একজন শেখ হাসিনা আছেন বলেই পদ্মা সেতু হয়েছে : তথ্যমন্ত্রী

তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, একজন শেখ হাসিনা আছেন বলেই পদ্মা সেতু হয়েছে। সঠিক রাজনৈতিক ও সাহসী নেতৃত্ব যে অসম্ভবকে সম্ভব করতে পারে সেটি জাতির পিতার সুযোগ্যকন্যা, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেখিয়ে দিয়েছেন।

- Advertisement -

তিনি আজ রাজধানীতে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে ‘বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে পদ্মা সেতুর অবদান’ সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।

- Advertisement -google news follower

মন্ত্রী বলেন, ‘পদ্মা সেতু শুধুমাত্র একটি সেতু নয়, বিশ্ববেনিয়াদের বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে আওয়ামী লীগ সরকারের এবং সবার ওপরে শেখ হাসিনার সক্ষমতার প্রতীক হচ্ছে পদ্মা সেতু। বিশ্বব্যাংক এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্য বিশ্ববেনিয়া, বাংলাদেশে তাদের সুবিধাভোগীরা এবং বিএনপি-জামাতসহ আমাদের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ পদ্মা সেতু নিয়ে যে সমালোচনা-ষড়যন্ত্র করেছিলো সেই জাল ছিন্ন করে, তাদের হুমকি-ধামকি উপেক্ষা করে এরকম একটি মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন জননেত্রী শেখ হাসিনার পক্ষেই সম্ভবপর হয়েছে।’

ড. হাছান বলেন, ‘যারা ষড়যন্ত্রের সাথে যুক্ত ছিলো আজকে তাদের কেউ কেউ নিশ্চুপ হয়ে গেছে। ষড়যন্ত্রে যারা নেতৃত্ব দিয়েছিলো তারা নিশ্চুপ, তাদেরকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। তারা দেশে না বিদেশে আমিও জানি না, আর কেউ কেউ সুর বদলেছেন। প্রতিবন্ধকতা শুধু সরকারের বাইরে থেকে নয়, সরকারের ভেতর থেকেও কেউ কেউ দ্বিধান্বিত ছিলেন এবং সে কারণে প্রধানমন্ত্রীকে নানা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে বেগ পেতে হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী সংবাদ সম্মেলনে আজ সে বাস্তবতা তুলে ধরেছেন। এই সেতু নির্মাণের মধ্যদিয়ে একটি জিনিস প্রমাণিত হয়েছে, সেটি হচ্ছে যারা সময়ে সময়ে, কারণে অকারণে সরকারের সমালোচনা করে দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে, এখন কথা বলার আগে তাদের সতর্ক হওয়া প্রয়োজন রয়েছে।’

- Advertisement -islamibank

‘বিএনপির এখন লজ্জায় তো মাথা হেঁট হয়ে গেছে, কি বলে লজ্জা রক্ষা করা যায় সেটি খুঁজে পাচ্ছে না, কিন্তু বিএনপিকে সেতু উদ্বোধনে আমন্ত্রণপত্র পাঠানো হয়েছে’ উল্লেখ তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘প্রথমে মির্জা ফখরুল সাহেব বললেন, এই সেতু কি উনাদের বাপের, আমরাতো বলি নাই এই সেতু কারো বাপের। আরো বলেছেন, এই সেতু দিয়ে কি স্বর্গে যাবো! এই সেতু প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা দেশের আপামর জনতার জন্য নির্মাণ করেছেন। এই সেতু বেগম খালেদা জিয়া, মির্জা ফখরুল সাহেবের জন্যও। কিন্তু প্রশ্নটা হচ্ছে, পদ্মা সেতু আওয়ামী লীগ সরকার কখনো নির্মাণ করতে পারবে না এবং করলেও জোড়াতালি দিয়ে হবে, কেউ উঠবে না -এমন কথা যারা বলেছিলেন তাদের এখন সেতুতে ওঠার অধিকার আছে কি না। । আমরা বলছি আপনারা সানন্দে উঠুন, তবে আগের বক্তব্যের জন্য জনগণের কাছে ক্ষমা চান।’

এসময় খরচের খতিয়ান বর্ণনা করে সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘২০১১ সালে দ্বিতল সেতু নির্মাণ পরিকল্পনায় প্রায় ৩শ’ কোটি ডলারের প্রকল্প নেয়া হয়েছিলো, যার মধ্যে ১২০ কোটি ডলার বিশ্বব্যাংকের কাছে চাওয়া হয়েছিলো। ডলারের বর্তমান মূল্য ৯৩ দশমিক ১৩ টাকা হিসেবে ৩শ’ কোটি ডলারের মূল্য ২৮ হাজার কোটি টাকা। অর্থাৎ ২০১১ সালে প্রাক্কলিত ব্যয়ের ডলারকে টাকায় রূপান্তর করলে দেখা যায় খরচ একই জায়গায় রয়ে গেছে। এছাড়া ষড়যন্ত্রের কারণেও নিজের টাকায় করতে গিয়ে কয়েক বছর দেরি না হলে এই খরচ আরো কম হতো।’

পদ্মা সেতু নির্মাণে প্রধানমন্ত্রী অন্তত ২০ হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় করেছেন উল্লেখ করে তুলনামূলক আর্থিক চিত্র তুলে ধরে ড. হাছান বলেন, ‘১৯১০ থেকে ১৯১৫ সালের মধ্যে নির্মিত হার্ডিঞ্জ ব্রিজ আজকে নির্মাণ করতে স্বর্ণমূল্য হিসেবে লাগতো ১৭ হাজার ৩৫ কোটি টাকা। হার্ডিঞ্জ ব্রিজের দৈর্ঘ্য হচ্ছে ১.৮ কিলোমিটার। পদ্মা সেতু তার চেয়ে সাড়ে ৩ গুণ বড় অর্থাৎ ৬.১৫ কিলোমিটার। সে হিসেবে পদ্মা সেতু নির্মাণ করতে লাগতো ৫৮ হাজার ৭শ’ ৭৩ কোটি টাকা। আর হার্ডিঞ্জ ব্রিজ হচ্ছে শুধুমাত্র রেল সেতু। পদ্মা সেতুর ওপরে চার লেনের সড়ক, নিচে রেল। অর্থাৎ এই সেতু নির্মাণে ১ লাখ হাজার কোটি টাকা লাগার কথা ছিলো। সুতরাং আজকে যারা ব্যয় নিয়ে প্রশ্ন তোলেন, তাদেরকে বলবো, অহেতুক প্রশ্ন তুলবেন না। পদ্মা সেতু নির্মাণে শেখ হাসিনা কমপক্ষে ২০ হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় করেছেন।’

আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা উপ-কমিটির চেয়ারম্যান এডভোকেট সাহাব উদ্দিন চুপ্পুর সভাপতিত্বে ও উপ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিনের সঞ্চালনায় বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সভাপতি ড. আবুল বারাকাত মুখ্য আলোচক হিসেবে এবং বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. খান মাহমুদ আমানত, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক পরিচালক ড. জামাল উদ্দিন আহমেদ, আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ সেমিনারে আলোচনা করেন।

জেএন/এমআর

KSRM
পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জয়নিউজবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন news@joynewsbd.com ঠিকানায়।

এই বিভাগের আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ

×KSRM