স্বাধীনতার ৫০বছর পর ২১ গণশহীদের কবর স্থানান্তর

মিরসরাই প্রতিনিধি : স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর গনহত্যার শিকার মিরসরাইয়ের ২৩ নিরীহ নারীপুরুষের বিক্ষিপ্ত সমাধিস্থল ৫০ বছর পর একত্রিত করে কবরস্থ করা হয়েছে।

- Advertisement -

গণহত্যার শিকার দুজনের লাশ আগে থেকে কবরস্থ থাকলেও ২১ জনের কবর স্থানান্তর করে সেখানেই কবর দেওয়া হয়। আজ মঙ্গলবার (৬ ডিসেম্বর) সকাল থেকে আনুষ্ঠানিক ভাবে উপজেলা প্রশাসন, উপজেলা পরিষদ ও সৈদালী নাগরিক ফোরামের আয়োজনে গণকবর স্থানাস্তর করা হয়।

- Advertisement -google news follower

এসময় উপস্থিত ছিলেন, মিরসরাই উপজেলা চেয়াম্যান জসিম উদ্দিন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিনহাজুর রহমান, উপজেলা মুক্তি যোদ্ধা কমান্ডার কবির হোসেন, ইউনিয়ন চেয়ারম্যন, গণহত্যায় নিহতদের আত্মীয় স্বজন।

সৈদালী নাগরীক ফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আলী জিননাহ বলেন, ১৯৭১ সালে আমার বয়স যখন ১৩ আমি নিজ ছোখে দেখেছি এই নির্মম হত্যা কান্ড।

- Advertisement -islamibank

ওই হত্যা কান্ডে ২৩ নীরিহ নারী পুরুষকে নির্বীচারে হত্যা করেছে পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী। তখন নিহতদের কবর দেয়া কিংবা জানাজা পড়ার সযোগ ছিলনা। যার লাশ যেখানে ছিল সেখানেই মাটি চাপা দেয়া হয়েছিল।

স্বাধীনতার ৫০ বছর পর সরকারী অর্থায়নে সৈদালী সিন্ধুরভিটা কবরস্থানে তার কবর একত্রে স্থানাস্তর করা হয়েছে।

এরা হলেন সৈদালী গ্রামের মোখলেছুর রহমান, আবুল কালাম (হোরা মিয়া) , আমির হোসেন, খোরশেদ আলম, মকছুদ আহম্মদ, নজীর আহমদ, সুলতান আহমদ, কবির উদ্দিন, শেখ আহমদ, আবদুল মালেক, তমিজ উদ্দিন, হাকিম বক্স, বেদন আলী, সামছুল আলম ভূইয়া, নুরুল আলম ভূইয়া, ফকির আহমদ, রহিম বক্স, আব্দুর রশিদ, মফিজুর রহমান, হোসনের জামান, বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ বজলুর রহমান। এছাড়া জোবেদা খাতুন ও জায়েদ আলীর কবর পূর্ব থেকেই এই কবরস্থানে ছিল।

মিরসরাই উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার কবির হোসেন জানান, ১৯৭১ সালের ২০ এপ্রিল পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী ভারী অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা যাওয়ার পথে মিরসরাইয়ের মুক্তিযোদ্ধারা ফেনাপুনি মাজার ও হাজারী দিঘী এলাকায় দেশিয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে ঝাপিয়ে পড়ে।

মুক্তিযোদ্ধাদের অতর্কীত আক্রমনে হানাদার বাহীনির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। এতে তারা যাত্রা বিরতী করে ও বড়তাকিয়া এলাকায় অবস্থাননিয়ে আশপাশের এলাকায় ব্যাপক তান্ডব চালায়। সৈদালী পুরো গ্রাম আগুন লাগিয়ে পুড়িয়ে দেয়। নির্বীচারে গুলি চালিয়ে নারীপুরুষ হত্যা করে ও যুবতীদের ধর্ষণ করে চলে যায়।

মিরসরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিনহাজুর রহমান জানান, পত্রপত্রিকা ও ভিবিন্ন মাধ্যমে সৈদালীতে বিক্ষিপ্ত গণকবর আছে জানার পর বিভিন্ন পক্রিয়া শেষে গণকবর গুলি একত্রিত করার উদ্যোগ গ্রহণ করি। এটার জন্য আমাদের জমিও ক্রয় করতে হয়েছে। পরবর্তীতে এখানে আরো কিছু কাজ আছে সেগুলোও আমরা সম্পন্ন করবো।

মিরসরাই উপজেলা চেয়ারম্যান জসীম উদ্দিন জানান, উপজেলা পরিষদের ৬লক্ষ টাকার আর্থিত সহায়তায় এই গণকবর স্থানান্তর করা হয়েছে।

পরবর্তীতে এখানে একটি স্মৃতিস্তম্ব স্থাপনের জন্য একটি প্রস্তাবনা মুক্তিযুদ্ধকালীন সেক্টর কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা সাবেক মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এমপির মাধ্যমে মন্ত্রণালয়ে পাঠাবো।

জেএন/এইউ/পিআর

KSRM
পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জয়নিউজবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন news@joynewsbd.com ঠিকানায়।

এই বিভাগের আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ

×KSRM