিটিতে তার নাম

এ প্রসঙ্গে রবিবার (২৫ ডিসেম্বর) বিকেলে রাজধানীর রামপুরায় বাংলাদেশ টেলিভিশনের ৫৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, আমি আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে ১০ বছর পরিবেশ সম্পাদক, ৭ বছর প্রচার সম্পাদক, গত ৩ বছর ধরে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব নিষ্ঠার সাথে পালন করেছি।

তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আবারও আমাকে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দিয়েছেন। তিনি যে আস্থা স্থাপন করে আমার ওপর দায়িত্ব দিয়েছেন, আমি জীবন দিয়ে হলেও সংগঠনের জন্য, দলের জন্য, দেশের জন্য সে দায়িত্ব পালন করব।

উল্লেখ্য : চট্টগ্রামের খ্যাতিমান আইনজীবী মরহুম নুরুচ্ছফা তালুকদারের বড় ছেলে ড. হাছান মাহমুদের জন্ম ১৯৬৩ সালের ৫ জুন চট্টগ্রামে। তার বাবা চট্টগ্রাম আইনজীবী সমিতির সভাপতি এবং দুই মেয়াদে বৃহত্তর চট্টগ্রামের পাবলিক প্রসিকিউটর ছিলেন।

ব্যক্তিগত জীবনে ড. হাছান মাহমুদ দুই কন্যা ও এক ছেলের জনক। রাজনীতি ও সামাজিক জীবনে অনেক বাধাবিপত্তি মোকাবেলা করে আজকের অবস্থানে উঠে এসেছেন তিনি।

ছাত্র জীবনে তিনি প্রথমে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শে উজ্জীবিত হয়ে ১৯৭৭ সালে চট্টগ্রাম শহরের জামাল খান ওয়ার্ড ছাত্রলীগের রাজনীতি শুরু করেন।

১৯৭৮ সালের শেষার্ধে চট্টগ্রাম সরকারি ইন্টারমিডিয়েট কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এবং ১৯৭৯ সালে চট্টগ্রামের সরকারি হাজী মহসিন কলেজ ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন।

১৯৮১ সালে ভর্তি হন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে। ১৯৮৬ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র লীগের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ১৯৮৭ সালে সামরিক শাসক এরশাদবিরোধী আন্দোলনের সময়ে তিনি গ্রেফতার হন।

পরে ১৯৮৮ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি নির্বাচিত হন হাছান মাহমুদ। আশির দশকের শুরুতে চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রলীগের শিক্ষা ও পাঠচক্র সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন মেধাবী এই ছাত্রনেতা।

১৯৯২ সালের শুরুর দিকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের চট্টগ্রাম উত্তর জেলা শাখার সর্বকনিষ্ঠ সদস্য মনোনীত হন তিনি। ২০০১ সালের অক্টোবরে যোগ দেন আওয়ামী লীগ সভাপতির বিশেষ সহকারী হিসেবে।

২০০২ সালে আওয়ামী লীগের সম্মেলনে তিনি দলের বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদকের দায়িত্ব পান। এক দশকেরও বেশি সময় ধরে ওই দায়িত্ব পালন করেন ড. হাছান মাহমুদ।

২০০৭ সালে ওয়ান-ইলেভেন পরবর্তী জরুরি অবস্থায় যখন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাকে সামরিক সমর্থিত সরকার গ্রেফতার করেন তখন ড. হাছান মাহমুদ দলীয় প্রধানের মুখপাত্র হিসেবে কাজ করেন।

২০০৮ সাল পর্যন্ত তিনি আওয়ামী লীগ সভাপতির বিশেষ সহকারীর দায়িত্ব বিশ্বস্ততার সাথে পালন করেন। ড. হাছান মাহমুদ ২০১২ ও ২০১৬ সালের সম্মেলনে পরপর দুইবার দক্ষতা ও সফলতার সাথে আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন।

জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে, জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে ভূমিকার জন্য ৫ অক্টোবর ২০১৫ সালে “গ্রিন ক্রস ইন্টারন্যাশনাল” সাধারণ অধিবেশনে ড. হাছান মাহমুদকে “সার্টিফিকেট অব অনারেবল মেনশনে” ভূষিত করে।

জেএন/পিআর

KSRM
পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জয়নিউজবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন news@joynewsbd.com ঠিকানায়।

এই বিভাগের আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ

×KSRM