নাইক্ষ্যংছড়ির তুমব্রু সীমান্তে গোলাগুলি, আতঙ্ক

বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার তুমব্রু-টেকনাফের হোয়াইক্যং সীমান্তের পূর্বে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে জান্তা বাহিনী ও বিদ্রোহীদের মধ্যে প্রচণ্ড সংঘর্ষ গুলি ও মর্টারের বিকট শব্দে নাইক্ষ্যংছড়ি ও টেকনাফের সীমান্ত এলাকা কেঁপে উঠছে। এতে নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্ত আর টেকনাফ সীমান্তে আবারও নতুন করে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।

- Advertisement -

১০ অক্টোবর রাত সাড়ে ৩টা টেকনাফে রাত দুইটার পর থেকে শুরু হয় বিকট শব্দে ভারি গোলাগুলি। প্রচণ্ড বিকট শব্দে সীমান্ত নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা ঘুমধুম ইউনিয়নের তুমব্রু,বাইশফাঁড়ি, রেজু ও বড়ইতলী এবং টেকনাফের হোয়াইক্যং ইউনিয়নের ১ ও ২ নম্বর ওয়ার্ডসহ আশেপাশের এলাকা কেঁপে উঠে। বজ্রপাতের মতো বিকট গোলার শব্দে গভীর রাতে অনেকেরই ঘুম ভেঙে যায় বলে নাইক্ষ্যংছড়ি ও টেকনাফ সীমান্ত এলাকায় বসবাসরতরা জানিয়েছেন। এসময় নাইক্ষ্যংছড়ির তুমব্রু সীমান্ত আর টেকনাফের হোয়াইখ্যং সীমান্তে বিজিবি সর্তক অবস্থানে টহল জোরদার করা হয়েছে।

- Advertisement -google news follower

থেমে থেমে এই প্রচণ্ড গোলাগুলির শব্দ গুলো দুই সীমান্তে গভীর রাত সাড়ে দুইটা থেকে সকাল সাতটা পর্যন্ত চলে।

এদিকে, নাইক্ষ্যংছড়ি ঘুমধুম ইউনিয়নের তুমব্রু পূর্বে মিয়ানমারের ডেক বুনিয়া ও টেকনাফের হোয়াইক্যং ইউনিয়নের পূর্বে মিয়ানমারের তোতারদিয়া, নাইসাদং, বালুখালী, মলইরজাগা, কুয়ারবিল, কুয়ানচিবং, নাকপুরা, কুমীরখালী, শীলখালী, বলিবাজার ইত্যাদি এলাকা। সেখানে মিয়ানমার বাহিনীর বড় ধরণের ঘাঁটি আছে তোতারদিয়া, কুমিরখালী ও নাইসাদং, বলিবাজার। সীমান্তে সারারাত থেমে থেমে গুলি ও মর্টার শেলের আওয়াজে কেঁপে উঠে নাইক্ষ্যংছড়ির তুমব্রু, বাইশফাঁড়ি, গর্জনবুনিয়া,রেজু, বড়ইতলী,চাকমাপাড়া আর টেকনাফের হোয়াইক্যং ইউনিয়নের উলুবনিয়া, খারাইঙ্গাঘুনা, বালুখালীসহ টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্যং সীমান্তের জনপদ। মিয়ানমারের জান্তা বাহিনী ও আরাকান আর্মির মধ্যে চলমান সংঘর্ষের অংশ হিসাবে এটি রাতের ভয়াবহ হামলা বলে সীমান্তবাসীদের ধারণা।

- Advertisement -islamibank

সীমান্তের বিভিন্ন সুত্রে সর্বশেষ পাওয়া খবর অনুযায়ী মিয়ানমারের নাইসাদং ও কুমিরখালী দুটি ঘাঁটিতে মিয়ানমারের জান্তা ও বিদ্রোহী গ্রুপের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়েছে। এখান থেকে মিয়ানমারের কুমিরখালী বিজিপির ঘাঁটিতে অগ্নির কুণ্ডলী দেখা গেছে। তবে হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।

ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আজিজ জানান, গত ২৮ আগস্ট মিয়ানমার অভ্যান্তরে মর্টারশেল, গোলাগুলি শব্দ আর সীমান্ত ঘেঁষে যুদ্ধ বিমানের আনাগোনা দেখা গেলে সীমান্তবাসী আতঙ্কে দিন কাটিয়ে ছিল। মিয়ানমার থেকে ছোঁড়া মর্টারশেল বাংলাদেশের ভূখণ্ডে এসে বিস্ফোরিত হয়ে হতাহতের ঘটনা ঘটলেও সরকার মিয়ানমার সরকারের প্রতি কড়া প্রতিবাদে একেবারে বন্ধ হয়ে গেছিল। তবে রবিবার মধ্যরাতে আবার শোনা যায়, সীমান্তের ওপারে ঘুম ভেঙে যাওয়ার মতো বিকট শব্দ মর্টারশেল ও গোলাগুলির। তবে আমাদের ভূখণ্ডে কোনো আসা মর্টারশেল, গুলি কিংবা হতাহতের কোনো খবরাখবর পাওয়া যায়নি।

এদিকে, হোয়াইক্যং ২ নম্বর ওয়ার্ডের ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) সদস্য সিরাজুল মোস্তফা চৌধুরী লালু বলেন, মিয়ানমারের ভিতরে গুলি ও বোমা বিস্ফোরণের বিকট আওয়াজে সর্বত্র আতঙ্ক পড়ে। প্রচণ্ড শব্দে ঘুমের শিশুরা ও জেগে উঠে।

হোয়াইক্যং ১ নম্বর ওয়ার্ডের ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) সদস্য হাজী জালাল আহমদ বলেন, ভারি অস্ত্রের বিকট শব্দে পুরো এলাকা কেঁপে উঠে। মিয়ানমারের অভ্যন্তরে সংঘর্ষে ছোড়া গোলাবারুদ টেকনাফের অংশে পড়েছে কিনা এবং এতে হতাহতের তাৎক্ষণিক কোন খবর পাওয়া যায়নি। আতংকে মানুষ এলাকা ছাড়ার প্রস্ততি নিচ্ছে।

জেএন/এফও

KSRM
পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জয়নিউজবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন news@joynewsbd.com ঠিকানায়।

এই বিভাগের আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ

×KSRM