দুই শিশুকে খুঁটির সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন: ৩ পুলিশ প্রত্যাহার, তদন্ত কমিটি

নগরের খুলশী থানার লালখান বাজার এলাকায় চুরির অভিযোগে ১৩ বছর বয়সী দুই শিশুকে খুঁটির সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন করার অভিযোগে তিন পুলিশকে প্রত্যাহার এবং তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

- Advertisement -

শুক্রবার (১৯ আগস্ট) দুপুরে এ ঘটনা ঘটলেও রোববার (২১ আগস্ট) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ে।

- Advertisement -google news follower

এ ঘটনায় জড়িত পুলিশের তিন সদস্যকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (গণমাধ্যম) শাহাদত হুসেন রাসেল। পুলিশের অভিযুক্ত তিন সদস্য চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের মনসুরাবাদ লাইনে থাকেন।তারা হলেন- কনস্টেবল মো. মাজহার, মো. মেহেদী ও মো. এহসান।

স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, নগরের বাটালী হিল, লালখান ম্যাজিস্ট্রেট কলোনিসহ আশপাশের এলাকায় নিরাপত্তার জন্য টহল পুলিশ হিসেবে দায়িত্ব পালন করতেন অভিযুক্ত তিন কনস্টেবল।

- Advertisement -islamibank

ঘটনার শিকার দুই শিশু লালখান বাজার মতিঝর্না এলাকায় পরিবারের সঙ্গে থাকে। শুক্রবার তাজুল ইসলাম নামের একজনকে কে বা কারা পাথর ছুড়ে মারে।

এ ছাড়া ম্যাজিস্ট্রেট কলোনি, মতিঝর্নাসহ আশপাশের এলাকায় প্রায়ই ছোটখাটো চুরির ঘটনা ঘটে। ঘটনার দিন তিন শিশু লালখান বাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে ব্রিজের নিচে বসে আড্ডা দিচ্ছিল। তখন টহল পুলিশ সদস্যদের কাছে খবর যায়, এই শিশুরা সেখানে প্রায়ই চুরি করে থাকে। পরে পুলিশ সদস্যরা তাদের ধাওয়া দিলে একজন পালিয়ে যায়। সেখান থেকে পুলিশ সদস্যরা দুজনকে ধরে পাশের জিলাপির পাহাড়ে নিয়ে যায়। পরে একটি লোহার খুঁটির সঙ্গে রশি দিয়ে বেঁধে রাখা হয়। সেখানে একজনের মাথার চুল কেটে দেওয়া হয়। তাদের একজন স্থানীয় একটি স্কুলে সপ্তম শ্রেণিতে পড়ে। তার বাবা একটি কারখানায় নিরাপত্তাকর্মী হিসেবে কাজ করেন।

ঘটনার শিকার এক শিশুর মা গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমার ছেলে কোনো দিন চুরি করেনি। চুরি করেছে বলে পুলিশ আমার ছেলেকে নির্যাতন করেছে। মাথার চুলও কেটে দিয়েছে। ঘটনার পর থেকে ছেলে ভয়ে বাসায় থাকছে না।’

অভিযুক্ত পুলিশ কনস্টেবল মো. মেহেদী গণমাধ্যমকে বলেন, তিনটা ছেলে ড্রেনের ভেতর বসে আছে বলে খবর দেন স্থানীয় লোকজন। পরে সেখান থেকে তাদের আনা হয়। ওই সময় স্থানীয় লোকজন তাদের মারধর করতে থাকে। পুলিশ তাদের রক্ষা করে। তাদের কাছে কোনো মাদক কিংবা চুরির মালামাল পাওয়া যায়নি। তাদের ওপর কোনো নির্যাতন চালানো হয়নি। বয়স কম হওয়ায় তাদের অভিভাবকদের কাছে দিয়ে দেওয়া হয়েছে।

বিষয়টি স্থানীয় থানা কিংবা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কেন জানানো হয়নি প্রশ্নের জবাবে মেহেদী বলেন, চার্জ না থাকায় সেদিন মুঠোফোনটি বন্ধ হয়ে যায়। সে কারণে থানা-পুলিশকে জানাতে পারেননি। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর রোববার (২১ আগস্ট) তাঁদের তিনজনকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে খুলশী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সন্তোষ কুমার চাকমা বলেন, ঘটনায় জড়িত তিনজনই মনসুরাবাদ পুলিশ লাইনের সদস্য। সেখানে সিনিয়র পুলিশ কর্মকর্তা ও আমাদের থানা পুলিশ ডিউটির সময় তদারকি করে থাকে।

অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (গণমাধ্যম) শাহাদত হুসেন রাসেল জানান, ঘটনা তদন্তে কমিটি গঠিত হয়েছে। এ ছাড়া কমিশনার স্যারের নির্দেশে আজ দায়িত্ব থেকে তিনজনকে প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে। প্রতিবেদন পাওয়ার পর তাদের বিরুদ্ধে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জেএন/কেকে

KSRM
পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জয়নিউজবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন news@joynewsbd.com ঠিকানায়।

এই বিভাগের আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ

×KSRM