প্রশ্ন চুরি: ধরা স্কুলছাত্রী, মিশনে সহযোগী তিন সহপাঠী

টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির এক ছাত্রী তার বন্ধুকে সহযোগিতা করতে এসএসসির টেস্ট পরীক্ষার প্রশ্নপত্র চুরির মতো দুঃসাহসী মিশনে নামে।

- Advertisement -

গভীর রাতে বিদ্যালয়ের দেয়াল টপকে ভেতরে প্রবেশ করে এবং প্রধান শিক্ষকের রুমে ঢুকে ফিল্মি স্টাইলে আলমারির তালঅ ভেঙ্গে প্রশ্ন চুরির চেষ্টা চালিয়েছে এ ছাত্রী। তাকে সহায়তা করেছেন ওই বিদ্যালয়ের অপর এক বান্ধবী ও দুই ছেলে বন্ধু।

- Advertisement -google news follower

তবে তাদের এ মিশন সফল করতে দেয়নি একই বিদ্যালয়ের নৈশ প্রহরী ফজলু। ধরা পড়ে ছাত্রী। শনিবার দিবাগত রাত ১টার দিকে ওই বিদ্যালয় থেকে ওই ছাত্রীকে আটক করা হয়।

পরে এ ঘটনায় ভূঞাপুর সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মহিউদ্দিন, সহকারী প্রধান শিক্ষক আবদুর রহীম, শিক্ষক গিয়াস উদ্দিন, মহিউদ্দিন মনির ও ওই ছাত্রীর মা বিদ্যালয়ে গিয়ে ছাত্রীকে ছাড়িয়ে নিয়ে আসে।

- Advertisement -islamibank

বালিকা বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের ওই শিক্ষার্থীর প্রশ্ন চুরির মিশনে সহযোগী ছিল আরও তিন সহপাঠী। এর মধ্যে একজন ওই বালিকা বিদ্যালয়েরই শিক্ষার্থী।

মূলত তার জন্যই প্রশ্ন চুরি করতে গিয়েছিল আটক ছাত্রী। এ কাজে পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের দুই ছাত্রও তাকে সহযোগিতা করে। এসএসসির টেস্ট পরীক্ষার প্রশ্নপত্র চুরি করাই ছিল তাদের লক্ষ্য। এ জন্য তারা কয়েকটি নকল চাবিও বানিয়েছিল।

রাত ১টার দিকে নকল চাবি নিয়ে প্রাচীর টপকে স্কুলের ভেতরে প্রবেশ করে তাদের দুজন। পরে প্রধান শিক্ষকের কক্ষে গিয়ে তারা কয়েকটি আলমারির তালা খুলতে শুরু করে।

এ সময় পাশের কক্ষে থাকা নৈশপ্রহরী ফজলু তালা খোলার শব্দ শুনতে পেয়ে প্রধান শিক্ষকের কক্ষে এসে প্রবেশ করেন। এ অবস্থায় একজন আটকে পড়ে, অন্যজন পালিয়ে যায়।

আটকে পড়া শিক্ষার্থী হাতে থাকা একটি ছুরি দেখিয়ে নৈশপ্রহরীকে ভয় দেখানোর চেষ্টা করে এবং তাকে ফাঁসানোর ভয় দেখায়। তবে তাতে কোনো কাজ হয়নি। পরে তাকে ছেড়ে দেয়ার আশ্বাসে ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক লাল মাহমুদের বাসায় নিয়ে যান নৈশপ্রহরী।

ঘটনার বিস্তারিত শুনে রাতেই লাল মাহমুদ আটক শিক্ষার্থীর স্কুলের প্রধান শিক্ষক মো. মহিউদ্দিন ও শিক্ষার্থীর মাকে ফোন করে বিষয়টি জানান। তারা এসে মেয়েকে নিয়ে যান।

এ বিষয়ে বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক লাল মাহমুদ জানান, স্থানীয় একটি কোচিং সেন্টারে একসঙ্গে পড়ে অভিযুক্ত শিক্ষার্থীরা। সেখানেই বিপদে পড়া সহপাঠীকে সহযোগিতা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল দলটি।

লাল মাহমুদ বলেন, ছেলেদের পোশাকে আমাদের স্কুলে প্রবেশ করে অন্য স্কুলের ছাত্রী। এর আগে ফিল্মি স্টাইলে তালার ছবি তোলে এগুলোর নকল চাবি বানায় তারা।

নাইটগার্ড তাকে ছুরিসহ হাতেনাতে আটক করেছে। আটকের পর তাকে তার স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও মায়ের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ কাজে জড়িত থাকার দায়ে আমাদের বিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে ট্রান্সফার সার্টিফিকেট (টিসি) দেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামান বলেন, ‘বিদ্যালয়ে প্রবেশ করে প্রশ্ন চুরির ঘটনা জানি না। খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

এ বিষয়ে ভূঞাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও ভূঞাপুর সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের সভাপতি ইশরাত জাহান বলেন, খবরটি শুনেছি। তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেয়া হবে।

জেএন/পিআর

KSRM
পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জয়নিউজবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন news@joynewsbd.com ঠিকানায়।

এই বিভাগের আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ

×KSRM