শোলাকিয়ায় লাখো মুসল্লির উপস্থিতিতে ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত

দেশের সর্ববৃহৎ ঈদুল আজহার জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানে। রোববার (১০ জুলাই) সকাল ৯টায় জামাত শুরু হয়। ১৯৫তম ঈদের জামাতে আজও লাখো মুসল্লির উপস্থিতি ছিল। জামাতে ইমামতি করেন শহরের মারকাজ মসজিদের ইমাম মাওলানা হিফজুর রহমান খান।

- Advertisement -

ঈদগাহ ময়দানে জেলা প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, রাজনৈতিক ব্যক্তিসহ বিশিষ্টজনরা ঈদুল আজহার নামাজ আদায় করেন। নামাজ শেষে মুসলিম উম্মার শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে মোনাজাত করা হয়।

- Advertisement -google news follower

এদিকে জামাতকে ঘিরে নেওয়া হয়েছিল চার স্তরের নিরাপত্তাব্যবস্থা। র‍্যার, পুলিশের পাশাপাশি মুসল্লিদের নিরাপত্তায় ছিল দুই প্লাটুন বিজিবি।

এর আগে সকাল থেকে মুসল্লিরা আসতে থাকেন ঈদগাহের দিকে। প্রতিবছর ঈদের জামাতে এখানে লাখো মানুষের ঢল নামে। বড় জামাতে নামাজ আদায় করলে বেশি সওয়াব পাওয়া যায়, সে জন্য প্রতিবছর এ মাঠে ঈদের জামাতে অংশ নেন লাখো মুসল্লি।

- Advertisement -islamibank

করোনার প্রভাব বাড়ায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে মাঠে প্রবেশ করতে হয়েছে মুসল্লিদের। জায়নামাজ ছাড়া অন্য কিছু নিয়ে প্রবেশেও ছিল নিষেধাজ্ঞা। দূর-দূরান্ত থেকে আসা মুসল্লিদের যাতায়াত-সুবিধার জন্য রয়েছে শোলাকিয়া ঈদ স্পেশাল নামে দুটি ট্রেন, যা চলে ভৈরব-ময়মনসিংহ রুটে।

কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার মাশরুকুর রহমান খালেদ জানান, ঈদুল আজহার জামাতকে ঘিরে নেওয়া হয়েছে সর্বোচ্চ নিরাপত্তাব্যবস্থা। পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবির পাশাপাশি সাদাপোশাকে ছিল আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। নিরাপত্তার স্বার্থে মাঠে আর্চওয়ে, ওয়াচ টাওয়ার, ড্রোন ক্যামেরা, ভিডিও ক্যামেরা, মাইনোকোলার, সিসি ক্যামেরাসহ সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দান পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শামীম আলম বলেন, করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে মাঠে প্রবেশ করার বিধান রাখা হয়েছে। নিরাপত্তার স্বার্থে মোবাইল নিয়ে প্রবেশেও ছিল নিষেধাজ্ঞা। দূরের মুসল্লিদের জন্য ঈদের দিন সকালে কিশোরগঞ্জ-ভৈরব ও কিশোরগঞ্জ-ময়মনসিংহ রুটে চলাচল করবে দুটি বিশেষ ট্রেন।

প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের ৭ জুলাই ঐতিহ্যবাহী শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানে ভয়াবহ জঙ্গি হামলার ঘটনা ঘটে। তখন দুই পুলিশ সদস্য, এক নারী, এক জঙ্গিসহ চারজন নিহত হন। হামলায় পুলিশসহ ১৬ মুসল্লি আহত হন। এবারও ভাটা পড়েনি ঈদের জামাতে মুসল্লিদের আগমনে। তবে করোনার কারণে গত দুই বছর শোলাকিয়া ঈদগাহে ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয়নি।

জনশ্রুতি আছে, শাহ সুফি সৈয়দ আহমদ ঈদের জামাতের মোনাজাতে ভবিষ্যতে মাঠে মুসল্লিদের প্রাচুর্যতা প্রকাশে ‘সোয়া লাখ’ কথাটি ব্যবহার করেন। অন্য একটি মতে, সেই দিনের সেই জামাতে ১ লাখ ২৫ হাজার অর্থাৎ সোয়া লাখ লোকের জমায়েত হয়। ফলে ‘সোয়া লাখে’র অপভ্রংশ হয়ে ‘শোলাকিয়া’ নামটি চালু হয়ে যায়।

পরে ১৯৫০ সালে স্থানীয় দেওয়ান মান্নান দাদ খাঁ (মসনদ-ই-আলা ঈশা খাঁর ষষ্ঠ বংশধর) ঈদগাহের জন্য ৪ দশমিক ৩৫ একর জমি শোলাকিয়া ঈদগাহে ওয়াকফ করেন। এই মাঠে ২৬৫টি কাতার আছে, প্রতিটি কাতারে ৫০০ মুসল্লি নামাজের জন্য দাঁড়াতে পারেন।

জেএন/এমআর

KSRM
পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জয়নিউজবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন news@joynewsbd.com ঠিকানায়।

এই বিভাগের আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ

×KSRM