৩১ আগস্ট পেট্রোল পাম্প ভোর থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত বন্ধ

জ্বালানি তেল বিক্রিতে শতাংশ হারে কমিশন বাড়ানো ও তেলের পাম্পে বিপিসির অংশগ্রহণ ছাড়া মোবাইল কোর্ট পরিচালনা বন্ধসহ পাঁচ দফা দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম ডিলার্স, ডিস্ট্রিবিউশন, এজেন্টস অ্যান্ড পেট্রল পাম্প ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন। সাতদিনের মধ্যে এসব দাবি পূরণ না হলে আগামী বুধবার (৩১ আগস্ট) ভোর থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত ঢাকাসহ সারাদেশে পেট্রল পাম্প বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছে সংগঠনটি।

- Advertisement -

বুধবার (২৪ আগস্ট) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে পাঁচ দফা দাবি বাস্তবায়নে এ আল্টিমেটাম দেন অ্যাসোসিয়েশন সভাপতি মো. নাজমুল হক।

- Advertisement -google news follower

তিনি বলেন, আমাদের কমিশন বাড়ানোর জন্য আমরা বারবার দাবি জানিয়ে আসছি। ২০১৩ সালে আমাদের তেল বিক্রিতে কমিশন অকটেন ও পেট্রলে ৪ দশমিক ৭৫ শতাংশ ও ডিজেলে ৩ দশমিক ২২ শতাংশ নির্ধারিত ছিলো। আমরা ২০১৬ সাল থেকে ৭ শতাংশ করার দাবি জানিয়ে আসছি। কিন্তু সেটা না করে শতাংশের বদলে পয়সার হিসাব নির্ধারণ করা হয়েছে। যার ফলে তেলের দাম বাড়লেও আমাদের কোনো লাভ হয়নি। বরং শতাংশের পরিমাণ কমে পেট্রল-অকটেনে ৩ দশমিক ৭৮ শতাংশ ও ডিজেলে ২ দশমিক ৫৬ শতাংশ হয়ে গেছে।

তিনি অভিযোগ করেন, তেলের পাম্পে অনিয়মের নামে ঢালাওভাবে অভিযান পরিচালনা করা হয়। সেখানে বিপিসির একজন প্রতিনিধি থাকার কথা থাকলেও তাদের না নিয়ে শুধুমাত্র মাজিস্ট্রেট গিয়ে অভিযান পরিচালনা করেন। এটা পাম্প মালিকদের ওপর জুলুম।

- Advertisement -islamibank

এসময় ৫ দফা দাবি জানিয়ে নাজমুল হক বলেন, আমাদের দাবি ও সরকারের ৭ শতাংশ কমিশন করার আশ্বাস বাস্তবায়ন না হলে ব্যবসা বন্ধ করা ছাড়া উপায় থাকবে না।

পাঁচ দাবির মধ্যে রয়েছে-
১) জ্বালানি মন্ত্রণালয়, বিপিসি ও অ্যাসোসিয়েশন নেতাদের মাঝে অনুষ্ঠিত বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তেল বিক্রির কমিশন তেলের মূল্যের ওপর শতকরা হার বা পার্সেন্টেজ ভিত্তিতে করতে হবে।

২) তেলের পরিমাপে কারচুপি রোধে নিয়মিত মনিটরিং বা অভিযান পরিচালনা করতে হবে এবং জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের ২০১১ সালের ৯ ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিপিসি বা বিপণন কোম্পানি প্রতিনিধি ছাড়া ভোক্তা অধিদপ্তর, বিএসটিআইয়ের অভিযান এবং মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা যাবে না। মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত মোতাবেক কারচুপি রোধে নিয়মিত মনিটরিংয়ের জন্য অনতিবিলম্বে তেল কোম্পানি, বিএসটিআই এবং অ্যাসোসিয়েশন প্রতিনিধি সমন্বয়ে গঠিত মনিটরিং সেলের কার্যক্রম শুরু করতে হবে।

৩) বিপিসি, বিপণন কোম্পানি এবং জ্বালানি মন্ত্রণালয় ছাড়া অন্য কোনো দপ্তর বা প্রতিষ্ঠান পাম্পের কাগজপত্র চেক করার নামে পাম্প মালিকদের হয়রানি করতে পারবে না। পাম্প পরিদর্শনকালে সঠিক ও ভুল উভয় তথ্য লিপিবদ্ধ এবং প্রচার করতে হবে। তার কপি মালিককে সরবরাহ করা বাধ্যতামূলক করতে হবে।

৪) সওজ (সড়ক ও জনপথ) অধিদপ্তরের ইজারা মাশুল যৌক্তিক হারে নির্ধারণ করতে হবে। বিপিসি, বিপণন কোম্পানি এবং বিএসটিআই ও অ্যাসোসিয়েশনের সমন্বয়ে অনুষ্ঠিত যৌথসভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পাম্পের আন্ডারগ্রাউন্ড ট্যাংক ক্যালিবারেশন (যার সঙ্গে ভোক্তার কোনো স্বার্থ জড়িত নেই) সার্টিফিকেট নবায়ন প্রথা বাতিল করতে হবে।

৫) জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের ২০১১ সালের ৯ ফেব্রুয়ারির সিদ্ধান্ত মোতাবেক রাস্তায় ট্যাংক লরির কাগজপত্র চেকিংয়ের নামে ট্যাংকলরি চালককে পুলিশের হয়রানি করা যাবে না। মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত মোতাবেক ট্যাংক লরির কাগজপত্র ডিপোগেটে পরীক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে এবং মন্ত্রণালয়ের ২০১৬ সালের ৩ অক্টোবরের সিদ্ধান্ত মোতাবেক সব ডিপোতে পার্কিং স্ট্যান্ড নির্মাণ করতে হবে। ট্যাংক লরি চালকদের জন্য বিআরটিএ কর্তৃক আলাদা কাউন্টার করার সরকারি সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করতে হবে। শোধনাগার সুবিধা সমন্বিত বিভিন্ন গ্যাস ফিল্ডের শোধনাগার পূর্বের ন্যায় চালু করতে হবে।

এসব দাবি আগামী সাতদিনের মধ্যে মেনে না নিলে ৩১ আগস্ট ভোর থেকে সকাল ১১টা পর্যন্ত সারাদেশে পেট্রল পাম্প বন্ধ রাখার ঘোষণা দেন মোহাম্মদ নাজমুল হক।

সংবাদ সম্মেলনে অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব জুবায়ের আহমেদ চৌধুরীসহ কেন্দ্রীয় ও জেলা পর্যায়ের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

জেএন/কেকে

KSRM
পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জয়নিউজবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন news@joynewsbd.com ঠিকানায়।

এই বিভাগের আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ

×KSRM