৮ বছরের আবেদা ছয় মাসে কুরআনে হাফেজ

নোয়াখালীর বিচ্ছিন্ন দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ায় আট বছরের শিশু আবেদা সুলতানা মাত্র ছয় মাসে পবিত্র কুরআন হিফজ (মুখস্থ) করেছে।

- Advertisement -

আবেদা সুলতানা হাতিয়া পৌরসভার ৮ নং ওয়ার্ডের উত্তর গুল্যাখালী এলাকার হাফেজ মো. আবদুল আজিজের বড় মেয়ে এবং আহমুদা খাতুন মহিলা হাফেজিয়া মাদরাসার হেফজ বিভাগের ছাত্রী।

- Advertisement -google news follower

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, হাতিয়া পৌরসভার ৮ নং ওয়ার্ডের উত্তর গুল্যাখালী এলাকার হাফেজ মো. আবদুল আজিজের তিন মেয়ে। সাড়ে ৫ বছর বয়সে নুরানি শাখায় আবেদা সুলতানাকে ভর্তি করান মো. আবদুল আজিজ। তার স্বপ্ন ছিল মেয়েকে হাফেজা বানাবেন।

এরপর আড়াই বছর নুরানি পড়ে আবেদা। ৩ মাস নাজরানা বিভাগে পড়ার পর কোরআন সবক নেয় আবেদা সুলতানা। এরপর মাত্র ৬ মাসে পবিত্র কুরআন হিফজ (মুখস্থ) করে সে।

- Advertisement -islamibank

আবেদার বাবা হাফেজ মো. আবদুল আজিজ বলেন, আমি এই মাদরাসা প্রতিষ্ঠা করেছি। ২০১২ সালে এই মাদরাসা প্রতিষ্ঠা করা হয়। বর্তমানে ৮০ জন মেয়ে শিক্ষার্থীর জন্য ৫ জন নারী শিক্ষিকা ও ২ জন পুরুষ শিক্ষক রয়েছেন। এখান থেকে গত বছর ১০ জন হাফেজা হয়েছে।

আমার মেয়ে আবেদা ৬ মাসে হাফেজা হয়েছে। এছাড়া আরজু নামে আরেক মেয়ে শিক্ষার্থী মাত্র ৭ মাসে হেফজ শেষ করেছে এবং এক বছরে অনেক মেয়ে হাফেজা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, মাদরাসায় আমরা যেভাবে বলি, অনেক সময় সেভাবে পড়ানো যায় না। যখন শিক্ষিকা তাদের পড়ার জন্য চাপ দেয়, তখন অভিভাবকরা এসে আমাদের সঙ্গে কথা কাটাকাটি করে। কিন্তু আবেদাকে আমরা যেভাবে বলেছি সে সেভাবে শুনেছে।

তার মেহনতের মাধ্যমে পবিত্র আল্লাহর কালাম মুখস্থ করা সম্ভব হয়েছে। সবাই যখন ঘুমাত আবেদা তখন পড়ত। আবেদার কখনো সবক বন্ধ ছিল না। অসুস্থ থাকলেও সে সবক পড়ত। কখনো পড়া থেকে বিরত থাকত না।

পৌরসভার ৮ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা ও চৌমুহনী উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক কারী হাফেজ মাওলানা নাজিম উদ্দিন বলেন, আমার প্রতিবেশী হাফেজ আবদুল আজিজের মেয়ে মাত্র ৬ মাসে আল্লাহর কালাম মুখস্থ করেছে। এটা আমাদের জন্য সৌভাগ্য এবং হাতিয়াবাসীর জন্য সৌভাগ্য। সে যেন আরও সুনাম বয়ে আনে সেজন্য তার উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ কামনা করছি।

হাতিয়া পৌরসভার মেয়র কে এম ওবায়েদ উল্যাহ বলেন, আমি খবরটা শুনে অনেক আনন্দিত হয়েছি। এমন সুন্দর একটা ঘটনা আমাদের হাতিয়ায় হয়েছে, যা অবাক করার মতো। মাত্র ৬ মাসে আল্লাহর কালাম মুখস্থ করা সৌভাগ্যের বিষয়।

আল্লাহ এই শিশুর সেই মেধা দিয়েছেন। সেই জন্য মহান আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করছি। এছাড়া এই প্রতিষ্ঠানের সাফল্য কামনা করছি এবং আবেদার সুন্দর ভবিষ্যৎ কামনা করছি।

হাতিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. সেলিম হোসেন বলেন, আমি মাত্র আপনার কাছ থেকে বিষয়টি শুনলাম। শুনে অভিভূত হয়েছি। আমাদের অনেক সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত দ্বীপ উপজেলা ধর্মীয় শিক্ষা-দীক্ষায় পিছিয়ে নেই। তারা অন্যান্য এলাকার থেকেও অনেক এগিয়ে আছে। মেয়ে শিশু মাত্র ৬ মাসে হাফেজা হয়েছে, এটা আমার কাছে মিরাকল মনে হয়েছে।

উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এই শিক্ষার্থীর জন্য কিছু করার ইচ্ছা আছে। প্রতিষ্ঠাতা যারা আছেন, তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে এই প্রতিষ্ঠানকে কীভাবে এগিয়ে নেওয়া যায়, সেই চেষ্টা করব ইনশাআল্লাহ।

জেএন/এমআর

KSRM
পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জয়নিউজবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন news@joynewsbd.com ঠিকানায়।

এই বিভাগের আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ

×KSRM